Calcutta High Court: উত্তর দিনাজপুরের দাড়িভিটকাণ্ডে চাঞ্চল্যকর মোড়। জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-র ভূমিকা নিয়ে আদালতে তীব্র সমালোচনা। কী বললেন বিচারপতি? বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ প্রতিবেদন পড়ুন… 

Calcutta High Court: দাড়িভিটকাণ্ডে বুধবার আদালতে তীব্র ভর্ৎসনার শিকার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ (NIA)। ঘটনার একবছর পার হয়ে গেলেও তদন্তে সেরকম কোনও রকম অগ্রগতি না হওয়ায় এবার কলকাতা হাইকোর্টের রোষের মুখে পড়ল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। 

জানা গিয়েছে, দাড়িভিটকাণ্ডের একবছর হয়ে গেলেও তদন্তে এখনও পর্যন্ত নেই কোনও অগ্ৰগতি। এখনও জমা পড়েনি কোনও তদন্ত রিপোর্ট। দাড়িভিট মামলায় হাইকোর্টে তীব্র ভর্ৎসনার মুখে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। আগামী ৯ জুলাইয়ে মধ্যে আদালতে জমা দিতে হবে তদন্তের অগ্ৰগতি রিপোর্ট। এনআইএ-কে ডেডলাইন বেঁধে দিলেন বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ।

 জানা গিয়েছে, বুধবার দাড়িভিট মামলায় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থাকে তীব্র ভর্ৎসনা করে তাদের আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বলেন, ‘’এনআইএ অফিসাররা কি নিজেদের আদালতের উর্ধ্বে ভাবছেন? এক বছর আগে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছিল। একটি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার যদি এই ভূমিকা হয় তাহলে অফিসারদের তৈরি থাকতে বলুন। আদালত যথাযথ ব্যবস্থা নিতে জানে।'' 

প্রসঙ্গত,, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের দাড়িভিট হাই স্কুল। অবরোধ, লাঠিচার্জ, ইট-পাথর ছোড়া থেকে শুরু করে বোমা-গুলিও চলে বলে অভিযোগ। ওই সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় রাজেশ সরকার এবং তাপস বর্মণ নামে দুই প্রাক্তন ছাত্রের। পরিবারের অভিযোগ ছিল, পুলিশেরর গুলিতে তারা নিহত হয়েছেন‌। 

পরবর্তীকালে এই মামলায় বিচারপতি রাজশেখর মান্থা এনআইএ (NIA) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য ডিভিশন বেঞ্চে যায়। অভিযোগ, এখনও পর্যন্ত তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে কোনও রিপোর্ট জমা দিতে পারেনি এনআইএ। বুধবার মামলার শুনানিতে বিষয়টি জানার পরই তদন্তকারী অফিসারদের ভূমিকায় চূড়ান্ত বিরক্তি প্রকাশ করেন বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী।

এদিন আদালতে নিহতদের পরিবার অভিযোগ, নিহতাদের দেহ এখনও সংরক্ষণ করে রাখা রয়েছে। পুলিশ অভিযুক্ত। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তদন্তকারী সংস্থা কোনও একজনকেও জেরা পর্যন্ত করেনি। যা শুনে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করে বিচারপতি এনআইএ আইনজীবীদের তীব্র ভর্ৎসনা করে বলেন, ‘’১৪ মাসের তদন্তে অগ্রগতি কোথায়? এনআইএ অফিসার কি নিজেদের আদালতের উর্ধ্বে ভাবছে? এক বছর আগে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছিল। একটি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার যদি এই ভূমিকা হয় তাহলে অফিসারদের তৈরি থাকতে বলুন। আদালত যথাযথ ব্যবস্থা নিতে জানে।''

অন্যদিকে এই বিষয়ে এনআইএ-এর আইনজীবী রাজ্যের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে আদালতে দাবি করে বলেন, ‘’পুলিশের তদন্তে আগে থেকেই ত্রুটি ছিল। যে গুলি দিয়ে হত্যা করা হয়েছিল সেই গুলি পদ্ধতি মেনে সংরক্ষণ করা হয়নি।'' বুধবার আদালতে এমনটাই দাবি করে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী। যদিও NIA-এর এই যুক্তিতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী। তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী কড়া বার্তা দিয়ে বলেন, 'আদালতের নির্দেশ পালন করা হয়নি। তাই কোনও অজুহাত খাড়া করার চেষ্টা করবেন না।'' এমনকি এবার আদালতের নির্দেশ না মানলে আরও বড় পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি বিচারপতি চক্রবর্তীর। 

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।