সংক্ষিপ্ত
কেন্দ্রীয় সরকারের বিতর্কিত তিন কৃষি বিল (Farm Laws) প্রত্যাহার করা নিয়ে কী বললেন রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্না (Becharam Manna)? সিঙ্গুরে জমি আন্দোলন (Singur Land Movement) থেকেই উঠে এসেছিলেন এই তৃণমূল নেতা (TMC)।
'শুভ বুদ্ধির উদয় হয়েছে'। অনেক টালবাহানার পর, শুক্রবার বিতর্কিত তিন কৃষি বিল (Farm Laws) প্রত্যাহার করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তারপর, সিঙ্গুরে জমি আন্দোলন (Singur Land Movement) থেকে উঠে আসা তৃণমূল নেতা (TMC) তথা রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্না (Becharam Manna) এই বিষয়ে তাঁর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় এই কথাই জানালেন। তিনি আরও বলেন, জনগণই যে মূল শক্তি, তা এতদিনে বুঝতে পারলো কেন্দ্র। তবে, সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার (Samyukta Kishan Morcha) নেতাদের মতোই, তিনিও শুধু প্রধানমন্ত্রীর (PM Narendra Modi) মুখের কথায় আশ্বস্ত নন। বলেছেন, কেন্দ্র সত্য়ি সত্যি কৃষি আইন বাতিল না করা পর্যন্ত, তাঁদের কথা বিশ্বাস করছেন না তিনি।
২০২০ সালের অগাস্ট মাস থেকেই দিল্লি (Delhi) সীমান্তে আন্দোলন করছিলেন কৃষকরা। এক বছরের বেশি সময় ধরে আইন বাতিল করা হবে না, বলে বলেও, শেষ পর্যন্ত আইন বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে মোদী সরকার (Modi Govt)। মোদী সরকারের এই ব্যাকফুটে যাওয়াকে সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনের সময়ে সিপিএম সরকারের অবস্থায় সঙ্গে তুলনা করেছেন মন্ত্রী। সিঙ্গুরেও কৃষিজমি ফেরানোর জন্য দীর্ঘদিন ধরে বামফ্রন্ট সরকারের (Left Front Govt) বিপক্ষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) তথা তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বে লড়াই চালিয়েছিল কৃষকরা। শেষ বাম সরকারও জমি ফেরানো হবে না বলে জেদ ধরেছিল। শেষে সরকারেরই পতন ঘটে। জমি অবশ্য এখনও পাননি কৃষকরা।
আরও পড়ুন - Amarinder Singh-কৃষি বিল প্রত্যাহারকে সমর্থন, মোদীকে ধন্যবাদ অমরিন্দর সিংয়ের
আর পড়ুন - Farmer Law Repealed-সংগ্রামী কৃষকদের অভিনন্দন, বার্তা দিল জয় কিষাণ আন্দোলন
তবে, আন্দোলনের হাত ধরেই উঠে এসেছেন বেচারাম মান্নার মতো নেতা। এদিন সকালে প্রধানমন্ত্রী মোদী কৃষি বিল প্রত্যাহার করার ঘোষণা করার কিছু পরেই, সিঙ্গুরে তাঁর বসতবাড়ির কাছেই এক জমিতে কৃষকদের সঙ্গে ধান ঝাড়াইয়ের কাজে সামিল হন মন্ত্রী। তখন আর তাঁর শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ঘর বা গাড়ির আচ্ছাদন নেই। রোদের মধ্যেই শার্ট ও লুঙ্গি পরে এবং কাঁধে গামছা নিয়ে পাকা ধান ঝাড়তে দেখা যায় রাজ্যের শ্রমমন্ত্রীকে।
"
এর আগে ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে, দেশ জোড়া লকডাউনের মধ্যেই রাজ্য়ের কৃষকদের বঞ্চনা ও পরিয়াযী শ্রমিকদের দুরাবস্থার প্রতিবাদে, সিঙ্গুরে অবস্থান বিক্ষোভে বসেছিলেন বেচারাম মান্না। প্রতিবাদের অংশ হিসাবে নিজের মাথার চুলও কামিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। মুণ্ডিত মস্তকে, কৃষিকাজের বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে কৃষিজমিতেই এককী অবস্থান বিক্ষোভে বসেছিলেন তিনি।
মাঝে বাংলা বিধানসভা নির্বাচনেক আগে, কিছুটা বেসুরো হয়েছিলেন বেচারাম মান্না। সিঙ্গুরের বিভিন্ন দলীয় পদে বেচারাম-বিরোধী গোষ্ঠীর নেতাদের বসানোয়, ক্ষোভ জমেছিল তখনকার হরিপালের বিধায়কের মনে। ঘনিষ্ঠমহলে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফার দেওয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছিলেন বলে শোনা গিয়েছিল। পরে অবশ্য তাঁকে তৃণমূল ভবনে ডেকে পাঠিয়ে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করে ক্ষোভ প্রশমন করেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি (Subrata Bakshi)। আর তাতেই মত বদলেছিলেন বেচারাম। এখন অবশ্য তিনি নিজে সিঙ্গুরের বিধায়ক, তাঁর স্ত্রী করবী মান্নাও (Karabi Manna) বিধায়িকা হয়েছেন, স্বামীর ছেড়ে আসা হরিপাল (Haripal) আসন থেকে। কাজেই সিঙ্গুর তৃণমূলে এখন বেচারামই শেষ কথা।