সংক্ষিপ্ত

গত ২৫শে ডিসেম্বর বাংলা সংগীতমেলায় দেখা গিয়েছিল নাকে রাইলস টিউব লাগানো অবস্থায় হুইল চেয়ারে বসেই গান গাইছেন তাপস দাস বাপিকে। অসুস্থ অবস্থায় তাঁর এই স্পিরিটকে কুর্নিশ জানিয়েছেন ফ্যানেরা।

এক এক করে পড়ে গিয়েছে উইকেট। মহীনের ঘোড়াগুলি তবু আজও সমানভাবে জনপ্রিয় বাংলা গানের শ্রোতাদের কাছে। সেই টিমের শেষ ঘোড়া তাপস দাস, সবার কাছে যিনি জনপ্রিয় বাপীদা নামে, আজ মৃত্যুমুখে। ৬৮ বছর বয়েসী বাপীদা ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত, স্টেজ থ্রি। এই ব্যান্ডের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তাপস দাসের শারীরিক অবস্থা গত কয়েকদিনে অবনতির দিকে বলেই জানালেন তাঁর স্ত্রী সুতপা দাস।

তবে চিকিৎসার খরচ আকাশছোঁয়া। ফলে চিকিৎসা চালাতে হিমশিম খাচ্ছে গোটা পরিবার। এই পরিস্থিতিতে বাপীদার পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আবেদন করেছেন ফোক ঘরাণায় ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় শিল্পী অর্ক মুখোপাধ্যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় গোটা ঘটনা পোস্ট করে তাঁর আবেদন যেন দেশের বেড়াজাল ভেঙে প্রিয় শিল্পীর জন্য সবাই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। যার যতটুকু সাধ্য, সেই সাধ্য দিয়েই চিকিৎসার খরচ চালাবেন তাঁরা। ভক্তরা প্রিয় সংগীতশিল্পীর জন্য ফান্ড রেজিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ইতিমধ্যেই সোশাল মিডিয়ায় ব্যাংকের ডিটেলস দিয়ে শেয়ার করতে শুরু করেছেন ফ্যানেরা।

সোশ্যাল মিডিয়ায় অর্ক লেখেন ‘যাদের গান "সুদিন কাছে এসো ভালোবাসি একসাথে সবকিছুই" তাদেরই বাপিদা আজ অসুস্থ। মহিনের ঘোড়াগুলির এই তাপস দাস, বাপিদা, কে তার পরিচয় আমি করিয়ে দেব এত বড় কেউ আমি নই। লাং ক্যান্সার থার্ড স্টেজ, খেতে পারছেন না স্বাভাবিক পদ্ধতিতে। বেশ কিছু কেমো নিয়েছেন। এখন রেডিয়েশন নেবার মতন অবস্থায় নেই। খেতে পারছেন না স্বাভাবিক ভাবে। ওজন কমে পয়ত্রিশ কিলোয় নেমে এসেছে। এখুনি কথা হয়েছে ওনার স্ত্রী সুতপাদির সাথে। ওনার থেকেই শুনেছি। এই অবস্থাতেও বাপিদা কোনোমতে ফোন হাতে নিয়ে আমার সাথে কথাও বলেছেন। ধন্যবাদ জানাই নীলাঞ্জন ও কৌস্তভকে আমায় জানানোর জন্য। আমরা বন্ধুরা একটি অনলাইন ফান্ড্রেসার অর্গানাইস করবো দ্রুতোই এক সপ্তাহের মধ্যে। বাজে ভনীতা করে আর পলিটিকাল/এপলিটিকাল কুৎসিত ট্রোলবাজি না করে যদি পারেন আমার আপনার সামান্য ছোট ছোট কান্ট্রিবিউশন পাঠাতে শুরু করুন। খরচ অনেক। ঐ যে গানটা আপনাকে রাতে দিনে ভাবিয়েছে , তার ও মূল্য অনেক। সে কথা ভেবে এগিয়ে আসুন। অন্য কেউ কী করেছে না করেছে তার জন্য না ভেবে। যদি সত্যিই কোনোদিন ভেবে থাকেন "কোথায় রয়েছে ভাবি লুকিয়ে বিষাদ তবুও", তবে মনে রাখবেন একটু একটু করে হলেও এই মানুষটিকে বাঁচানোর দায় আমাদেরও আছে।'

সংগীতশিল্পীর মনের জোরের প্রশংসা করছেন সকলেই। মারণ এই রোগের সঙ্গে লড়াইরত অবস্থাতেই মিউজিক শো করেছেন তিনি। শিল্পীর স্ত্রী সুতপা দাস বলেন "রাইলস টিউব লাগিয়ে রাখতে হয় সর্বক্ষণ। তরল ছাড়া কোনও খাবার খেতে পারে না। এখনও পর্যন্ত চারটি কেমো হয়ে গিয়েছে। আজও ওকে নিয়ে টাটা মেডিক্যাল সেন্টারে এসেছিলাম রেডিয়েশন থেরাপির জন্য। কিন্তু, চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এখনই ওঁর শরীর রেডিয়েশন থেরাপির জন্য প্রস্তুত নয়। তাই আপাতত এক সপ্তাহ ধরে পালমোনোলজিস্ট চিকিৎসা করবেন। তারপর ফের রেডিয়েশন থেরাপি শুরু হবে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, বাপি ট্রিটমেন্টে উন্নতি করছে তবে এটা স্টেজ থ্রি ক্যানসার।"

উল্লেখ্য, গত ২৫শে ডিসেম্বর বাংলা সংগীতমেলায় দেখা গিয়েছিল নাকে রাইলস টিউব লাগানো অবস্থায় হুইল চেয়ারে বসেই গান গাইছেন তাপস দাস বাপিকে। অসুস্থ অবস্থায় তাঁর এই স্পিরিটকে কুর্নিশ জানিয়েছেন ফ্যানেরা। সেই ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল।