সংক্ষিপ্ত
এবছর কালবৈশাখীর আশায় শহর থেকে শহরতলি থাকলেও, বিশেষ লাভ নেই। এখন এই গরমকে সঙ্গী করে চলতে হবে বেশ কয়েকটা দিন।
চড়চড়িয়ে বাড়ছে গরম, কিন্তু দেখা নেই কালবৈশাখীর। যা সাময়িক হলেও স্বস্তি দেয় রোদে পুড়ে যাওয়া বাংলাকে। পরিস্থিতি নিয়ে আবহবিদ সুজীব করের সঙ্গে কথা বলেছিল এশিয়ানেট নিউজ বাংলা। তিনি জানালেন এবছর সত্যিই কম পরিমণে হলবে কালবৈশাখী। অন্যান্য বছরে যতগুলি কালবৈশাখী পায় চৈত্র মাস, তার তুলনায় এবার সংখ্যাটা উল্লেখযোগ্য ভাবে কম। আবহবিদ জানান এর মূল কারণ বঙ্গোপসাগরে জলের ওপরের স্তরের তাপমাত্রার বৃদ্ধি
আবহবিদ সুজীব কর জানান এবছর কালবৈশাখীর আশায় শহর থেকে শহরতলি থাকলেও, বিশেষ লাভ নেই। এখন এই গরমকে সঙ্গী করে চলতে হবে বেশ কয়েকটা দিন। বঙ্গোপসাগর যতদিন স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে আসছে, ততদিন পর্যন্ত এই গরম চলবে এবং ছোটনাগপুর মালভূমিতে নিম্নচাপ তৈরি না হলে রাজ্যে কালবৈশাখীও তৈরি হবে না।
সুজীব কর আরও জানান এবছর রাজ্যে মরসুমি বৃষ্টির পরিমাণও বেশ কম হবে। শুধু বাংলা নয়, সংলগ্ন বিহার, ঝাড়খন্ডসহ উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব, হরিয়ানাতে পরিস্থিতিও একই থাকবে। এই রাজ্যগুলিতে বৃষ্টির পরিমাণ বেশ কম হবে। এর মূল কারণ রাজস্থানে এখনও পর্যন্ত কোনও নিম্নচাপ তৈরি হয়নি। নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে মধ্যপ্রদেশে। যে কারণে মৌসুমী বায়ু ওডিশা ও অন্ধ্রপ্রদেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মধ্যপ্রদেশে প্রবেশ করে যাবে। ফলে বাংলা বা এই রাজ্যগুলি সারা বছর যে বৃষ্টিপাত পাবে, তা নিম্নচাপের ফলে তৈরি হওয়া বৃষ্টিপাত, মরসুমি বৃষ্টিপাত নয়।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ জানাচ্ছেন এই পরিস্থিতির ফলে ভারতের এক বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে খরা হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। এই বছর রেকর্ড পরিমাণে বৃষ্টিপাত কম হওয়ার ঘটনাও প্রথম ঘটছে বলে জানান তিনি।
এদিকে, এর আগে কখনও কলকাতা বা দক্ষিণবঙ্গে সব জেলা এত গরম প্রত্যক্ষ করেনি। সেদিক থেকে ২০২৩ সালে রেকর্ড গরম পড়েছে বলাই যায়। তারওপর এবছর কালবৈশাখীর পরিমাণও কম হবে, ফলে এই তাপমাত্রা থেকে স্বস্তি পাওয়ার আপাতত কোনও সম্ভাবনা নেই। বরং এপ্রিল মাসের ২১ তারিখ পর্যন্ত দাপুটে ব্যাটিং চালাবে তাপমাত্রার পারদ। সবমিলিয়ে গরম হলকা বের হচ্ছে হাওয়া থেকে। কলকাতা ও শহরতলী জুড়ে তাই হাওয়া বইলেও, তাতে স্বস্তি নেই।
জানা গিয়েছে এই পরিস্থিতি পুরোপুরি তৈরি হয়েছে উত্তর বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপের জন্য। যে শুষ্ক বাতাস রাজ্যে প্রবেশ করছে, তাতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ অত্যন্ত কম। যেখানে রাজ্যের বাতাসে আর্দ্রতা থাকার কথা ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ, সেখানে এখন জলীয় বাষ্পের পরিমাণ মাত্র ৬০ শতাংশের আশেপাশে।