সংক্ষিপ্ত
আদালত জানিয়েছে সংসারে স্ত্রীর চেয়ে স্বামীর আসন উচ্চ নয়। মর্যাদায় তাঁরা দু'জনেই সমান সমান। দু'জনের সমান প্রচেষ্টায় সংসার সুখের হয়। হাই কোর্টের বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এবং বিচারপতি মধুরেশ প্রসাদের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়।
দাম্পত্য কলহ থেকে মুক্তি এবং সাংসারিক সমস্যার সমাধান চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এক যুবক। তিনি তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে হেনস্থা, শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ জানান। যুবকের দাবি, শুধু তাঁকেই নয়, তাঁর মাকেও শারীরিক ভাবে নির্যাতন করেন তাঁর স্ত্রী। এদিকে পাল্টা স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করার অভিযোগও জানিয়েছেন স্ত্রী। স্বামী এবং স্ত্রী দু'জনেই আদালতে পৃথক মামলা করেছিলেন। এই মামলায় স্বামীর আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আদালত।
আদালত জানিয়েছে সংসারে স্ত্রীর চেয়ে স্বামীর আসন উচ্চ নয়। মর্যাদায় তাঁরা দু'জনেই সমান সমান। দু'জনের সমান প্রচেষ্টায় সংসার সুখের হয়। হাই কোর্টের বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এবং বিচারপতি মধুরেশ প্রসাদের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। বিচারপতির মন্তব্য, ''ভারতের সংবিধানেও লিঙ্গসাম্যকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তাই স্বামীকে উঁচু আসনে বসিয়ে রাখা যাবে না।'' আদালতে দাম্পত্যের অধিকার পুনরুদ্ধারের আবেদন জানিয়েছিলেন যুবকের স্ত্রী। তাঁর আবেদনটি গৃহীত হয়েছে।
আদালতের আরও বক্তব্য, ''স্বামীকে স্ত্রীর চেয়ে উঁচু আসনে বসিয়ে রাখা সমাজের একটি প্রাচীন রীতি ছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা বিলোপ পেয়েছে। ভিন্ন পরিবেশে গড়ে ওঠা দু'জন মানুষের সমান দায়িত্ব দাম্পত্যে সুখ বজায় রাখার। এটি একমুখী হতে পারে না কখনওই।'' স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে রোজকার জীবনে ঝগড়া হতেই পারে। কিন্তু সেই ছোটখাটো বিষয়ে ঝগড়া মিটিয়ে নেওয়াও তাঁদের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে বলে মনে করেছে আদালত।
এই মামলায় সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ''স্বামীকে স্ত্রীর চেয়েও উচ্চ আসনে বসিয়ে রাখা অনুচিত। সুখী দাম্পত্যের অনুকূল পরিবেশ গঠনে উভয়ের ভূমিকা সমান গুরুত্বপূর্ণ। স্ত্রী সংসারের মেজাজ ধরে রাখেন, স্বামী সেই অনুযায়ী একের পর এক দৃশ্য তৈরি করে চলেন। এঁদের কেউ অবহেলার পাত্র নন।''
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।