সংক্ষিপ্ত
শতাব্দী প্রাচীন ডাকাত কালীর পুজোয় মায়ের স্বপ্নাদেশ মেনে সোনা-রুপোর অলংকার নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয় প্রতিবছর মুর্শিদাবাদে। সঠিক বছরের হিসেব নেই। তবে শতাব্দীপ্রাচীন ধরে মুর্শিদাবাদের ইসলামপুরের ডাকাত কালীর পুজোয় চলে আসছে এক অদ্ভুত নিয়ম।
শতাব্দী প্রাচীন ডাকাত কালীর পুজোয় মায়ের স্বপ্নাদেশ মেনে সোনা-রুপোর অলংকার (Gold and Silver ornaments) নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয় প্রতিবছর মুর্শিদাবাদে। সঠিক বছরের হিসেব নেই। তবে শতাব্দীপ্রাচীন ধরে মুর্শিদাবাদের ইসলামপুরের ডাকাত কালীর পুজোয় ( Kali Puja 2021 in Murshidabad ) চলে আসছে এক অদ্ভুত নিয়ম।
মায়ের গায়ে যাবতীয় মূল্যবান সোনা, রুপোর অলংকার নিয়ম করে বিসর্জন দেওয়া হয় নদীর জলে। পাকাপাকিভাবে তা পুনরায় তুলে এনে দ্বিতীয়বার দেবীর গায়ে ব্যবহার করা হয় না। অর্থাৎ প্রতি বছর যারা মনোস্কামনা পূর্ণ করতে মায়ের কাছে মানত করেন তাদের সেই মূল্যবান সোনা রুপোর গয়না সহ মা বিসর্জন যান নদীতে। আর এই সমস্ত কিছুই নিয়ম কেবলমাত্র গ্রামের উন্নতির জন্য স্বপ্নাদেশে হয়ে আসছে দেবী নির্দেশ মেনেই। আজও তা অপরিবর্তিত রয়েছে। এমন কয়েক শতাব্দী প্রাচীন ইংরেজ আমলের আগে থেকে চলে আসা ইসলামপুরের ঋষি পুর গ্রামের শ্যামা মায়ের পুজো ঘিরে উন্মাদনা চরমে। দূরদূরান্ত থেকে এমনকি ভিন রাজ্য থেকেও পুজোর রাতে দর্শনার্থীরা এখানে এসে হাজির হন মায়ের টানে। একসময় পুরো এলাকা জঙ্গলে পরিপূর্ণ থাকায় সেখানে রাজত্ব ছিল ডাকাতদের। মা কালীর পুজো করে তারা ডাকাতি করতে বের হতো। সেই ডাকাত দল আর নেই। জঙ্গল সাফ হয়ে গড়ে উঠেছে জনবসতি।
আরও পড়ুন, Dilip Ghosh-'কে কবে উপনির্বাচন জিতেছে, জিততেই দেবে না কাউকে', BJP-র হারে বিস্ফোরক দিলীপ
প্রাচীন প্রথা মেনে এই গ্রামে এখনও হয়ে আসছে ডাকাতদের আমলে শুরু হওয়া সেই কালীপুজো। মা জাগ্রত, মানত করে অনেকেরই ইচ্ছা পূরণ হয়। তাই দূর-দূরান্তের ভক্তরা এসে মাকে সোনা ও রুপোর গয়না দেন। কিন্তু সেই অলঙ্কার নেওয়ার অধিকার কারও নেই। মায়ের সঙ্গেই গ্রামের বিলে সোনা ও রুপোও ভাসিয়ে দেওয়া হয়।স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, পুজোর দিনে জেলার বাইরে থেকে শুরু করে বিহার, ঝাড়খন্ড, দিল্লি মুম্বাই থেকেও বহু পুণ্যার্থী আসেন। মনের ইচ্ছে পূরণের জন্য তাদের অনেকেই মায়ের কাছে সোনা, রুপোর অলঙ্কার মানত করেন। আবার কেউ মূর্তিও দেন। সেই কারণে প্রতি বছর এই মন্দিরে একাধিক মূর্তি পূজিত হয়। এবছর ২৪টি প্রতিমা পূজিত হবেন।
পুজোর আগে গ্রামে আত্মীয়রা আসতে শুরু করেছে। কাজের সূত্রে এলাকার অনেকেই বাইরে থাকেন। তাঁরাও এইসময় বাড়ি ফিরছেন। অমাবস্যায় সারারাত মন্দির চত্বরে পুরো গ্রাম রাত কাটায়। পুজোর নিয়মের কোনও হেরফের হয় না। গ্রামের বাসিন্দা বিমল দাস, তপন সাহা বলেন, এই পুজো কবে থেকে শুরু হয়েছে তা নির্দিষ্টভাবে কেউই বলতে পারবে না। তবে পূর্বপুরুষদের কাছে শুনেছি, ডাকাতরাই এই পুজো শুরু করেছিল। তখন জঙ্গলের ভিতর একটু ফাঁকা জায়গায় মায়ের পুজো হতো। পরে মন্দির করা হয়। মায়ের কাছে পুজো দিয়ে অনেকেরই ইচ্ছে পূরণ হয়েছে। সোনা-রুপোর অলঙ্কার দেওয়ার পাশাপাশি এখানে অনেকেই ইচ্ছেপূরণ হলে মূর্তি দেন। মূল মায়ের মূর্তি বড় হয়। বাকিগুলির উচ্চতা কম হয়। মাকে সোনা ও রুপোর অলঙ্কার দিয়ে সাজানো হয়। অনেক জায়গায় বিসর্জনের আগে গয়না খুলে রাখা হয়। কিন্তু এখানে তা হয় না।
আরও দেখুন, বিরিয়ানি থেকে তন্দুরি, রইল কলকাতার সেরা খাবারের ঠিকানার হদিশ
আরও দেখুন, কলকাতার কাছেই সেরা ৫ ঘুরতে যাওয়ার জায়গা, থাকল ছবি সহ ঠিকানা
আরও দেখুন, মাছ ধরতে ভালবাসেন, বেরিয়ে পড়ুন কলকাতার কাছেই এই ঠিকানায়
আরও পড়ুন, ভাইরাসের ভয় নেই তেমন এখানে, ঘুরে আসুন ভুটানে