সংক্ষিপ্ত
- কলকাতার প্রধান ঐতিহ্যপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল প্রাচীন বনেদি বাড়িগুলির পুজো
- সে রকমই এক বাড়ি হল পটলডাঙ্গা বসুমল্লিক বাড়ি
- প্রায় ২০০ বছর ধরে এই দুর্গা পুজো এখনও চলছে
- এই বাড়ির প্রতিমা একচালা মহিষাসুরমর্দিনীর মূর্তি
কলকাতার প্রাচীন বনেদি বাড়িগুলির পুজো আজ শুধুমাত্র দর্শনীয় স্থান নয়, ভারতবর্ষ তথা কলকাতার প্রধান ঐতিহ্যপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। সে রকমই এক বাড়ি হল পটলডাঙ্গা বসুমল্লিক বাড়ি। আরও নানা বনেদি বাড়ির মতো এখানেও দুর্গা পুজো হয়। এবং প্রায় ২০০ বছর ধরে এই দুর্গা পুজো এখনো চলছে।
আরও দেখুন- স্মৃতিটুকু তুলে রাখতে চাইছে কেন্দুয়া শান্তি সংঘ
বাড়িটি অবস্থিত ১৮, রাধানাথ মল্লিক লেন এ। এই বাড়িটির ঠাকুর দালান পাঁচ খিলান বিশিষ্ট দু'দালান। বাইরের দেওয়ালের খিলানের উপর দশাবতারের ছোট ছোট মূর্তি আছে। বারবার রঙ হওয়ার দরুন তা কি দিয়ে তৈরি বোঝার উপায় নেই। ঠাকুর দালানের সামনের উঠোনে থামের উপর ঢালাই করা লোহার দশটি লাস্যময়ী পরীর মূর্তি আছে। এই বাড়ির প্রতিমা একচালা মহিষাসুরমর্দিনী মূর্তি। প্রতিমার ডাকের সাজ হয়। দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতীকে বেনারসি শাড়ি ও কার্তিক-গণেশকে সিল্কের ধুতি পড়ানো হয়। সিংহের মুখ ড্রাগন আকৃতির। কলাবউ স্নান করানো হয় বাড়ির দালানেই। পুজোর একটি বিশেষত্ব হল, এখানে বন্দুক থেকে গুলি ছোড়ার পর এক বিশেষ ধরণের তলোয়ার দিয়ে আখ, চাল-কুমড়া ইত্যাদি উৎসর্গ করা হয়।
অব্রাহ্মণ পরিবার বলে পুজোয় অন্নভোগ দেওয়া হয় না। তার বদলে গোটা ফল, গোটা আনাজ, শুকনো চাল, নানা ধরনের মিষ্টি ইত্যাদি ভোগ দেওয়া হয়। দশমীর সকালে ও বিকালে মা কে বরণ করার পর নিমতলা ঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জন করা হয়। এই বাড়ির এক উল্লেখযোগ্য নিয়ম হল কাদামাটি খেলা। এই খেলায় বাড়ির ছেলেরা পুজোর সময় কাদামাটি নিয়ে খেলে আর ঢাকের তালে তালে নাচ করে।
আরও পড়ুন- আদিবাসী সংস্কৃতি তুলে ধরবেন সানি ব্লিসের আবাসিকরা, মণ্ডপের উপকরণও পরিবেশবান্ধব
পুজোর কটা দিন হাসি-ঠাট্টা-আনন্দে মেতে থাকেন বসুমল্লিক বাড়ি।তারপর বিদায় বেলায় স্বল্প খারাপ লাগার সঙ্গে থাকে আবার পরের বছরের পুজোর উন্মাদনা। তবে আগেকার নিয়ম যথাসম্ভব মেনেই এখনো তাদের পরম্পরা ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন বসু মল্লিক পরিবার।