সংক্ষিপ্ত
ঘাটালের বন্যা পরিস্থিতি দেখে রীতিমত হতাশ দেব। বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রাধানমন্ত্রী না হওয়া পর্যন্ত কার্যকর হবে না মাস্টার প্ল্যান।
বানভাসি ঘাটালের পরিস্থিতি পরিদর্শনে দিনভর নৌকায় করে ঘুরলেন সাংসদ দেব তথা দীপক অধিকারী । বুধবার মহাকুমা শাসকের কার্যালয় বৈঠকের পর নৌকোয় করে বেরিয়ে পড়েন প্লাবিতদের খোঁজখবর নিতে। দিনের শেষে ভোগান্তি দেখে হতাশ সাংসদ ক্ষোভ উগরে দিলেন কেন্দ্র সরকার ও বিজেপির বিরুদ্ধে। তিনি বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যতদিন প্রধানমন্ত্রী না হচ্ছেন ততদিন ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান কার্যকর হবে না। এদিন রীতিমত সুর চড়িয়ে দেব বলেন 'যাঁরা ভোটের সময় 'চাটার্ড ফ্লাইট নিয়ে এসেছিলেন সেই সব বিজেপি নেতারা এখন কোথায়?'
এক মাসের ব্যবধানে দুবার বন্যা প্লাবিত হলো ঘাটাল মহকুমা। পশ্চিম মেদিনীপুরের বন্যা প্লাবিত অন্য এলাকাগুলির কিছুটা উন্নতি হলেও ঘাটালে উন্নতি হয়নি। নতুন করে জল ছাড়ায় আর বুধবার থেকে বৃষ্টির কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
INS Vikrant-র পুনর্জন্ম, যুদ্ধ বিমানবাহী রণতরীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা শুরু
'তৃণমূলের ভাঁওতাবাজির বাংলা মডেল', পরপর ৮টি টুইটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জবাব দিল বিজেপি
কোভিডের সংক্রমণ রুখতে দ্রুত ব্যবস্থা নিন, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আর্জি মুখ্যমন্ত্রীকে
বেলা একটা নাগাদ ঘাটাল মহকুমা শাসকের কার্যালয়ে হাজির হয়ে মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস এর সঙ্গে বৈঠক করেন। উপস্থিত ছিলেন জেলা সহ-সভাধিপতি অজিত মাইতিও। বৈঠকের পর বন্যায় বিভিন্নভাবে মৃত সাতটি পরিবারের হাতে আর্থিক সাহায্য তুলে দেন দেব। এরপর সেখান থেকে কিছুটা গিয়ে নৌকোয় করে প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে প্লাবিত এলাকা হরিদাসপুর গ্রাম পরিদর্শনে যান। ঘাটালের আড়গোড়া থেকে হরিদাসপুর গ্রামের দূরত্ব প্রায় পাঁচ কিমি। জলে ডুবে থাকা পুরো এলাকার ওপরে নৌকোয় করে পরিস্থিতি দেখতে দেখতে যান তিনি। জলে ডুবে থাকা বাড়িগুলির ছাদে দাঁড়িয়ে অনেকেই প্রশাসনিক কর্তাদের উদ্দেশ্যে পানীয় জলের অভাব নিয়ে সরব হন। অবিলম্বে পানি. জল সরবরাহের দাবি জানান। দেব সমস্ত দেখে হরিদাসপুর এলাকাতে বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রী ও পানীয় জল তুলে দেন।
ঘাটাল ব্লকের বারটি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে দশটি এখনো জলমগ্ন। বেশিরভাগ এলাকাতেই বিদ্যুতের সংযোগ জলে ডুবে রয়েছে। ব্যাহত হয়েছে বিদ্যুৎ পরিষেবা। এর ফলে পানীয় সমস্যা তৈরি হয়েছে। বসে গিয়েছে মোবাইল নেটওয়ার্কিং। ইতিপূর্বেই বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ,উপ সংশোধনাগার ,ঘাটাল থানা স্থানান্তরিত করতে হয়েছে। অস্থায়ী কার্যালয় তৈরি করে নিজেদের কাজকর্ম পরিচালনা শুরু হয়েছে। গত সাত দিনে বন্যার কারণে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। বারোটি স্পিডবোট ও দেশি নৌকা প্রতিমুহূর্তে উদ্ধারের কাজ চালাচ্ছে। বুধবার থেকে নতুন করে বৃষ্টি শুরু হয়ে যাওয়ায় সমস্যা আরও প্রকট হতে চলেছে ঘাটাল জুড়ে।
সমস্ত দেখার পর এদিন দেব বলেন-" সমস্যা যথেষ্ট ভয়ানক। নতুন করে জল ছাড়ছে বলে জানতে পেরেছি। তাকে আরো সমস্যা বাড়বে। সবাইকে তৎপরতার সঙ্গে মানুষকে উদ্ধারে নামতে হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে চূড়ান্ত চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এই মুহূর্তে অন্য কিছু মাথায় আসছে না। তবু না বললেও নয়-নির্বাচনের সময় যারা চাটার ফ্লাইট ও হেলিকপ্টারে করে এসেছিলেন তারা একবারও এলেন না কেন এই মুহূর্তটায়। বিজেপির সেই নেতৃত্বরা কোথায় গেলেন। মানুষের এই দুঃসময়ে পাশে না দাঁড়িয়ে শুধু নির্বাচনের সময় ভোট চাইতে আসাটা ঠিক নয়। সব দেখে যা মনে হয়েছে দিদি যতদিন না প্রধানমন্ত্রী হয়, ততদিন হয়তো মাস্টারপ্ল্যান বা ঘাটালের বন্যা নিয়ন্ত্রণ উদ্যোগ কেউই নেবে না। বাংলার এই দুঃসময়ে উদ্ধার দিদিকেই করতে হবে।