Demise of Prafulla Roy: বাংলা সাহিত্যের ভাঁড়ার থেকে এক এক করে মূল্যবান ব্যক্তিত্ব মুছে যাচ্ছেন। সর্বশেষ সংযোজন বিখ্যাত সাহিত্যিক প্রফুল্ল রায়। বৃহস্পতিবার তিনি প্রয়াত হয়েছেন। এই খবরে সাহিত্য-সংস্কৃতি জগতে শোকের ছায়া।

Eminent Bengali writer Prafulla Roy: স্বাধীনতার আগে অবিভক্ত ভারতে জন্মানো যে সাহিত্যিকরা লেখনীর গুণে দিকপাল হয়ে উঠেছেন, তাঁদের অন্যতম একজনের কলম থেমে গেল। বৃহস্পতিবার দীর্ঘ রোগভোগের পর প্রয়াত হলেন প্রখ্যাত সাহিত্যিক প্রফুল্ল রায় (Prafulla Roy)। তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত উপন্যাস 'কেয়াপাতার নৌকো' (Keya Patar Nauko)। বৃহস্পতিবার ৫ আষাঢ় তিনি যখন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন, তখনও বৃষ্টি পড়ছে। সারা বাংলার নদ-নদী ফুলেফেঁপে উঠেছে। ঢাকায় জন্মানো এই সাহিত্যিক বরাবরই প্রকৃতির সঙ্গে মিলে-মিশে থাকতেন। ভরা বর্ষায় সেই প্রকৃতিতেই তিনি বিলীন হয়ে গেলেন। তবে তিনি সশরীরে আর না থাকলেও, তাঁর রচনাগুলি অমর হয়ে থাকল। লেখার মাধ্যমেই ভবিষ্যৎ প্রজন্ম চিনবে তাঁকে। এই সাহিত্যিকের প্রয়াণে সব প্রজন্মের সাহিত্যপ্রমী মানুষের মনেই বিষাদের ছায়া।

৯১ বছর বয়সে প্রয়াত সাহিত্যিক

১৯৩৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর অবিভক্ত ভারতের ঢাকায় জন্ম হয় প্রয়াত সাহিত্যিকের। দেশভাগের যন্ত্রণা নিয়ে তাঁকেও পূর্ব পাকিস্তান ছেড়ে ভারতে চলে আসতে হয়। তাঁর লেখায় বরাবরই তৎকালীন পূর্ববঙ্গের প্রকৃতি, সংস্কৃতি, মানুষের জীবনযাপন, সখ্য, সাম্প্রদায়িক হিংসা, হানাহানি উঠে এসেছে। শুধু কলকাতা বা পশ্চিমবঙ্গই নয়, ভারতের অন্যান্য রাজ্যেও দীর্ঘদিন থেকেছেন এই প্রখ্যাত সাহিত্যিক। তিনি নাগাল্যান্ডের বিভিন্ন উপজাতির মানুষের দৈনন্দিন সমস্যা, বিহারে তথাকথিত নিচু জাতের মানুষের উপর উঁচু জাতের অত্যাচারের সাক্ষী থেকেছেন। এই অন্যায়-অবিচার-শোষণ তাঁকে যন্ত্রণা দিয়েছে। লেখায় তা ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি। ১৯৫৬ সালে তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘পূর্ব পার্বতী’ লেখা নাগাল্যান্ডে বসে। পূর্ববঙ্গে দেশভাগকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক হানাহানির কথা উঠে এসেছে ‘কেয়াপাতার নৌকো’ উপন্যাসে। এছাড়া ‘উত্তাল সময়ের ইতিকথা’, ‘নোনা জল মিঠে মাটি’ উপন্যাসেও দেশভাগের যন্ত্রণা ফুটিয়ে তুলেছেন প্রফুল্ল রায়।

শোকপ্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর

প্রফুল্ল রায়ের প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তিনি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে লিখেছেন, 'বর্ষীয়ান কথাসাহিত্যিক প্রফুল্ল রায়ের মৃত্যুতে আমি গভীর শোক জ্ঞাপন করছি। প্রফুল্ল রায় জন্মেছিলেন পূর্ববঙ্গে এবং পরবর্তীকালে তাঁর নানা বিখ্যাত গ্রন্থে উদ্বাস্তু জীবনের যন্ত্রণা ফুটে উঠেছিল। 'কেয়াপাতার নৌকো' তাঁর কালজয়ী উপন্যাস। নানাসময়ে একাধিক সংবাদপত্র-পত্রিকা গোষ্ঠীর সঙ্গেও তিনি ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন এবং বাংলা সাহিত্যের আঙিনায় স্থায়ী জায়গা পেয়েছেন। ২০১২ সালে আমরা তাঁকে একটি বিশেষ পুরস্কার দিতে পেরেছিলাম। আমি তাঁর পরিবার ও অগণিত পাঠকের প্রতি আমার সমবেদনা নিবেদন করছি।'

Scroll to load tweet…

আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।