সংক্ষিপ্ত
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে নিয়ে করা অখিল গিরির মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বলেন এজাতীয় মন্তব্য তিনি সমর্থন করেন না।
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে নিয়ে অখিল গিরির মন্তব্য সমর্থন করে না তৃণমূল কংগ্রেস। আগেই দলের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেখানে থেমে না থেকে সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়ে দিলেন রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে এজাতীয় মন্তব্য তিনি সমর্থন করেন না। বিধায়কের হয়ে তিনি ক্ষমা চাইছেন বলেও জানিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, 'রাষ্ট্রপতি খুবই ভাল মহিলা। অখিল অন্যায় করেছেন। আমি ধিক্কার জানাচ্ছিস।' একই সঙ্গে তিনি তৃণমূল বিধায়কের হয়ে ক্ষমা চাইছেন বলেও জানিয়ে দেন। একই সঙ্গে এজাতীয় মন্তব্য তাঁর দলের নেতা করার জন্য তিনি দুঃখপ্রকাশও করেছেন।
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে নিয়ে অখিল গিরির করা মন্তব্য রীতিমত উত্তাল রাজ্যরাজনীতি। গত শুক্রবার অর্থাৎ নন্দীগ্রাম দিবসের দিনে অখিল গিরি রাষ্ট্রপতির উদ্দেশ্যে কুরুচিকর মন্তব্য করেন। তিনি একটি জনসভাতে বলেন, 'বলে দেখতে ভাল নয়, কী রুপসী! কী দেখতে ভাল! আমরা রূপের বিচার করি না। তোমার রাষ্ট্রপতির চেয়ারকে আমরা সম্মান করি। কিন্তু তোমার রাষ্ট্রপতিকে কেমন দেখতে বাবা?' অখিল গিরি জানিয়েছেন বিজেপি নেতা তথা নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীকে উদ্দেশ্য করেই তিনি এজাতীয় মন্তব্য করেছেন। শুভেন্দু তাঁকে বারবার নিশানা করেছিল। বলেছিল, কাকের মত দেখতে। হাফমন্ত্রী- এজাতীয় মন্তব্য মেজাজ হারিয়ে তিনি এই কথা বলেছেন বলেও জানিয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, তিনি নিজে সংবিধানের লোক। রাষ্ট্রপতির চেয়ারকে তিনি সম্মান করেন। তিনি রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে অসম্মান করতে চাননি বলেও দাবি করেছেন। বলেছেন রাগের বশে মুখ ফসকে এজাতীয় মন্তব্য বেরিয়ে গেছে।
তবে অখিল গিরির এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে রীতিমত সরব হয়েছে বিজেপি। সুদূর দিল্লিতে অখিল গিরির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তাঁকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ারও দাবি তুলেছে বিজেপি। পাল্টা তৃণমূলও জানিয়েছে এজাতীয় মন্তব্য দল সমর্থন করে না। তাঁর পাশে দল নেই বলেও স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতেই বিজেপিকে দমানো যায়নি। মমতার বিরুদ্ধে আদিবাসী বিরোধী প্রচার শুরু করেছিলেন।
এই অবস্থায় এদিন দলের হয়ে ড্য়ামেজ কন্ট্রোলে নামলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থি হয়ে মমতা জানিয়ে দেন, 'আমরা রাষ্ট্রপতিতে সম্মান করি। আমি রাষ্ট্রপতিকে পছন্দ করি। দল এজাতীয় মন্তব্য সমর্থন করে না।' তিনি আরও বলেছেন। আগামী দিনে যাতে আর কেউ এজাতীয় মন্তব্য না করে তার জন্য সতর্ক থাকতে হবে। তবে অখিল গিরির হয়ে ক্ষমা চেয়ে নেওয়ার পরেই মমতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে সুর চড়ান। রাজ্যের বিধায়ক বীরবাহা হাঁসদাকে নিয়ে শুভেন্দুর মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, বীরবাহা আদিবাসী পরিবারের মেয়ে। সংস্কৃতির সঙ্গে যোগ রয়েছে। তাঁকে যদি কেউ বলে জুতোর নিচে রাখতে - সেটাও তো কুরুচিকর মন্তব্য। তিনি আরও বলেন মানুষের মনের ভিতরটা সুন্দর হওয়া উচিৎ। কারও কুরুচিকর মন্তব্য সমর্থন তিনি করেন না বলে জানিয়ে বলেন, বিজেপি যে ভাষায় কথা বলছে সেটাও ঠিক নয়।
আরও পড়ুনঃ
মোদীর ওপর অভিমান করে দল ছাড়লেন ৬ বারের বিধায়ক , বিজেপিতে 'চিড়' বিধানসভা নির্বাচনের আগেই
শুভেন্দু অধিকারীর মানসিক স্বাস্থ্য ভেঙে পড়েছে, তৃণমূল 'গেট ওয়েল সুন' লেখা কার্ড পাঠাবে বললেন কুণাল
'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকতে বাংলাভাগ হবে না', আবারও আশ্বস্ত করলেন তৃণমূল নেতা