সংক্ষিপ্ত

সারদা-কাণ্ড পিছুই ছাড়ছে না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের

২০২১-এর বিধানসভা ভোটেও ফের বাজছে সারদা-ঘণ্টা

কেন এবার সিবিআই-এর নিশানায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

সারদার সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের যোসূত্রটাই বা কী

শমিকা মাইতি: সারদা-কাণ্ড পিছু ছাড়ছে না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ২০১৪, ২০১৬, ২০১৯-এর পর ২০২১-এর বিধানসভা ভোটের বাজারে ফের সারদা-ঘণ্টা বেজে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গে। সারদা-কাণ্ডে দুই তদন্তকারী কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই ও ইডি শাসকদলের নেতা-মন্ত্রী ও ঘনিষ্ঠ পুলিশ প্রশাসনের কর্তাদের জেরা শুরু করেছে সম্প্রতি। তৃণমূল নেতা মদন মিত্র, কুনাল ঘোষ, জোড়াসাঁকোর তৃণমূল প্রার্থী বিবেক গুপ্ত, ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকার, রাজ্যের নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ, প্রাক্তন আইপিএস রজত মজুমদারদের ডেকে পাঠানো হয়েছে একে-একে। ভোটের মুখে ফের সারদা মামলায় দলের লোকদের তলব করার নেপথ্যে ‘রাজনৈতিক অভিসন্ধি’ দেখছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য সাফ জানাচ্ছেন, ‘তদন্ত তার নিজের গতিতে চলছে। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। বাংলার সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লুঠ করা সারদা-রোজভ্যালির লক্ষ লক্ষ টাকা গায়েব করেছে তৃণমূল। সিবিআই দোষীদের কাঠাগড়ায় তুলেই ছাড়বে।’ সারদার টাকা কোথায় গেল বা কে হজম করল, একদিন জানা যাবে নিশ্চয়ই। কিন্তু তৃণমূল দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এটা অস্বীকার করতে পারেন না যে, সারদার বাড়বাড়ন্ত থেকে পতনের প্রতিটি পর্বের সঙ্গে তিনি বা তাঁর দলের লোকেরা প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত ছিলেন।  

সারদার উত্থান : চড়া সুদের লোভ দেখিয়ে পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, অসম-সহ উত্তর-পূর্বের বেশ কয়েকটি রাজ্য থেকে প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা তুলেছিলেন সুদীপ্ত সেনের সারদা গোষ্ঠী। কেন্দ্রীয় কোম্পানি বিষয়ক মন্ত্রকের অধীনস্থ এসএফআইও সারদা কেলেঙ্কারি নিয়ে সাড়ে পাঁচশো পাতার যে রিপোর্ট মন্ত্রকে পেশ করে তাতে দেখা যাচ্ছে, সারদায় আমানত সংগ্রহে প্রবল জোয়ার আসে ২০০৯-১০ সালে। এসএফআইও রিপোর্ট অনুযায়ী সারদা পশ্চিমবঙ্গে থেকে মোট ২ হাজার ১৩১ কোটি টাকা তুলেছিল। যার প্রায় দু’হাজার কোটিই এসেছিল রাজ্যে মমতা সরকার গঠনের পরে। আর এখানেই তৃণমূলের প্রভাব বৃদ্ধির সঙ্গে সারদার বাড়বাড়ন্তের একটা সমানুপাতিক সম্পর্কের হদিশ মিলছে। এসএফআইও রিপোর্টে বলা হয়েছিল, প্রাক্তন পুলিশকর্তা রজত মজুমদারের মতো প্রভাবশালীদের চাকরি দিয়ে কিংবা সংস্থার অনুষ্ঠান-মঞ্চে তৃণমূলের মন্ত্রী মদন মিত্র বা পুলিশ কমিশনার সুরজিত কর পুরকায়স্থদের মতো প্রভাবশালীদের দাঁড় করিয়ে সারদা গোষ্ঠী আমজনতার কাছে নিজেদের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রতিষ্ঠিত করে। এ প্রসঙ্গে মহাকরণের সামনে মুখ্যমন্ত্রীকে দিয়ে সারদার অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা চালু করে তার ছবি প্রচার কিংবা জঙ্গলমহলে রাজ্য-সারদা যৌথ উদ্যোগে স্বাস্থ্য পরিষেবা কর্মসূচির কথা উল্লেখ করা যায়। 

পতন ও পলায়ন-পর্ব : ২০১৩ সালের গোড়ায় আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে গড়িমসি শুরু করে সারদা। সাম্রাজ্য ভেঙে পড়ছে বুঝতে পেরে ২০১৩ সালের ৫ এপ্রিল তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার সঙ্গে নিজাম প্যালেসে বৈঠক করেন সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেন। সুদীপ্তের গাড়িচালক অরবিন্দ চৌহানের দাবি, সকাল ৯টার সময় মিডল্যান্ড পার্কের অফিস থেকে সারদা-কর্তাকে নিয়ে নিজাম প্যালেসে পৌঁছে দিয়েছিলেন তিনি। সেখানে তৃণমূলের আর এক প্রাক্তন নেতা আসিফ খানও ছিলেন। সিবিআইয়ের দাবি, প্রাথমিক আলোচনা হয় সারদার ৫০০ কোটি টাকা কোথায় রাখা হবে তা নিয়ে। বৈঠকে ঠিক হয়, আপাতত দেশের বাইরে গা ঢাকা দেবেন সুদীপ্ত। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। এই আলোচনার মধ্যেই কথা ওঠে সুদীপ্তের ডান হাত দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে। সুদীপ্ত বলেন, দেবযানী কলকাতায় থাকলে বিপদ হতে পারে। এরপরেই ঠিক হয় দেবযানীকে নিয়ে পালাবেন সুদীপ্ত। কোন পথে কী ভাবে পালাবেন সেই রুট ম্যাপও নিজাম প্যালেসের ওই বৈঠকেই ঠিক হয়েছিল বলে দাবি সিবিআইয়ের। সিবিআইয়ের দাবি, ওই দিন এবং পরদিন দফায় দফায় গাড়িতে করে মোট ৫০০ কোটি টাকা নিজাম প্যালেসে পৌঁছে দেন সুদীপ্ত। ওই টাকা আসিফ খান মারফত উত্তরপ্রদেশ ও ওড়িশায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ৯ তারিখে নিরুদ্দেশ হন সুদীপ্ত। পুলিশকে দেওয়া বয়ানে দেবযানী জানিয়েছিলেন, তিনি ১২ এপ্রিল দিল্লি আসেন। ১৩ এপ্রিল সুদীপ্ত ও দেবযানীকে নিয়ে অরবিন্দ দেরাদুনের উদ্দেশে পাড়ি দেন। ১৪ এপ্রিল দেরাহুন পৌঁছন তাঁরা। ১৫ এপ্রিল যান হরিদ্বারে এবং সেখান থেকে করবেট ন্যাশনাল পার্ক, হলদোয়ানি হয়ে ১৭ এপ্রিল নেপালের ঘোড়াঘোড়ি এলাকায় অরবিন্দের এক আত্মীয়ের বাড়িতে পৌঁছন তিন জনে। এর মধ্যেই সারদার সংবাদপত্র প্রভাত বার্তার কর্মীরা থানায় অভিযোগ দায়ের করলে সুদীপ্তের খোঁজ শুরু হয়। রাজ্য জুড়ে তখন বিক্ষোভ শুরু হয়। তৃণমূলের অফিস, সদর দফতর এমনকী মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনেও বিক্ষোভ দেখান সারদার আমানতকারী ও এজেন্টরা। এরপরেই পরিস্থিতি সামলাতে আসরে নামেন রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ নেতারা। তাঁদের কাছ থেকে নির্দেশ আসার পরে সুদীপ্তর ফোন ট্যাপ করে বিধাননগর পুলিশ। তাদের কাছ থেকে সিবিআই জানতে পেরেছে, ৯-২৩ এপ্রিল পলায়নপর্বে মোট ৮৬ বার নিজাম প্যালেসের ওই তৃণমূল নেতার সঙ্গে কথা হয়েছে সুদীপ্তের, যখন তাঁকে হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ। রাজনৈতিক কারণে ওই নেতার ফোন ট্যাপ করা না গেলেও সুদীপ্তর স্ত্রী পিয়ালী, ছেলে শুভজিৎ, বৌমা প্রিয়াঙ্কা, দেবযানীর মা ও তাঁর আইনজীবী বন্ধুর ফোন ট্যাপ করে পুলিশ। দেবযানীর মা ও আইনজীবী বন্ধুর ফোন থেকে জানা যায় সুদীপ্তর যাত্রাপথ। এদিকে, নেপাল থেকে উত্তরপ্রদেশের রুদ্রপুরে এক হোটেলে ১৮ এপ্রিল সন্ধেবেলা ওঠেন সুদীপ্ত ও দেবযানী। মুখ্যমন্ত্রী গ্রেফতার করার নির্দেশ দিয়েছেন খবর পেয়ে উত্তরপ্রদেশ ছাড়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন সুদীপ্ত। হরিয়ানার সোনিপত থেকে চণ্ডীগড় হয়ে পঞ্জাবের কিরাতপুর পৌঁছন তাঁরা।  সেখান থেকে কুলু, মানালি, জম্মি, উধমপুর হয়ে শ্রীনগরে যান সুদীপ্ত।  গাড়িচালক অরবিন্দ সিংহ চৌহান সিবিআইকে জানিয়েছিলেন, পালানোর সময় তৃণমূলের বিভিন্ন নেতার কাছ থেকে বারবার ‘ইনস্ট্রাকশন’ এসেছে। সোনমার্গে পৌঁছনোর পরে তাঁদের পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে চলে যাওয়ার নির্দেশ আসে। কিন্তু দেবযানী সেই নির্দেশ মানতে চায়নি বলে সেই যাত্রা বাতিল করা হয়। এদিকে দেবযানীর ফোন ট্যাপ করে পুলিশ সারদা-কর্তার অবস্থান জেনে ফেলে। ২৩ এপ্রিল সকালে সোনমার্গ থানার পুলিশ হোটেল থেকে তিন জনকে আটক করে।

সারদা-তদন্ত : সারদা-কেলেঙ্কারি সামনে আসার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করেছিলেন (সিট)। ওই দলে গুরুত্বপর্ণ ভূমিকায় ছিলেন রাজীব কুমার। তদন্তে বিভিন্ন দফায় সিট গ্রেফতার করেছে ১১ জনকে, ২২৪টি স্থাবর সম্পত্তি ও ৫৪টি গাড়ি বাজেয়াপ্ত করেছে, চার্জশিট দিয়েছে প্রায় ৩০০টি কেসের। ধৃতদের মধ্যে তৃণমূল ঘনিষ্ঠ বেশ কিছু নেতা মন্ত্রীও ছিলেন। যেমন,  কুনাল ঘোষ, সৃঞ্জয় বসু, রজত মজুমদার, মদন মিত্র প্রমুখ। কিন্তু সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সারদার কোনও যোগ দেখায়নি সিটের তদন্ত। বিরোধীরা অভিযোগ করে, তদন্তের নামে রাজ্য সরকার (পড়ুন মমতা) নিজের পিঠ বাঁচাচ্ছে। ২০১৪ সালের ৯ মে সারদা কেলেঙ্কারিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। ১২ মে তদন্তকারী দল গঠন করে সিবিআই।

সিবিআই ও রাজীব কুমার- সিবিআইয়ের অভিযোগ, সারদা-তদন্তে টানা অসহযোগিতা করেছেন তদন্তকারী অফিসার রাজীব কুমার। সারদা মামলার নথিপত্র বিকৃত করেছেন তিনি। এমনকী সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন এবং দেবযানী মুখোপাধ্যায় বিভিন্ন সময়ে যাঁদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন, সেই কল-ডিটেলস ও বিকৃত করা হয়েছে বলে অভিযোগ। রাজীব সিবিআইকে জানিয়েছেন, সারদা-তদন্তে শুধুমাত্র লজিস্টিকস দেখতেন তিনি। কিন্তু শঙ্কর ভট্টাচার্য, দিলীপ হাজরা, অর্ণব ঘোষ, পল্লবকান্তি ঘোষদের মতো পুলিশ অফিসাররা সিবিআইকে জানিয়েছেন, রাজীব কুমারের নির্দেশই তাঁরা তদন্ত এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। সিবিআইয়ের বক্তব্য, দেবযানী মুখোপাধ্যায় তাঁর বয়ানে জানিয়েছিল, সারদা নগদের হিসাব একটা ডায়েরিতে লেখা থাকত এবং সেই ডায়েরি বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের অফিসারদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রাজীব এই ডায়েরির কথা বারবার অস্বীকার করে গিয়েছেন। সিবিআইয়ের দাবি, তদন্তের জন্য ওই ডায়েরি পাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডায়েরিতে তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতা-মন্ত্রী থেকে অনেক পুলিশ অফিসারের নাম রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে রাজীবকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে সিবিআই। এখনও সেই মামলা বিচারাধীন। এর আগে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই শিলঙে সিবিআইয়ের মুখোমুখি হয়েছিল রাজীব। যদিও তার কাছ থেকে কিছু বার করতে পারেনি সিবিআই।

ডেলোর বৈঠক : ডেলোর পাহাড়ি বাংলোয় মমতার সঙ্গে সুদীপ্ত সেনের বৈঠকের কথা প্রথম ফাঁস করেছিলেন দলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ। পরে মুকুল রায়ও সিবিআই জেরায় ওই বৈঠকের কথা স্বীকার করেন। তাঁদের কথা মতো, ২০১২-র ১ মার্চ ওই বৈঠক হয়েছিল। আর তার পরের বছর এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে গ্রেফতার হন সুদীপ্ত। মমতা বরাবর দাবি করে এসেছেন, সারদা সাম্রাজ্য ভেঙে পড়ার আগে ওই সংস্থা বা সুদীপ্তর সম্পর্কে তিনি কিছু জানতেন না।  কিন্তু ডেলোর বৈঠকের কথা সত্যি প্রমাণিত হলে এটা পরিষ্কার হয়ে যাবে যে সুদীপ্তর সঙ্গে মমতার পরিচয় অন্তত তার এক বছর আগে। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ডেলোর বৈঠকেই কুনাল মারফত সুদীপ্ত প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তাঁর মিডিয়া ব্যবসার মাধ্যমে মমতাকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর হিসাবে দেশ জুড়ে প্রচার করবেন। সেই মতো দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ইংরেজি ও বাংলা ভাষায় একাধিক সংবাদপত্র ফেঁদে বসেন সুদীপ্ত। যদিও তাল রাখতে না পেরে এক বছরের মধ্যে তাঁকে ব্যবসা গুটিয়ে ফেলতে হয়।  

আরও পড়ুন - কৃষি না শিল্প - একদশক পর নির্বাচনে ফিরে এল পুরোনো প্রশ্ন, কী বলছে সিঙ্গুর

আরও পড়ুন - বাদ 'জয় শ্রীরাম', ভরসা নিজের কাজ - শুভেন্দুর থেকেও কঠিন পরীক্ষায় এবার রাজীব, দেখুন

আরও পড়ুন - বঙ্গের কোন কোন কেন্দ্রে সহজে জিতবে বিজেপি, কোথায় লড়াই কঠিন - কী বলছে দলের গোপন বিশ্লেষণ

সারদা ও মিডিয়া ব্যবসা : সুদীপ্ত সেন বারবার আক্ষেপ করেছেন, মিডিয়া ব্যবসাই তাঁকে পথে বসিয়েছিল। সুদীপ্ত সেনের অভিযোগ, কোটি কোটি টাকা ঢালার পরেও কলম পত্রিকার মালিকানা তিনি পাননি। উল্লেখ্য কলম পত্রিকাটি সুদীপ্ত সেনকে বিক্রি করেছিলেন আহমেদ হাসান ইমরান। চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্নর মালিকানাধীন দেবকৃপা ব্যাপার প্রাইভেট লিমিটেদ-এর টিভি চ্যানেল ‘এখন সময়’ এর বিক্রিবাটা নিয়ে যেমন নানা অসঙ্গতি রয়েছে, তেমনই প্রশ্ন রয়েছে ইমরানের কলম পত্রিকা নিয়েও। সুদীপ্তের অভিযোগ, পত্রিকাটি কেনার জন্য প্রথমে সাড়ে চার কোটি টাকা দিতে বলা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু পরে চাপ দিয়ে কয়েক দফায় তাঁর কাছ থেকে ইমরান ও অন্যরা প্রায় ১৮ কোটি টাকা নিয়েছিলেন। এদিকে, সুদীপ্ত সেন চ্যানেল টেন ও তারা নিউজ কিনে নেওয়ার পর ওগুলি যে কার্যত তৃণমূলের প্রচারযন্ত্রে পরিণত হয়েছিল, তা বারেবারে বলেছে বিরোধীরা। সারদার ঝাঁপ পড়ার পরেও চ্যানেল দু’টি চলছিল। এর মধ্যে তারা নিউজ কার্যত সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় চলছিল। আর সারদার মিডিয়া ব্যবসার সঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের গভীর যোগাযোগের কথা তো সর্বজনবিদিত।

এই ভাবে সারদা-তদন্তের শিকড় ছড়িয়ে আছে তৃণমূলের শাখা-প্রশাখায়। সারদার কালি মুছে ফেলা শুধু কঠিনই নয়, কার্যত অসম্ভব তৃণমূলের পক্ষে।

YouTube video player