সংক্ষিপ্ত
বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত সবকিছু স্বাভাবিক ছিল। একটি চাদর গায়ে ঢেকে শুয়েও পড়েছিলেন তিনি। তিনি আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিহত মহিলা জুনিয়ার ডাক্তার। দিনভর ধকলের পরে ঘুমের দেশে পাড়ি দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই ঘুম আর ভাঙল না কোনও দিনও। তবে তাঁর হত্যার তদন্তে পুলিশের কাছে স্পষ্ট কেমন ছিল তাঁর নৃশংস মৃত্যের আগের কয়েক ঘণ্টা।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মহিলা চিকিৎসকরে খুন ও ধর্ষণ করা হয়েছে। তবে কতজন সেই ঘটনায় সামিল ছিল তা এখনও স্পষ্ট নয়। ইতিমধ্যেই মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাসপাতালেরই কয়েকজনকে সোমবার ডেকে পাঠিয়েছিল কলকাতা পুলিশ। সূত্রের খবর তাদের জেরা করে কলকাতা পুলিশের তদন্তকারীরা নিহত মহিলার শেষ কয়েক ঘণ্টার একটি ব্লুপ্রিন্ট তৈরি করেছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, রাত ১১টা পর্যন্ত ডিউটি দিয়েছিলেন মহিলা জুনিয়ার ডাক্তার। তারপকই খাওয়া দাওয়া করে সহকর্মীদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে তিনি চলে যান সেমিনার হলে। সেখানেই পড়াশুনা আর বিশ্রাম নেওয়ার কথা ছিল। সূত্রের খবর পড়াশুনা শুরুও করেছিলেন। এক রোগী সংক্রান্ত তথ্য জানার জন্য এক চিকিৎসক তাঁর কাছে আসেন। সেই বিষয়ে কথা বলার পরে জুনিয়ার ডাক্তার চলে গেলে মহিলা চিকিৎসক পড়াশুনা শুরু করে দেয়।
পুলিশ সূত্রের খবর রাত ২টোর সময় মহিলার মোবাইলে একটি মেসেজ আসে. সেটি করেছিল তার পাড়াতুতো বোন। কিন্তু তিনি সঙ্গে সঙ্গেই মেসেজের কোনও উত্তর দেননি। রাত ২টো ৩৫ নাগাদ উত্তর দিয়েছিলেন। পুলিশের অনুমান এপর্যন্ত সব ঠিক ছিল।
রাত ৩টো সেমিনার হলেই হাসরাতালের এক কর্মী গিয়েছিল। তখন সেই কর্মী সেখানে লাল কম্বল গায়ে দিয়ে জুনিয়ার চিকিৎসককে শুয়ে থাকতে দেখেছিল। তবে কর্মী কিছু না বলেও চলে যায়। পুলিশের অনুমান রাত ৩টে পর্যন্ত সব ঠিকঠাক ছিল। তারপরই রাতের অন্ধকারে সকলের অলক্ষ্যে হাসপাতালে ঢোকে মূল অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার। তারপরই সব ওলটপালট করে দেয়।
সকালে আরজি কর হাসপাতালে জুনিয়ার ডাক্তাদের দেহ উদ্ধার হয়। কিন্তু সেই সময় মহিলার গায়ে লাল কম্বল ছিল না। পরনে ছিল গোলাপি রঙের একটি কামিজ। নিম্নাঙ্গে কোনও পোশাক ছিল না। মুখের মাক্সটি পড়ে ছিল অনেকটা দূরে। মাথার কাছেই পাওয়া গিয়েছিল মৃতার ল্যাপটপ। সেটি বন্ধ ছিল। তার ওপর ছিল একটি ডায়েরি আর মৃতের মোবাইল ফোনটি। মাথার কাছে প্ল্যাস্টিকের জলের বোতল বন্ধ অবস্থায় উল্টে পড়েছিল।
তদন্তকারী সূত্রের খবর সেমিনার হলে যেতে হলে লিফট ব্যবহার করতে হয়। লিফটের মাথায় রয়েছে সিসিটিভি। তাই সেই ঘরে সেইদিন রাতে যারা যারা গিয়েছিল প্রত্যেককেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কিন্তু সেখান থেকে কোনও অস্বাভাবিক তথ্য পাওয়া যায়নি। তিনজনই নিজেদের নির্দিষ্টকাজেই সেমিনার হলে গিয়েছিল। অন্যদিকে অন্য দিকে, সোমবার আরজি-কর কাণ্ডের তদন্তের মোড় অন্য দিকে ঘোরার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। পুলিশ দাবি করছে, মৃতার শরীরের কোনও হাড় ভাঙা নেই। যদিও শরীরের উপরিভাগে ক্ষত রয়েছে। যদিও গতকাল পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছিল প্রাথমিক ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে মহিলার ঘাড়ের একটি হাড় ভাঙা অবস্থায় পাওয়া গেছে। আর অবশ্য সম্পূর্ণ উল্টো কথাই বলছে পুলিশ সূত্র।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।