সংক্ষিপ্ত

  • বাবা-র নেশার ঘোরের বলি হল পুত্র সন্তান
  • ঘটনার নৃশংসতা এতটাই ভয়াবহ যে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে 
  • কী করে একজন বাবা এভাবে সন্তানকে খুন করল উঠছে প্রশ্ন
  • ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ, পলাতক বাবার খোঁজে চলছে তল্লাশি

কৌশিক সেন, প্রতিনিধি, রায়গঞ্জ-- এক্কেবারে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে নিজের ৪ বছরের ছেলেকে গুলি করল বাবা। নৃশংস এই ঘটনা উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ ব্লকের ৮ নম্বর বাহিন গ্রাম পঞ্চায়েতের ঝিটকিয়া গ্রামে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় শিশুটিকে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যায় স্থানীয় বাসিন্দারা। হাসপাতালে পৌঁছনোর কিছুক্ষণ পরেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে চার বছরের দুধের শিশু। ঘটনার পর থেকে ঘাতক  পিতা পলাতক। 

আরও পড়ুন- আজ সকালেই মন্ত্রী জাকির হোসেনের অস্ত্রোপচার SSKM-এ, জখম ১১ সঙ্গীও চিকিৎসাধীন কলকাতায়

হাসপাতাল সুত্রে জানা গিয়েছে, মৃত শিশুর নাম সাহিল শেখ। অভিযোগ মত্ত অবস্থায় বুধবার রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ ছেলেকে মাথায় গুলি করে বাবা নাস্তার আলি। মৃত শিশুর মামা শামসুদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, ", বিয়ের পর থেকেই নানাভাবে স্ত্রীর সঙ্গে বিবাদ লেগে থাকত নাস্তারের। কিছুদিন ধরেই তা চরমে ওঠে। মত্ত অবস্থায় নাস্তার আলি তার  ছেলেকে খুন করে বলে অভিযোগ করেন তিনি। 

আরও পড়ুন- পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন ২০২১-এর আগে মন্ত্রীর উপরে প্রাণঘাতী হামলা, বোমা নিক্ষেপ করে হত্যার চেষ্টা

তিনি আরও  জানিয়েছেন,  ওই শিশুর মাকে বিয়ের পর থেকেই মাঝেমধ্যেই বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য চাপ দিত সে।টাকা আনতে রাজি না হলে তাকে খুনের হুমকি দিতো তার স্বামী নাস্তার আলি। এদিনও বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার ব্যাপারে গন্ডগোলকে  কেন্দ্র করেই স্ত্রীকে খুন করতে গিয়েই নিজের শিশুর মাথায় গুলি করে বসে নাস্তার। এই ঘটনায় এমনই অভিযোগ সামনে এসেছে। 

আরও পড়ুন- বাইরে যেতে আপত্তি, যৌনপল্লিতে ঢুকে যৌনকর্মীকে ভোজালির কোপ
 
স্থানীয় এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন, আচমকাই তিনি দেখেন সাহিলে মাথা দিয়ে রক্তের বন্যা বইছে। আর সাহিলের মা কোনওমতে হাত দিয়ে মাথার ক্ষত চেপে তাকে কোলে করে হাসপাতালে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এই পরিস্থিতি দেখে ওই প্রতিবেশী এবং তাঁর ভাইরা সাহিলের মাথায় কাপড় চাপা দিয়ে রক্ত আটকানোর চেষ্টা করেন এবং সেই সঙ্গে দ্রুত শিশুটিকে নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছন। হাসপাতালে পৌঁছেই জ্ঞান হারান ছোট্ট সাহিলের মা। রাতভর তাঁর কোনও জ্ঞান আসেনি। বাসিন্দারা সাহিলের পিতা নাস্তার সম্পর্কে মুখ না খুলতে চাইলেও জানিয়েছেন, মাঝেমধ্যেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বচসা লেগেই থাকত। নাস্তার পরিবারের উপর অত্যাচারও করত বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা। খবর পেয়ে রায়গঞ্জ থানার পুলিশ এসে তদন্ত শুরু করে। মৃতদেহটি রায়গঞ্জ মেডিকেলের মর্গে ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। নৃশংস এই হত্যাকাণ্ড রায়গঞ্জ শহরে চাঞ্চল্য ফেলে দিয়েছে। কী করে নাস্তার আগ্নেয়াস্ত্র পেল, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।