সংক্ষিপ্ত
বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির তরফে জানানো হয়েছে সরকারি শিক্ষানীতির ফলে ক্রমশ বিপর্যয়ের পথে যাচ্ছে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা। বাংলায় ক্ষমতার হাতবদল হলেও শিক্ষানীতিতে কোনও বদল আসেনি বলেই দাবি করছেন তাঁরা।
সরকারি শিক্ষানীতির বিরোধিতায় সরব শিক্ষক সমাজ। শিক্ষার স্বার্থের পক্ষে সরকারের এই 'ভ্রান্ত' নীতি যথেষ্ট ক্ষতিকর বলেই দাবি করছে রাজ্যের শিক্ষকরা। এছাড়া বিনা তদন্তে ৩২০০০ শিক্ষকের চাকরি বাতিল-সহ, বারে বারে স্কুল ছুটি বৃদ্ধি, শিক্ষকদের অনৈতিক বদলি ইত্যাদি নানা ঘটনার প্রতিবাদে এবার পথে নামছে বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি। আগামী ২ জুন শুক্রবার কলকাতার রাজপথে প্রতিবাদ মিছিল করবে শিক্ষকরা। বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আগামী কাল দুপুর ১.৩০-এ কলেজ স্কোয়ারে জমায়েত করতে চলেছেন তাঁরা। সেখান থেকে মিছিল আসবে এসপ্লানেড (রাণী রাসমণি রোড) পর্যন্ত। এদিন নিজেদের দাবি দাওয়া নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপিও জমা দেওয়া হবে।
বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির তরফে জানানো হয়েছে সরকারি শিক্ষানীতির ফলে ক্রমশ বিপর্যয়ের পথে যাচ্ছে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা। বাংলায় ক্ষমতার হাতবদল হলেও শিক্ষানীতিতে কোনও বদল আসেনি বলেই দাবি করছেন তাঁরা। পাশাপাশি গরমের অজুহাতে টানা ৫২ দিন স্কুল ছুটির সিদ্ধান্তও যে শিক্ষার ক্ষেত্রে খুব হিতকর সিদ্ধান্ত নয় সে বিষয়ও স্পষ্টভাবেই জানিয়েছে বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি। তাঁদের দাবি, এই দীর্ঘ ছুটির ফলে পড়াশোনায় অমনোযোগী হয়ে পড়ছে পড়ুয়ারা। বাড়ছে স্কুলছুটের সংখ্যাও। ফলত বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীর অভাব ঘটবে। সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হান্ডার অভিযোগ,'সরকারের ভ্রান্ত শিক্ষানীতির জন্য আজ স্কুলগুলো ছাত্রছাত্রীর অভাবে ধুঁকছে। আর তার সব দায় শিক্ষকদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।' এছাড়া বিদ্যালয়ের অনুন্নত পরিকাঠামো, শিক্ষাকর্মীর অভাব-সহ একাধিক ইস্যুতে সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা এবং শিক্ষকদের মান মর্যাদা রক্ষায় সর্বস্তরের শিক্ষক সমাজকে এগিয়ে আসার জানিয়েছে বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি।
বিনা তদন্তে ৩২০০০ শিক্ষকের চাকরি বাতিলের ইস্যুতেও সরব হন তাঁরা। তাঁদের দাবি এই মামলায় হাইকোর্টে ১৫দিন শুনানী হলেও সরকার কোনো রকম সহযোগিতা না করে নিরুত্তর থেকেছে ফলত ২০১৭ সালের নিয়োগপ্রাপ্ত ৩২০০০ আনট্রেন্ডদের চাকরি বাতিল হয়েছে। বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির অভিযোগ, ছাত্রহীনতার নামে অনৈতিক ভাবে বদলি করা হচ্ছে শিক্ষকদের। ফলত শিক্ষকের অভাবে উঠে যেতে বসেছে স্কুলের পর স্কুল। তাঁরা জানিয়েছেন,'প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫/৬ টি শ্রেণী রয়েছে কিন্তু শ্রেণী ভিত্তিক শিক্ষক নেই। কোন শিক্ষাকর্মী নেই। বেশিরভাগ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই। কেন্দ্রীয় শিক্ষা অধিকার আইন অনুযায়ী ৩০:১ ছাত্র শিক্ষক অনুপাত। শিক্ষকদের দিয়ে ভোটের কাজ, জনগণনা ইত্যাদি শিক্ষাদান বহির্ভূত কাজ করানো চলে। ফলে শিক্ষাদান গৌণ হয়ে গেছে। তাই অভিভাবকরা সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থায় আশা হারিয়ে ফেলেছে। বিদ্যালয়গুলো ছাত্রাভাবে ধুঁকছে। আর সেজন্যই শিক্ষকদের বদলির নির্দেশ জারি করা হয়েছে। এভাবে ধীরে ধীরে সমস্ত স্কুলেই শিক্ষক উদ্বৃত্ত হবে এবং ভবিষ্যতে সমস্ত স্কুল উঠে যাবে। এ সিদ্ধান্ত নিশ্চিতভাবে শিক্ষা ধ্বংসকারী।'