সংক্ষিপ্ত
- রাজ্যের আপত্তি অগ্রাহ্য করে ৩ আইপিএসকে পোস্টিংয়ে পাঠাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক
- 'এটি অসাংবিধানিক এবং সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য'
- ক্ষোভ প্রকাশ করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়
- কিন্তু কী বলছে আইপিএস আইন, জানুন বিস্তারিত
রাজ্যের আপত্তি অগ্রাহ্য করে ৩ আইপিএসকে পোস্টিংয়ে পাঠাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এরপরেই 'এটি অসাংবিধানিক এবং সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য', বলে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়।
আরও পড়ুন, 'এতদিন কোথায় ছিলেন', জিতেন্দ্রের প্রশংসায় দিলীপ-বাবুল, জল কোন দিকে
টুইটে কী বললেন মমতা
নবান্নের আপত্তি অগ্রাহ্য করে ৩ আইপিএসকে পোস্টিংয়ে পাঠাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ৩ আইপিএসকে ডেপুটেশনে পাঠাল কেন্দ্র। ৫ বছরের জন্য এই তিন জনকে পস্টিংয়ে পাঠানো হল। রাজিব মিশ্র কে আইটিবিপি, প্রবীণ কুমার ত্রিপাঠিকে পাঠানো হল এসএসবি-তে। এবং ভোলানাথ পান্ডে বিপিআরডিতে পাঠানো হল। নবান্ন আপত্তি কে পুরোপুরি খারিজ করে দিল স্বরাষ্ট্র দফতর। এরপরেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন মমতা। ক্ষমতার আস্ফালন ও ১৯৫৪ আইপিএস ক্যাডার রুলের অপব্যবহার বলে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। টুইটে তিনি জানিয়েছেন, 'এই আইনটি রাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের মনমুগ্ধ করার ইচ্ছাকৃত প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়। বিশেষত নির্বাচনের আগে এই পদক্ষেপটি ফেডারেল কাঠামোর মূল ধারার পরিপন্থী। এটি অসাংবিধানিক এবং সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।'
আরও পড়ুন, 'ডিসেম্বর মাসটা ইতিহাসে লেখা থাকবে', শনিবারের আগেই শুভেন্দুকে নিয়ে মুখে খুলে ফেললেন দিলীপ
কী বলছে আইপিএস আইন
আইপিএস-দের নিয়োগ করা হয় ইউপিএসসি-র মাধ্যমে। এদের নিয়োগ থেকে শুরু করে প্রশিক্ষণ-সবেরই দায়িত্ব বর্তায় কেন্দ্রীয় সংস্থা ইউপিএসসি-র মাধ্যমে। প্রশিক্ষণ শেষ হলে আইপিএস-দের পাঠানো হয় রাজ্যে রাজ্যে। ইউপিএসসি যা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের একটি নিয়ন্ত্রিত সংস্থা। সুতরাং, বকলমে আইপিএস-দের মূল নিয়ন্ত্রক কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। যদিও, একবার কোন রাজ্যে পোস্টেড হলে আইপিএস-দের নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট রাজ্যের। ফলে, কেন্দ্র চাইলেই দুম করে আইপিএস-দের কেন্দ্রীয় সরকারের ডিউটি-তে ডেকে পাঠাতে পারে না। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রাজ্যে নো-অবজেকশন থাকাটা বাধ্যতামূলক। কিন্তু, তা বলে যে কেন্দ্রের হাতে আইপিএস-দের নিয়ন্ত্রণের কোনও ক্ষমতা নেই এমনটাও আবার নয়।
আরও পড়ুন, একুশে জুটবে কি ১০০ আসন তৃণমূলের, ভবিষ্যতবাণী মুকুল রায়ের
কেন্দ্র ইচ্ছে করলে পারে, রাজ্যের কিছু করার নেই
আইপিএস-দের যে সার্ভিস রুল রয়েছে, তাতে পরিস্কার বলা রয়েছে কেন্দ্র ডেপুটেশনে আইপিএস-দের চাইলে রাজ্যের কিছু করার নেই। সার্ভিস রুলের ৬১(১) ধারা অনুযায়ী কেন্দ্র ইচ্ছে করলে আইপিএস-দের ডেপুটেশনে ডাকতেই পারে। এক্ষেত্রে রাজ্যের আপত্তি ধোপে টিকবে না। সবচেয়ে বড় কথা রাষ্ট্রপতির সই সাপেক্ষে সর্বভারতীয় ক্যাডার অফিসারদের নিয়োগে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তই শেষ কথা বলবে। ফলে, পশ্চিমবঙ্গের তিন আইপিএস রাজীব মিশ্র, প্রবীণ ত্রিপাঠী এবং ভোলানাথ পাণ্ডে-র ডেপুটেশন-এর যে নির্দেশ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভল্লা দিয়েছেন তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে মানতেই হবে।
আরও পড়ুন, ব্রাত্য 'বাঙালি', বাংলার ভোট-যুদ্ধ জয়ে 'অবাঙালি' 'পঞ্চপান্ডব' পাঠাল বিজেপি
কেন পোস্টিং, ঠিক কী হয়েছিল
প্রসঙ্গত, ডায়মন্ড হারবারে সভা করতে যাচ্ছিলেন জেপি নাড্ডা। তাঁর সঙ্গে ছিল বিশাল গাড়ির কনভয়। যে কনভয়ে ছিলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয় থেকে শুরু করে মুকুল রায়, দিলীপ ঘোষ, অনুপম হাজরাদের গাড়ি। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ডহারবার রোডের উপরে শিরাকোল ছাড়িয়ে কনভয় একটু এগোতেই তাতে ইটবৃষ্টি শুরু হয়। এমনকী, গাড়ির গায়ে লাঠি এবং চড়-থাপ্পড় এবং লাথিও মারা হয়। পুরো ছবি ভিডিও-তে ধরা পড়ে। গাড়ির কাঁচ ভেঙে ভিতরে ঢুকে যায় ইটের আধলা টুকরো, কোল্ড ড্রিঙ্কসের কাঁচের বোতল। কৈলাস বিজয়বর্গীয়-র গাড়ির কাঁচ পুরো ভেঙে যায়। ব্যাপক ক্ষতি হয় বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের গাড়ি, বিজেপি নেতা অনুপম হাজরার গাড়ি। এমনকী, এতে দুই নিরাপত্তারক্ষীও গুরুতর জখম হন। এবং এইদিন দায়িত্বে ছিলেন এই আইপিএস অফিসারেই।