সংক্ষিপ্ত
সন্তান ধারনের জন্য তান্ত্রিকের বিধান। আর সেই কারণেই তিলজলায় সাত বছরের শিশুকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। জেরায় নাকি তেমনই জানিয়ে অভিযুক্ত।
তিলজলায় সাত বছরের শিশুকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। যা নিয়ে দিনভর উত্তপ্ত ছিল কলকাতা। প্রশ্ন উঠছে কেন এই হত্যাকাণ্ড। ইতিমধ্যেই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাতেই সামনে আসছে নানান তথ্য।
শিশু হত্যার কারণঃ
তিলজলায় শিশু হত্যাকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত অলোক কুমারকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাতেই সামনে এসেছে নানান তথ্য। অলোক নিঃসন্তান। তাঁর স্ত্রী তিনবার গর্ভধারণ করেও সন্তানের জন্মদিতে পারেনই। তাতেই স্বামী - স্ত্রী সন্তান ধারনের জন্য বিহারের এক তান্ত্রিকের দ্বারস্থ হয়েছিল। তান্ত্রিকের মত ছিল সন্তান ধারনের দোষ কাটাতে নরবলি দিতে হবে। তাতেই ৭ বছররে শিশুকে হত্যা করা হয়েছে বলেও অনুমান করছে। পুলিশ।
নবরাত্রির মধ্যেই নরবলি
নবরাত্রির চলছে। চৈত্র নবরাত্রিরের মধ্যেই নরবলি দিলে বাধা কাটবে। পুলিশ সূত্রের খবর এমনই বিধান দিয়েছিল তান্ত্রিক। আর সেই কারণে অলোক নিয়ে সন্তান পাওয়ার জন্য মাত্র ৭ বছরের এক শিশুকে গলা কেটে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ।
সন্তান নিয়ে স্বামী স্ত্রীর সমস্যা
বেশ কয়েক বছর আগেই বিয়ে হয়েছিল অলোকের। কিন্তু সন্তান হয়নি। যা নিয়ে স্বামী ও স্ত্রীকে কথা শোনাত আত্মীয় ও প্রতিবেশীরা। অলোক স্ত্রীকে বন্ধ্যা বলেও দাবি করেছিল। পাল্টা স্ত্রীও অলোককে কটূকথা বলত। যা নিয়ে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসে তান্ত্রিক। চৈত্র নবরাত্রির মধ্যে ৭-৮ বছরের শিশুকে বলি দেওয়া বিধান দেয়। তাতেই স্ত্রী সন্তান ধারণ করেত পারবে বলেও জানায়। সেই কারণেই শিশু হত্যা। তেমনই জানিয়েছে পুলিশ সূত্র। তবে অলোকের বয়ান কতটা সত্য তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
পুলিশের অনুমান খুনের আগে শিশুটিকে যৌন নির্যাতন করা হয়। কিন্তু তান্ত্রিক তেমন বিধান দিয়েছে বলেও পুলিশ মনে করছে না। তবে জেরা খুনের কথা ইতিমধ্যেই স্বীকার করে নিয়েছে অলোক।
পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার সকাল ৮টা থেকে নিখোঁজ ছিল ওই নাবালিকা। বেলা ১২টায় থানায় অভিযোগ দায়ের করে পরিবার, দাবি পুলিশের। তাদের দাবি, সিসিটিভিতে পাশের বাড়িতে ঢুকতে দেখা গিয়েছিল নাবালিকাকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তল্লাশির পরে ওই নাবালিকার খোঁজ পায়নি পুলিশ। কোনও ব্যবস্থা নেয়নি তারা, এমনও অভিযোগ উঠেছে। পরে পাশের বিল্ডিংয়ের ১টি তালাবন্ধ ফ্ল্যাটে স্যুটকেসের ভিতরে গলা কাটা অবস্থায় উদ্ধার হয় দেহ।
তিলজলায় শিশুকে যৌন নির্যাতনের পর খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত অলোক কুমারকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযোগ উঠেছে, সন্তান লাভের আশায় তান্ত্রিকের কথা শুনে ওই সাত বছরের শিশুকে খুন করেছেন নিঃসন্তান আলোক। সূত্রের খবর, পুলিশি জেরায় অভিযুক্ত নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই তান্ত্রিককে ধরতেও বিহারে কলকাতা পুলিশের একটি দল পাঠানো হতে পারে।
পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন বিক্ষোভকারীরা। রবিবার রাতেও তিলজলা থানায় বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন স্থানীয়রা। অভিযোগ, রবিবার সকাল থেকে শিশুটিকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে থানায় অভিযোগ জানালেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি। পুলিশ তৎপরতা দেখালে শিশুটিকে বাঁচানো যেত বলেও দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।