সংক্ষিপ্ত
বিধাননগরে 'আশ্রয় প্রকল্পের' উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আসেন তিনি। সেখানেই ডিএ ইস্যু উত্থাপন হতেই মুখ খুললেন ফিরহাদ হাকিম।
'না পোষলে ছেড়ে দিন', মঙ্গলবার ডিএ নিয়ে কড়া বার্তা মহানাগরিকের। ডিএ আন্দোলন নিয়ে প্রকাশ্যেই সরব হলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এদিন আন্দোলনকারীদের সরাসরি তোপ দাগলেন ববি। তিনি এও বলেন,'কেন্দ্রীয় সরকার যখন টাকা দিচ্ছে তখন ওখানে গিয়েই কাজে যোগ দিন।' মঙ্গলবার বিধাননগরের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে প্রকাশ্য সভায় দাঁড়িয়ে ডিএ নিয়ে মুখ খুললেন মেয়র। এদিন বিধাননগরে 'আশ্রয় প্রকল্পের' উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আসেন তিনি। সেখানেই ডিএ ইস্যু উত্থাপন হতেই মুখ খুললেন ফিরহাদ হাকিম। ডিএ প্রসঙ্গে তিনি বলেন ,'যারা অনেক পায়, তাঁদের আরও পাইয়ে দেওয়াকে আমি পাপ বলে মনে করি। না পোষালে ছেড়ে দিন। কেন্দ্রীয় সরকার যখন টাকা দিচ্ছে তখন ওখানে গিয়েই কাজে যোগ দিন।'
এখানেই শেষ নয়। এদিন ফিরহাদ হাকিম বলেন,'ডিএ নিয়ে এখন অনেক কথা হচ্ছে। মানুষের কাছে কোনটা প্রায়োরিটি হওয়া উচিত? যারা অবহেলিত, বঞ্চিত তাঁদের বেশি পাইয়ে দেওয়া না যারা অনেক পাচ্ছে তাঁদের আরও পাইয়ে দেওয়া? না পোষালে ছেড়ে দিন। কেন্দ্রীয় সরকার যখন টাকা দিচ্ছে তখন ওখানে গিয়েই কাজে যোগ দিন।' ফিরহাদের সংযোজন,'আমি কোনও মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির বাবু নই। জনগনের ট্যাক্সের টাকা দিয়ে আমার মাইনে হয়। আমি মানুষের সেবা করার ব্রতই সবার আগে পালন করি।'
প্রসঙ্গত, ৩ শতাংশ বাড়তি ডিএ নিয়ে যে কোনওভাবেই সন্তুষ্ট নন কর্মীরা তা আগেই বুঝিয়েছিলেন। এবার কেন্দ্রীয় হারে এবং বকেয়া ডিএ-এর দাবিতে এবার লাগাতার কর্মবিরোতির ডাক দিয়েছিল সরকারি কর্মচারিদের। পাশাপাশি বিধানসভা অভিযানেরও ডাক দিয়েছিল আন্দোলনকারীরা। বর্ধিত ডিএ ঘোষণায় ক্ষোভ প্রশমের বদলে বরং আরও বেড়েছে অসন্তোষ। কেন্দ্রের যেখানে আরও চার শতাংশ ডিএ বৃদ্ধি করে এখন ডিএ দাঁড়িয়েছে ৪২ শতাংশে যেখানে রাজ্য সরকারের তিন শতাংশ বাড়িয়ে মাত্র ৬ শতাংশ ডিএ-এর ঘোষণাকে 'ভিক্ষা দেওয়ার মত' মনে করছে কর্মীরা। রাজ্যের এই ঘোষণাকে প্রত্যাখানও করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বকেয়া ডিএ-এর দাবিতে আন্দোলনের মাঝেই এবার আরও তিন শতাংশ মহার্ঘভাতার ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। এদিকে ১ জানুয়ারি ২০২৩ থেকে আরও চার শতাংশ ডিএ বৃদ্ধি করায় কেন্দ্রের ডিএ দাঁড়িয়েছে ৪২ শতাংশ-এ। সেখানে মাত্র তিন শতাং ডিএ বৃদ্ধি করে রাজ্য সরকারের ডিএ দাঁড়াল ৬ শতাংশে। রাজ্য সরকারের এই ঘোষণায় ক্ষোভ প্রশমিত তো হলই না বরং আরও বাড়ল ক্ষোভ। রাজ্যের সিদ্ধান্তকে ধিক্কার জানিয়েছে কর্মী সমাজ এই ডিএ 'ভিক্ষা দেওয়ার মতো' বলেও দাবি করেছেন তাঁরা। এমনকী এই ঘোষণাকে প্রত্যাখান করার কথাও বলেছেন তাঁরা। এই প্রসঙ্গে এশিয়ানেট নিজের তরফ থেকে আন্দোলনকারীদের একাংশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা স্পষ্টই জানিয়েছেন আন্দোলন চলবে। ষষ্ঠ বেতন কমিশন অনুযায়ী কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের ডিএ-র তফাত এখন ৩৫ শতাংশ। দিনে দিনে বাড়ছে এই তফাত। অন্যদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে পেন ডাউনের হুঁশিয়ারি আগেই দিয়েছিল সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। এই আবহে জানুয়ারি থেকে যে ডিএ দেওয়া যেত মার্চ মাসে এসে তা মাত্র তিন শতাং বৃদ্ধি করায় ক্ষোভে ফুঁসছেন সরকারি কর্মীরা। এই প্রসঙ্গে বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হান্ডার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানিয়েছেন জানিয়েছেন,'আমরা রাজ্য সরকারকে ধিক্কার জানাই। এই ডিএ ভিক্ষার সামিল বলে মনে করি। যতক্ষণ না সম্পূর্ণ ডিএ দেওয়ার ঘোষণা হবে ততক্ষণ আমরা মানছি না।' পাশাপাশি তিনি এও বলেন,'আমরা মনে করি রাজ্য সরকার আন্দোলনে ভয় পেয়েছে। সেই কারণেই এই তিন শতাংশ ডিএ বৃদ্ধি করেছে।'
আরও পড়ুন -
নিয়োগ দুর্নীতিতে নতুন নাম বিভাস অধিকারী, কলকাতা থেকে বীরভূম - রইল বিশাল সম্পত্তির হিসেব
'ওয়েটিং লিস্ট তো গঙ্গা জল নয়', গ্রুপ ডি-এর শূন্যপদে নিয়োগের ক্ষেত্রে কমিশনকে সতর্ক করল আদালত
তৃণমূল কংগ্রেসের টুইটার অ্যাকাউন্টে সাইবার হানা, রাতারাতি বদলে গেল নাম ও ছবি