কলকাতার কসবা আইন কলেজে ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। অভিযুক্তদের দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করতে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
দক্ষিণ কলকাতার একটি আইন কলেজে এক ছাত্রীর উপর ভয়াবহ গণধর্ষণের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতা এবং পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি নিশ্চিত করতে তিনি একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ এবং নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। এক্স-এ একটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, "এই মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি নিশ্চিত করতে আমি একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ এবং নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। দলমত নির্বিশেষে অভিযুক্তদের কঠোরতম শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ভবিষ্যতে তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠনের নেতাদের এ ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি করতে না পারে সেজন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে।"
"কলকাতার কসবা আইন কলেজের ক্যাম্পাসের ভিতরে এক তরুণীকে গণধর্ষণ করার ঘটনা জানতে পেরে আমি স্তম্ভিত। এই জঘন্য অপরাধে জড়িত তিন অভিযুক্তের মধ্যে মূল মাস্টারমাইন্ড হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে তৃণমূল ছাত্র সংগঠনের প্রভাবশালী নেতা মনোজিৎ মিশ্রকে (৩১)। গতকাল সন্ধ্যায় তালবাগান ক্রসিংয়ের কাছে সিদ্ধার্থ শংকর রায় শিশু উদ্যানের সামনে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। এছাড়াও, আরও দুই অভিযুক্ত জায়েব আহমেদ (১৯) এবং প্রমিত মুখোপাধ্যায়কে (২০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে," সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে এমনটাই জানিয়েছেন শুভেন্দু। তিনি আরও বলেন যে এটি শুধু একটি অপরাধ নয়। "এটি তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠনের নেতাদের দ্বারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পবিত্রতা কলঙ্কিত করার জ্বলন্ত প্রমাণ। একটি কলেজ ক্যাম্পাস, যেখানে ছাত্রছাত্রীরা জ্ঞান অর্জন করতে আসে, সেখানে এ ধরনের বর্বরতা আমাদের সমাজের জন্য লজ্জাজনক। তৃণমূলের ছাত্র নেতারা বারবার তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে ভয় ও অরাজকতার পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।" এমনটাই অভিযোগ করেন বিজেপি নেতা।
বুধবার সন্ধ্যায় কলকাতার কসবার একটি আইন কলেজে এক ছাত্রীকে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ তিন অভিযুক্তকেই গ্রেপ্তার করেছে। মনোজিৎ মিশ্র (৩১), জায়েব আহমেদ (১৯) এবং প্রমিত মুখোপাধ্যায় (২০) নামে তিন অভিযুক্ত একই আইন কলেজের প্রাক্তন ছাত্র বা কর্মী ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, এফআইআরে নাম থাকা অভিযুক্তদের মামলার যথাযথ তদন্তের জন্য পুলিশি হেফাজতে রিমান্ডের আবেদনসহ আলিপুরের এসিজেএমের সামনে হাজির করা হবে।
বুধবার সন্ধ্যা ৭:৩০ থেকে রাত ১০:৫০ এর মধ্যে আইন কলেজের ভিতরে যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটে বলেও জানিয়েছে পুলিশ। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, একজন অভিযুক্ত যৌন নির্যাতন চালিয়েছে, অন্যরাও অপরাধে জড়িত ছিল। তারা মহিলার সঙ্গে অশালীন আচরণ করে। ধর্ষণের সময় বাইরে দাঁড়িয়ে পাহারা দেয়।
আক্রান্তের পরিবার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে এবং পুলিশ বিষয়টিতে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার কলকাতার তালবাগান ক্রসিংয়ের কাছে সিদ্ধার্থ শংকর রায় শিশু উদ্যানের কাছে দুই অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র এবং জায়েব আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই রাতে পরে প্রমিত মুখোপাধ্যায়কে তার বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ তিন অভিযুক্তের মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং ফরেনসিক পরীক্ষা না হওয়া পর্যন্ত এটিকে সুরক্ষার আওতায় রেখেছেন। তারা আরও তদন্তের জন্য হেফাজতে রিমান্ড চেয়েছেন। আলিপুর আদালত তিন জনকে চার দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।


