সংক্ষিপ্ত
ভুয়ো আধিকারিকের ধারাবাহিকতায় ধরা পড়ল এবার ভুয়ো সেনা জওয়ান। সত্যিই কি প্রেমিকাকে মুগ্ধ করার লক্ষ্য়েই বানানো হয়েছিল ভুয়ো আই কার্ড, ভুয়োসেনার পোশাক?
পুলিশের জালে ভুয়ো সেনা জওয়ান। উদ্ধার হল সেনাবাহিনীর পোশাক ও দুটি ভুয়ো আই কার্ড ও একটি মোটর বাইক। আর ওই ভুয়ো আই কার্ড বানিয়ে দেওয়ার দায়ে গ্রেফতার হলেন এক ফটো স্টুডিও ব্যবসায়ী-ও।
একের পর এক 'ভুয়ো' কান্ড নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। শুরু হয়েছে সেই ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জন দেবের ভুয়ো ভ্যাক্সিন কাণ্ড থেকে। তারপর একের পর এক ভুয়ো আধিকারিকের মুখোশ খুলছে। আর এই ধারাবাহিকতাতেই এবার বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর শহর থেকে খোঁজ মিলল এক ভুয়ো সেনা জওয়ানের।
এই ভুয়ো জওয়ানটির বাড়ি বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর শহরের সেনহাটি কলোনীতে। দ্বাদশ শ্রেনীর ছাত্র সে, অথচ গত বেশ কয়েক মাস যাবত সে নিজেকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একজন জওয়ান বলে পরিচয় দিয়ে আসছিল। ধীরে ধীরে এলাকাতেও সে সেই ভুয়ো পরিচয় দিয়ে নানা রকম সুবিধা আদায় করত। সেনা জওয়ানের জঙ্গলা ছাপ পোশাক পরে, বাইক হাঁকিয়ে এলাকায় দাপিয়ে বেড়াতো ওই স্কুল পড়ুয়া। শুধু নিজে ভুয়ো কার্ড বানিয়েই থামেনি সে, প্রথম প্রকল্পের সাফল্যে সে এমনকী তার এক বন্ধুর দাদাকেও সেনা বিভাগের একটি ভুয়ো আই কার্ড বানিয়ে দিয়েছিল।
১৭ বছরের নাবালকটির সেই অপ্রত্যাশিত খ্যাতিই তার বিড়ম্বনা হয়ে দাঁড়াল। তার সেনার পোশাক পরা ছবি ও ভুয়ো আই কার্ডের ছবি সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। সোস্যাল মিডিয়ায় তার সেই ছবি ভাইরাল হতেই বিষয়টি পুলিশের নজরে আসে। সেই সঙ্গে অভিযুক্ত ওই নাবালকের বিরুদ্ধে ভুয়ো আই কার্ড বানিয়ে দেওয়ার একটি অভিযোগও জমা পড়ে বিষ্ণুপুর থানায়।
এরপরই ওই নাবালককে নিয়ে খোঁজ খবর নেওয়া শুরু করে বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ। বিভিন্ন জায়গা থেকে খোঁজ নিয়ে পুলিশ জানতে পারে অভিযুক্ত ওই স্কুল ছাত্র ভারতীয় সেনার কোন কর্মী বা জওয়ান নয়। তার সেনার পোশাক, আই কার্ড - সবই জাল। সেগুলির জোরে এলাকায় নিজেকে সেনা জওয়ান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে সে নানা ধরমের অনৈতিক কান্ড-কারখানা চালিয়ে যাচ্ছিল।
এরপরই অভিযুক্ত নাবালক'কে আটক করে বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে বিষ্ণুপুর শহরের স্টেশন রোড এলাকার এক ফটো স্টুডিও থেকে ওই ভুয়ো আই কার্ড দুটি বানিয়েছিল সে। এরপরই স্টেশন রোডের ওই ফটো স্টুডিও ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
কিন্তু, কেন সে এই কাজ করেছিল? শুধুই এলাকায় দাপটদেখাবে বলে? ১৭ বছরের নাবালকটটি দাবি করেছে, এটা সে করেছিল শুধুমাত্র প্রেমে সফল হওয়ার আশায়। সে একটি মেয়েকে ভালবাসে। সেই মেয়েটিকে মুগ্ধ করতেই এইসেনা জওয়ান সেজেছিল সে। কিন্তু, ধীরে ধীরে তার কর্মকাণ্ড বাড়ছিল। ঘটনা সত্যিই তাই, নাকিতার অন্য কোনও উদ্দেশ্য ছিল, সেই বিষয়গুলি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। থানা থেকে জানানো হয়েছে, তদন্ত এখনও জারি রয়েছে।