সংক্ষিপ্ত
- বিশ্বের বৃহত্তম উপসাগর হলো বঙ্গোপসাগর
- অনেক ঝড়ের সাক্ষী রয়েছে এই এর উপকূলবর্তী এলাকা
- ১৯৭০ সালে বিশ্বের ইতিহাসের ভয়ঙ্করতম ঝড় ভোলা আছড়ে পড়েছিল এখানে
- শুধু সুপার সাইক্লোন নয়, নিয়মিত অসংখ্য় ঝড় বয়ে যায় এই উপকূল দিয়ে
বিশ্বের বৃহত্তম উপসাগর বঙ্গোপসাগরে ঝড় বারেবারেই আছড়ে পড়েছে। মাঝারি থেকে শুরু করে ভয়াবহ বা অতি ভয়াবহ, অনেক ঝড়েরই সাক্ষী রয়েছে বঙ্গোপসাগর ও তার উপকূল। ১৯৭০ সালের নভেম্বর মাসে এখানে আছড়ে পড়েছিলো ঘূর্ণিঝড় ভোলা। বিশ্বের ইতিহাসে এর চেয়ে ভয়াবহ ঝড় আর দেখা যায়নি। প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ মারা পড়েছিলেন এই ঝড়ে।
বিশ্বের বৃহত্তম উপসাগর এই বঙ্গোপসাগরের উপকূলে প্রায় কয়েক কোটি মানুষের বাস। একের-পর-এক সব ভয়ঙ্কর ঝড়ের সাক্ষী রয়েছে এই তল্লাট। যা শুধু আমাদের দেশেই নয়, গোটা বিশ্বেই ভয়ঙ্কর বলে চিহ্নিত হয়ে রয়েছে। একটি তালিকা অনুযায়ী, এখনও অবধি ২৬ থেকে ৩৫টি মারাত্মক ঝড়ের সাক্ষী রয়েছে এই উপকূল। আমফান এদের ভেতর সাম্প্রতিকতম। আবহাওয়াবিদরা মনে করছেন, এটি একটি অতি তীব্র সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড়। প্রসঙ্গত বলে রাখা যেতে পারে, এই বঙ্গোপসাগরের উপকূলে কিন্তু ঘন ঘন ঝড়ে ওঠে। এদের মধ্য়ে হাতে গোনা কয়েকটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। বিশ্বের তাবড় আবহাওয়াবিদরা মনে করেন, ঝড় ওঠার ক্ষেত্রে সবচেয়ে খতরনাক জায়গা হলো এই উপকূল। আর যা সবচেয়ে খারাপ, বঙ্গোপসাগরের উষ্ণ সমুদ্র। আর অনেক উঁচুতে থাকা এর সমুদ্রতল।
প্রসঙ্গত, ঘণ্টায় ২২০ কিলোমিটার গতিবেগ ছাড়ালেই কোনও ঝড়কে ঘূর্ণিঝড় বা সুপার সাইক্লোন বলা হয়। এই ধরনের ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষেত্রে একসঙ্গে অনেক বিপদ এসে হাজির হয়। ঝোড়ো হাওয়া আছড়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে উপকূলবর্তী এলাকার প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়। সেইসঙ্গে জোয়ার আর অতিবৃষ্টি মিলে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। চারদিক ভেসে যায়। শুধু সুপার সাইক্লোনই নয়, নিয়মিত কিছুদিন অন্তর অন্তর ঝড় ওঠে এই উপকূলবর্তী এলাকায়। এই অসংখ্য়া ঝড়ের মধ্য়ে কোনও একটি ঝড়, প্রতি ১০ বছরে সুপার সাইক্লোনে পরিণত হয়। যেমন আমফান।
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে মায়ানমারের ইরাড্ডি বদ্বীপে আছড়ে পড়েছিলো ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় নার্গিস। সেই ঝড়ে কমপক্ষে ১লাখ ৪০ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিলেন। গোটা এলাকার মানচিত্র যেন বদলে গিয়েছিলো সেই ঝড়ের দাপটে। ১৯৯৯ সালে ওড়িশায় যে ঘূর্ণিঝড় হয়েছিলো, তাও ইতিহাসে কম কুখ্য়াত নয়। এছাড়া, আয়লার অভিজ্ঞতা তো আমাদের রয়েইছে।
তবে এবারের এই ঘূর্ণিঝড়ে উপকূলবর্তী মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা আরও চ্য়ালেঞ্জের বিষয়। কারণ, করোনার কারণে, সামাজির দূরত্ব মানার জন্য় একই জায়গায় গাদাগাদি করে অনেককে রাখা সম্ভব নয়। অথচ, হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনার জন্য় প্রচুর জায়গা যে খালি পড়ে রয়েছে, তেমনটাও নয়। তাই ঝড়ের ভ্রুুকূটিতে এবার সংক্রমণের আশঙ্কাও কিছু কম নয়।