West Bengal News: বঙ্গ বিধানসভার অধিবেশনে ধুন্ধুমার। মার্শাল ডেকে বিজেপি বিধায়কদের অধিবেশন কক্ষ থেকে বের করে দিলেন স্পিকার। তারপর কী হল? বিশদে জানতে সম্পূর্ণ প্রতিবেদন পড়ুন… 

কলকাতা: বঙ্গ বিধানসভায় ফের বেনজির ঘটনা। সৌজন্যে তৃণমূল বনাম বিজেপি। মার্শাল ডেকে BJP বিধায়কদের বিধানসভার অধিবেশন কক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, বিধানসভায় রীতিমত অত্যাচারের শিকার হন বিজেপির বিধায়করা। রীতিমত মাটিতে ফেলে মারধর করে সদন থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করে দেওয়া হয় বিধায়ক ড. শঙ্কর ঘোষ, অগ্নিমিত্রা পাল সহ আরও অন্যান্য বিধায়ককে। সাসপেন্ড করা হয় তাঁদের। যা নিয়ে সরব হয়েছেন বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদিকা এবং বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল।

বিধানসভার বাইরে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল বলেন, ''আজ বিধানসভা থেকে আমাকে সহ বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ, দীপক বর্মণ, মনোজ ওঁরাওকে মার্শাল ডেকে বের করে দেন স্পিকার। সদন থেকে টেনে হিঁচড়াতে হিঁচড়াতে বের করে দেওয়া হয়। এই অধিবেশনের শেষদিন অবধি আমাদের সাসপেন্ড করা হয়েছে। আমাদের দোষ ছিল যে, আমরা প্রশ্ন করেছি। আমরা জনপ্রতিনিধি। বাংলার মানুষ আমাদের ভোট দিয়ে জিতিয়েছেন। আমাদের কর্তব্য বিধানসভার মধ্যে প্রশ্ন করা।''

তিনি আরও প্রশ্ন তুলে বলেন, ''বিধানসভায় গত বৃহস্পতিবার দিন আমরা সরকার পক্ষের বক্তব্য শুনিনি বলে আমাদের বক্তব্য মুছে ফেলা হয়েছে। এটা কোন ধরনের নিয়ম? আমার যদি কারও বক্তব্য শুনতে ভালো না লাগে বা বাড়িতে কোনও এমার্জেন্সি থাকে তাহলে কী আমি উঠে যাব না? আর এই বিষয় নিয়ে আজকে আমরা প্রতিবাদ করেছি বলে, মানুষের যে কষ্ট সেই বিষয় নিয়ে কথা বলেছি বলে আজ আমাদের সাসপেন্ড হতে হয়েছে। মানুষের কথা বলায় যদি আমাদের সাসপেন্ড হতে হয় তাহলে আমার আবার কথা বলব।''

অন্যদিকে, এদিন বিজেপির পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক শঙ্কর ঘোষকে বিধানসবার মেনশন পর্বে বলতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। এই অভিযোগ জানিয়ে স্পিকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি বিধায়কেরা। পাল্টা চিৎকার শুরু করেন তৃণমূল বিধায়কেরা। এরপরই স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি বিধায়কদের সাসপেন্ড করার নির্দেশ দেন। আরও অভিযোগ, ঘটনায় কাগজ ছিঁড়ে প্রতিবাদ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা। এর মধ্যেই মহিষাদলের তৃণমূল বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘’কালীগঞ্জে হারল কে?'' জানা গিয়েছে, এরপর বিজেপি বিধায়কদের বিক্ষোভের মাত্রা বৃদ্ধি পাই বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির চার বিধায়ককে সাসপেন্ড করেন স্পিকার। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের আবেদনের ভিত্তিতে তাঁদের সাসপেন্ড করা হয় বলে জানা গিয়েছে।

তার পরেই সাসপেন্ড হওয়া বিজেপি বিধায়কদের বার করে দিতে মার্শাল ডাকেন স্পিকার। সে সময় বিধানসভার নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে বিধায়কদের ধাক্কাধাক্কি হয় বলে অভিযোগ। তাতে কক্ষেই পড়ে যান শঙ্কর। বিজেপির অভিযোগ, তাঁর চশমা ভেঙে গিয়েছে। কক্ষ থেকে বার করে দেওয়া হয় বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামীকে। তার মধ্যে তৃণমূল বিধায়ক অসীমা পাত্রের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় অগ্নিমিত্রার। পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হলে অরূপ এবং বিজেপি বিধায়কেরা কিছুটা সামাল দেন। বিক্ষোভের মধ্যেই তৃণমূল পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ বক্তৃতা শুরু করেন। তিনি বিজেপিকে আক্রমণ করেন। বিজেপি বিধায়কদের সে সময় ঘিরে রাখেন বিধানসভার নিরাপত্তারক্ষীরা। নেতাজি সুভাষ ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয় বিল নিয়ে আলোচনা শুরু হয় অধিবেশন কক্ষে।

এদিকে সেই সময় বিধানসভায় ছিলেন না বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বিধানসভায় আসলে স্পিকারের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় শুভেন্দুর। এরপর বিজেপি বিধায়কদের অন্যায়ভাবে সাসপেন্ড করার প্রতিবাদে পরিষদীয় দল বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিধানসভার গেটের বাইরে। বিজেপি বিধায়কদের শারীরিক ভাবে নিগ্রহ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে সরব হন বিরোধী দলনেতা। বিষয়টি নিয়ে তিনি আগামী শীতকালীন অধিবেশনে যে সরব হবেন সে কথাও এদিন স্পষ্ট করে দেন শুভেন্দু।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।