সংক্ষিপ্ত

  •  বাংলা থেকে গুজরাতে সরে যায় ন্যানো প্রকল্প 
  • বাংলায় ন্যানো প্রকল্প হতে দেননি বিরোধীরা
  • সিঙ্গুর তাঁর ক্ষমতার মসনদে বসার প্রথম সিঁড়ি
  • ২০০১ সালে সিঙ্গুর চলে যায় তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে

তাপস দাস- গুড এম-ব্যাড এম। এই শব্দবন্ধদ্বয় উচ্চারণ করেছিলেন রতন টাটা। বাংলা থেকে গুজরাতে তাঁর স্বপ্নের ন্যানো প্রকল্প সরিয়ে নিয়ে যাবার সময়ে। গুড এম হলেন মোদি আর ব্যাড এম মানে মমতা। বাংলায় ন্যানো প্রকল্প হতে দেননি বিরোধীরা। কৃষিজমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হবার পর সে আন্দোলনের সংবাদ বৃহত্তর ক্ষেত্রে পৌঁছে দেবার জন্য মমতাকে অনেকটা জায়গা ছাড়া হয়েছিল। তার যথার্থ সদ্ব্যবহার করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী। সিঙ্গুর তাঁর ক্ষমতার মসনদে বসার প্রথম সিঁড়ি। 

আরও পড়ুন- মনোহর আইচের ভাবশিষ্যই বিজেপি নেতার দেহরক্ষী, ভোটের ধাক্কায় এলোমেলো শরীর চর্চা 

১৮৮ নং সিঙ্গুর বিধানসভা কেন্দ্রটি হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। স্বাধীন ভারতের প্রথম ভোটে এই আসনটি যায় অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টির দখলে। তারপর পরপর তিনবার এখানে জিতেছিল কংগ্রেস। ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৭ পর্যন্ত এখানে জয়লাভ করে সিপিএম। ১৯৮২ সালে এই আসনে জেতেন কংগ্রেস প্রার্থী। ১৯৮৭ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত টানা সিপিএমের দখলে ছিল সিঙ্গুর। ২০০১ সালে সিঙ্গুর চলে যায় তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে। তখন থেকে টানা চারবার এ আসন তৃণমূলের, এ আসন রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যেরও। 

আরও পড়ুন- কখনও ইমাম ভাতা, কখনও ক্লাবকে অনুদান - জনগণের টাকাতেই কি ভোট কিনছেন মমতা 

রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য বর্ষীয়ান মানুষ। এলাকায় মাস্টারমশাই নামেই তাঁর পরিচিতি। সিঙ্গুর আন্দোলনের সময়ে মমতা তাঁর উপর নির্ভর করতেন অনেকটাই। বর্ষীয়ান রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতেন তাঁর ছাত্র বেচারাম মান্না। পরবর্তীকালে বেচারাম বনাম রবীন্দ্রনাথ গোলযোগ বারবার সামনে এসেছে। তৃণমূলের ঊর্ধ্বতন নেতাদের হস্তক্ষেপে গোলমাল মিটেছে বটে, তবে তা যে সাময়িক সে কথা বোঝাই যেত। কিছুদিন পরপর মাথা চাড়া দিয়ে উঠত সমস্যা। শেষ পর্যন্ত, কিছুদিন আগে রবীন্দ্রনাথ বিজেপিতে যোগ দিলেন। বেচারাম রইলেন তৃণমূলেই। 

২০১১ সালের নির্বাচনে রবীন্দ্রনাথ নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিএম প্রার্থীকে হারিয়েছিলেন ৩৪ হাজারেরও বেশি ভোটে। ২০১৬ সালে সিপিএম এখান থেকে টিকিট দিয়েছিল রবীন দেবকে, যিনি ন্যানো কারখানা গড়ার মাধ্যমে রাজ্যে শিল্পায়ন বিষয়ে ছিলেন অতীব সোচ্চার। সেবার রবীন্দ্রনাথ ৯৬ হাজারের কিছু বেশি ভোট পেয়েছিলেন, আর রবীন দেব পেয়েছিলেন প্রায় ৭৬ হাজার ভোট। 

এই আসনে বিজেপির ভোটের হিসেব একবার দেখে নেওয়া যাক। ২০১১ সালে বিজেপির সৌরেন পাত্র পেয়েছিলে ৮ হাজারের বেশি ভোট। ২০১৬ সালের নির্বাচনে তিনি পান ১৪ হাজারের বেশি ভোট। আর ২০১৯ সালের লোকসভা আসনের ভোটের সময়ে এই বিধানসভা কেন্দ্র অনেকটা লিড দিয়েছিল বিজেপির লকেট চট্টোপাধ্যায়কে। তিনি ৯৩ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছিলেন এখান থেকে। অন্যদিকে তৃণমূলের রত্না দে নাগ পেয়েছিলেন প্রায় ৮৩ হাজার ভোট।