সংক্ষিপ্ত
রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলিতে থ্রেট কালচারের নামে নিজেদের অপছন্দের ইন্টার্ন এবং পিজিটিদের হাসপাতাল থেকে সরিয়ে দিতে তৎপর হলেন আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ।
রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলিতে থ্রেট কালচারের নামে নিজেদের অপছন্দের ইন্টার্ন এবং পিজিটিদের হাসপাতাল থেকে সরিয়ে দিতে তৎপর হলেন আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ।
তাদের মধ্যে আবার কেউ কেউ আবার নিজের ব্যক্তিগত রাগ ও অপছন্দ মেটাতে তথাকথিত থ্রেট কালচারের অভিযোগ এনে সরকারি চিকিৎসা পরিকাঠামোর বাইরে পাঠানোরও চেষ্টা করছে। অধিকাংশক্ষেত্রেই আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের তরফ থেকে নানা ধরনের মিথ্যা অভিযোগ এনে হাসপাতালে নিজেদের দখলদারি-রাজ চালানোরও পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে দাবি।
যারা আরজি কর ইস্যু নিয়ে স্বাস্থ্যভবনের সামনে ধরনায় যাননি এবং অনিকেত দেবাশিসদের হাতের পুতুল হয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনও কথা বলেননি, তাদেরকেই মূলত বেছে বেছে টার্গেট করা হচ্ছে বলে অভিযোগ এসেছে।
গোটা বিষয়টি নিয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে আতঙ্কিত পিজিটি-ইন্টার্নদের অনেকেই অভিযোগ করেছেন বলে জানা যাচ্ছে। আর এরপরেই মঙ্গলবার রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য থ্রেট কালচারের নাম করে এভাবে পিজিটি-ইন্টার্নদের বেছে বেছে হাসপাতাল-হোস্টেল থেকে বের করে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের মেডিক্যাল শিক্ষা অধিকর্তাকে বিশেষ নজরদারি চালাতে নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি জানিয়েছেন, “তথাকথিত থ্রেট কালচারের (Threat Culture) নামে যে সমস্ত জুনিয়রদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে, সেগুলি যথাযথভাবে তদন্ত করে দেখুন। অভিযোগকারীর ব্যক্তিগত অপছন্দ বা রাগ মেটাতে করা মিথ্যা অভিযোগের জেরে কেউ যেন শাস্তি না পায়। গ্রাম এবং জেলা থেকে অনেক পরিশ্রম করে মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনা করে এমবিবিএস সম্পূর্ণ করে ইন্টার্ন-পিজিটি হয়েছেন। এখন হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করছে। আচমকা একটা অভিযোগ পেয়ে হোস্টেল থেকে বের করে দিলে তারা কোথায় যাবে? যদি সত্যিকারের কোনও অভিযোগ থাকে, নিশ্চয়ই তদন্ত করে পদক্ষেপ নিতে হবে। কিন্তু অকারণে মিথ্যা অভিযোগে যাতে শাস্তি না হয়, তা দেখতে হবে মেডিক্যাল কলেজগুলির প্রিন্সিপ্যাল ও সুপারদের।”
রাজ্য সরকারের নির্দেশে বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে তদন্ত কমিটি তৈরি করা হয়েছে। আর এরপরই ওই কমিটিতে বেছে বেছে কিছু পিজিটি ও ইন্টার্নের বিরুদ্ধে থ্রেট কালচারের অভিযোগ জমা দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট এসেছে, ওই অভিযোগগুলির অধিকাংশই ভুয়ো এবং তথাকথিত আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের মস্তিষ্কপ্রসূত।
কারণ, যাদের ওই জুনিয়র ডাক্তাররা পছন্দ করেন না অথবা ব্যক্তিগত কোনও রাগ-ঝাল মেটাতে গিয়ে মিথ্যা অভিযোগ জমা দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন, “গোটা বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। তথাকথিত থ্রেট কালচারের নামে মেডিক্যাল কলেজগুলিতে কুৎসিত-ঘৃণ্য চক্রান্ত শুরু হয়েছে। যাদের অপছন্দ করেন এবং গত দেড় মাসে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেনি, বেছে বেছে সেই সমস্ত পিজিটি-ইন্টার্নদের টার্গেট করা হচ্ছে। জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ হাসপাতালে নিজেদের রাজত্ব কায়েম করতে ওই ডাক্তারদের হোস্টেল থেকে বের করে দিতে চাইছে।”
তিনি আরও যোগ করেছেন, “কারও ব্যক্তিগত পছন্দ ও অপছন্দের জন্য থ্রেট কালচারের নামে অন্য একজন জুনিয়র ডাক্তারকে কেন অকারণে শাস্তি পেতে হবে? দেখতে হবে কেউ যেন কারও মিথ্যা অভিযোগে চিকিৎসা জগতে শাস্তি না পান। প্রকৃত দোষীরা অবশ্যই শাস্তি পাক। এটা সাধারণ মানুষও চায়।”
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।