সংক্ষিপ্ত
পঞ্চায়েত ভোট দেখতে শনিবার সকালে রাজভবন থেকে বেরিয়ে ছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সন্ধ্যায় রাজভবনে ফিরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রাজনৈতিক হিংসার সমালোচনা করলেন।
রাজ্য জুড়ে শনিবার হিংসায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল পরিস্থিতি। একের পর এক রক্তপাত, প্রাণহানি, বন্দুক, গুলি আর কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের ভারী বুটের শব্দ ছাপিয়েই শনিবার ৮ই জুলাই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট চলল। যাবতীয় অভিযোগ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে। তাদের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে রয়েছে একাধিক প্রশ্ন।
এদিন পঞ্চায়েত ভোট দেখতে শনিবার সকালে রাজভবন থেকে বেরিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সন্ধ্যায় রাজভবনে ফিরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রাজনৈতিক হিংসার সমালোচনা করলেন। শনিবার সকালে রাজভবন থেকে বেরিয়ে প্রথমে সড়কপথে উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুর লাগোয়া পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতে গিয়েছেন তিনি। এর পর যান বারাসতে। কদম্বগাছিতে শুক্রবারের সংঘর্ষস্থলে। সেখানে নির্দল প্রার্থী তসলিমা বিবির সমর্থক গুলিবিদ্ধ আবদুল্লার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন তিনি।
বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচন দর্শনের অভিজ্ঞতা সংক্রান্ত রিপোর্ট তিনি কেন্দ্রের কাছে পাঠাবেন বলে জানিয়েছেন রাজ্যপাল বোস। কিন্তু সেই রিপোর্টে কি কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ থাকবে? সরাসরি প্রশ্নের জবাব দেননি তিনি। বলেছেন, ‘‘রাজ্যপালের যা কাজ, সেটাই করব।’’
একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত শাসক ও বিরোধী মিলিয়ে ১১ জনের প্রাণ গেল। পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণার পর থেকে যে সন্ত্রাস শুরু হয়েছিল তা অব্যাহত রইল ভোটের দিনও। শনিবার সকাল থেকে বোমা গুলিতে উত্তপ্ত হয়ে ছিল গণতন্ত্রের উৎসবমঞ্চ। পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণার পর থেকে এপর্যন্ত ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। মালদা, মুর্শিদাবাদ, কোচবিহার -সহ রাজ্যের একাধিক এলাকায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
এদিন বারাসত হাসপাতালে সংঘর্ষে আহতদের দেখতে গিয়ে, রাজ্যপাল পঞ্চায়েত ভোটে হিংসার নিন্দা করে বলেন, ‘‘নাগরিকেরা যাতে নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, তা প্রশাসনের নিশ্চিত করা উচিত। লড়াইটা বুলেটের নয়, ব্যালটের। আজ গণতন্ত্রের পবিত্র দিন। এক জনের মৃত্যুও কাম্য নয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় তা হচ্ছে।’’
উল্লেখ্য, শনিবার বাংলা জুড়ে হিংসার তান্ডব চলল। কোথাও চলছে দেদার ছাপ্পা ভোট, কোথাও ১ ঘণ্টাতেই ভোটগ্রহণ শেষের পরিস্থিতি, কোথাও লুঠ হয়ে গিয়েছে ব্যালট। পঞ্চায়েত ভোটগ্রহণে বেনজির সন্ত্রাস, রক্তপাত আর আতঙ্কে দীর্ণ গ্রামবাংলার জনমত। অশান্তি কিছুতেই থামেনি না পশ্চিমবঙ্গের জেলায় জেলায়। অশান্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য ৮ জুলাই, নির্বাচন শুরু হওয়ার পরেই রাজভবন থেকে বেরিয়ে যান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।