সংক্ষিপ্ত

আরজি কর কাণ্ডে নির্যাতিতার প্রথম থেকেই বিচারের দাবিতে সরব ছিলেন। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনেও তাঁরা সামিল হয়েছিলেন।

 

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (RG Kar Medical College Hospital) চিকিৎসক তরুণীর খুন ও ধর্ষণ-কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত হওয়া সঞ্জয় রায়কে (Sanjay Roy) আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বিচারক রায় ঘোষণা করার পরই চেয়ার ছেড়ে উঠে পড়ে দ্রুত এজলাস থেকে বেরিয়ে যান বিচারক অনির্বান দাস। কিন্তু আদালতের মধ্যেই চুপচাপ থমথমে মুখে থাকেন নির্যাতিতার বাবা ও মা। তাঁরা দুজনে কার্যত বাকরুদ্ধ হয়ে বসে থাকেন। পরে অবশ্য  ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে। তাঁদের কথায় বিরলের মধ্যে বিরলতম - প্রমাণ করতে পারেননি সিবিআই। তাই আদাত এই রায় দিয়েছে।

আরজি কর কাণ্ডে নির্যাতিতার প্রথম থেকেই বিচারের দাবিতে সরব ছিলেন। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনেও তাঁরা সামিল হয়েছিলেন। সঞ্জয় রায়ের সঙ্গে তরুণী চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণকাণ্ডে আরও কেউ জড়িত রয়েছে। এই দাবি করেও তাঁরা সঞ্জয় রায়ের মৃত্যুদণ্ড বা ফাঁসির দাবিতে সরব হয়েছিলেন। পাশাপাশি আরজি করের ঘটনায় আরও অনেকে জড়িত বলে তাঁদের অভিযোগ ছিল। তাদেরও শাস্তি চেয়েছিলেন নির্যাতিতার বাবা ও মা। কিন্তু বিচারক সঞ্জয় রায়কে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন। এই রায় শোনার পরই তাঁরা আদালতের মধ্যে কার্যত হতাশ হয়ে পড়েন তাঁরা।  নির্যাতিতার মা বলেছেন,  তাঁর মেয়ে হাসপাতালের মধ্যেই কর্মরত অবস্থায় খুন হযেছে। এটা বিরলের মধ্যে বিরলতম ঘটনা নয়! তিনি আরও বলে  সিবিআই-এর ব্যর্থতার জন্যই এই রায় দিয়েছে আদালত। 

নির্যাতিতার বাবা জানিয়েছেন, তারা সঠিক বিচারপাননি। তবে  তাঁরা প্রথম ধাপ পেরিয়েছেন। তিনি আরও বলেন,  বিচারক সঠিক বিচার পাওয়ার একটা ধাপ তৈরি করে দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন বিচারক যা ভাল মনে করেছেন তাই করেছেন। তবি নির্যাতিতার পরিবার স্পষ্ট করে জানিয়েছেন তাঁরা ক্ষতিপুরণ নিতে পারবেন না। তিনি বলেন তাঁরা মেয়েকে তাঁরা বিক্রি করতে পারবেন না।  বিচার পেলে তাঁর মেয়েক আত্মা শান্তি পাবে। তাঁরা লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথাও বলেছেন। প্রকৃত অপরাধী শাস্তি পেলেই তাঁরা সন্তষ্ট হবেন বলেও জানিয়েছেন।

এদিন আদালত নির্যাতিতার পরিবারকে ক্ষতিপুরণ দেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গেই তারা ক্ষতিপুরণ নিতে অস্বীকার করেন। শিয়ালদহ কোর্টের বিচারকের নির্দেশ, রাষ্ট্রকে সবমিলিয়ে ১৭ লক্ষ টাকা ক্ষতিপুরণ দিতে হবে নির্যাতিতার পরিবারকে। নির্যাতিতার বাবা অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁরা ক্ষতিপুরণ চান না। তারপরই তাঁদের উদ্দেশ্যে বিচারক বলেন, 'আপনি মনে করবেননা টাকা দিয়ে ক্ষতিপুরণের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাকে এমন বলা হলে আমিও তাই করতাম।' ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪. ৬৬ ও ১০৩ (১) - এই তিনটি ধরায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে। সিবিআই মৃত্যুদণ্ডের জন্য সওয়াল কলেও শেষপর্যন্ত যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। জরিমানা করা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। এ ছাড়া ধর্ষণের জন্য ৭ লক্ষ টাকা আর হত্যার জন্য ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপুরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বিচারক বলেন, 'রাষ্ট্রের দায়িত্ব নির্যাতিতার পরিবারকে ক্ষতিপুরণ দেওয়া।' তবে সঞ্জয় রায়কে আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা দেওয়ার পর তাঁরা রায় নিয়ে কিছু বললেননি।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।