সংক্ষিপ্ত
উৎসব উপলক্ষ্যে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। আগামী কয়েক দিন ধরে নাম সংকীর্তন করা হবে। তার সঙ্গে শ্রীকৃষ্ণ ও মহাপ্রভুর জীবন নিয়ে রচিত পালাগান অনুষ্ঠিত হবে।
জমজমাট রাত্রি। বৃহস্পতিবার সপ্তাহব্যাপী শুরু হওয়া প্রায় ৪৫০ বছরের পুরোনো গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর (Chaitanya Mahaprabhu) খেতুর উৎসবে (Khetur Utsab) মেতে উঠেছে মুর্শিদাবাদের (Murhsidabad) বেগমগঞ্জ শহর। সাড়ম্বরে যাবতীয় রীতি-নীতি মেনে ও করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধের (Corona Restriction) কথা মাথায় রেখেই বেগমগঞ্জের বড় গোবিন্দবাড়িতে প্রাচীন ঐতিহ্য অনুযায়ী অধিবাস অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কয়েক শতাব্দী পুরনো এই উৎসব শুরু হল।রু হল।
উৎসব উপলক্ষ্যে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। আগামী কয়েক দিন ধরে নাম সংকীর্তন করা হবে। তার সঙ্গে শ্রীকৃষ্ণ ও মহাপ্রভুর জীবন নিয়ে রচিত পালাগান অনুষ্ঠিত হবে। প্রতি বছর উৎসবের দিনগুলিতে মন্দিরের সামনে রাস্তার দু’ধারে মেলা (Mela) বসে। কিন্তু, এবার তা আর হয়নি। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে তা বন্ধ রাখা হয়েছে। মন্দির কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু বেগমগঞ্জ এলাকার বাসিন্দারাই নন, পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলি থেকেও বহু মানুষ ও এমনকী ভিন জেলার পাশাপাশি কলকাতা থেকেও বহু মানুষ খেতুর উৎসবে যোগ দিতে আসেন।
আরও পড়ুন- 'সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছাড়লাম', এইমস থেকে ছুটি পেয়ে টুইটারে চিকিৎসকদের ধন্যবাদ রাজ্যপালের
আরও পড়ুন- টি-২০ বিশ্বকাপ চলাকালীনই বেটিং চক্রের পর্দাফাঁস বর্ধমানে, গ্রেফতার ৩
গত বছর করোনার কারণে হাতে গোনা কয়েকজন ভক্ত এই উৎসবে সামিল হয়েছিলেন। কিন্তু, চলতি বছরে করোনা পরিস্থিতি আগের থেকে অনেকটাই ভালো। আর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার ফলে কয়েকদিন ধরেই এখানে ভক্ত সমাগম বাড়বে। এই উৎসব প্রসঙ্গে মন্দিরের সেবাইত চিদানন্দ স্বামী জানান, "এই খেতুর উৎসব বহু প্রাচীন। এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে একাধিক কাহিনি। বর্তমান বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার খেতুর গ্রামের রাজ পরিবারে ১৫৩১ খ্রিস্টাব্দে জন্ম নরোত্তম ঠাকুরের। তার বাবা জমিদার কৃষ্ণনন্দ দাস, মা নারায়নী রাণী। কিন্তু, ছোট থেকেই সংসার জীবনের প্রতি তাঁর কোনও টান ছিল না। তাই অল্প বয়সেই সন্ন্যাস নিয়ে গৃহত্যাগ করেন। তারপর তিনি বৃন্দাবনে যান। সেখানে গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। এরপর গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর থেকে দীক্ষা নেওয়া লোকনাথ গোস্বামীর কাছ থেকে শিষ্যত্ব নেন। এবং গুরুর নির্দেশে মহাপ্রভুর নাম প্রচারের উদ্দেশ্যে বেগমগঞ্জে আসেন। বেগমগঞ্জে মন্দির স্থাপন করে মহাপ্রভুর বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেন। সেই বিগ্রহ প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই প্রাচীন রীতিনীতি মেনে আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই খেতুর উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আজও নিষ্ঠা ভরে সেই উৎসব পালন করা হয়।"
আরও পড়ুন- উপনির্বাচনের আগে বদলি করা হোক কোচবিহারের জেলাশাসক ও এসপিকে, কমিশনে আবেদন বিজেপির
এই উৎসব প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা শুক্লা দাস, স্বপন ঘোষ বলেন, "বাপ ঠাকুরদার সময় থেকে মহাপ্রভুর এই খেতুর উৎসব দেখে আমরা বড় হয়ে উঠেছি। এই উৎসবের গুরুত্বই আলাদা। তবে করোনার জন্য এখন আগের মতো এখানে সমাগম হয় না। মেলাও বসছে না দু'বছর।"