সংক্ষিপ্ত
পুলিশকর্মীরা গিয়ে সন্দেহভাজন ব্যক্তির ফ্ল্যাটের দরজা খুলতে বললে তিনি ‘রান্না করা’-র অজুহাত দেন এবং পুলিশ সেই অজুহাত মেনে নিয়ে নাবালিকার খোঁজ না করেই ফিরে চলে যায় বলে অভিযোগ। রবিবার রাতে এলাকাবাসীর বিক্ষোভে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে গেল তিলজলা থানার সামনে।
প্রতিবেশীর ফ্ল্যাটের রান্নাঘরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে ৭ বছরের শিশুকে ধর্ষণ। পুলিশকে জানানো সত্ত্বেও চূড়ান্ত গাফিলতির অভিযোগ। রবিবার রাতে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে গেল তিলজলা থানার সামনে।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, রবিবার সকাল ৮টা নাগাদ দুধ আনতে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে সকাল থেকেই নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল ওই নাবালিকা। সারাদিন ধরে দফায় দফায় থানায় যান শিশুর বাবা। বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও পুলিশ সারাদিনে একবারও ওই শিশুকন্যার খোঁজ করতে যায়নি, শেষে পুলিশ উলটে ওই শিশুর বাবাকে থাপ্পড় মারার হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। পুলিশ সকাল ১১টা নাগাদ পৌঁছলে এলাকার লোকজনের তরফে সিসিটিভি দেখার অনুরোধ জানানো হলেও পুলিশ তা করেনি এবং সন্দেহভাজন ব্যক্তির ফ্ল্যাটের দরজা খুলতে বলা হলে তিনি রান্না করার অজুহাত দেন এবং পুলিশ সেই অজুহাত মেনে নিয়ে নাবালিকার খোঁজ না করেই ফিরে চলে যায় বলে অভিযোগ। শেষে সন্ধ্যার পর তার খোঁজ পান প্রতিবেশীরা। দেখা যায়, প্রতিবেশী অলোক কুমারের ফ্ল্যাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে নগ্ন অবস্থায় সিলিন্ডারের সঙ্গে বাঁধা ছিল ৭ বছরের শিশু। ওই অবস্থাতেই ক্রমাগত তার শরীরে চলে পাশবিক নির্যাতন। রাত ৯টা নাগাদ ফ্ল্যাটে রাখা একটি সিলিন্ডারের পাশ থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় দেহটি উদ্ধার হয়।
এলাকার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বালিকা মাথায় স্ক্রু জাতীয় ধারালো কোনও অস্ত্র দিয়ে ফুটো করার চেষ্টা করেছে আততায়ী এবং ধর্ষক অলোক কুমার। হাতে, ঘাড়ে, কানের পাশ সহ সারা দেহে ধারালো অস্ত্রের মারের দাগ রয়েছে। নির্যাতনের যন্ত্রণায় শেষমেশ প্রাণ হারায় ওই শিশুকন্যা। বস্তা থেকে শিশুর দেহ উদ্ধার হতেই ফ্ল্যাটের বাসিন্দা, বত্রিশ বছর বয়সী অলোক কুমারকে সেখানেই ধরা হয়। অভিযুক্তকে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানাতে থাকেন উত্তেজিত জনতা। খুনের তদন্ত করতে পুলিশ অভিযুক্তকে ক্ষিপ্ত জনতার হাত থেকে বাঁচিয়ে থানায় নিয়ে আসে। নাবালিকার দেহটি ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পরেই কান্নায় ভেঙে পড়েন মৃত শিশুর বাবা। উত্তেজিত জনতা মারমুখী হয়ে ওঠে এবং সমস্ত রাগ গিয়ে পড়ে পুলিশের ওপর।
রবিবার রাত থেকে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়তে শুরু করে তিলজলা এলাকায়। থানার গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। গেটের সামনে জড়ো হয়ে যান এলাকার মানুষ। তাঁদের রাগে এবং শিশুর বাবার ক্ষোভে প্রায় রনক্ষেত্র চেহারা নেয় তিলজলা থানা এলাকা। গেট ভেঙে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেন বিক্ষোভকারীরা। পুলিশকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি ইট, পাথর ছোড়া শুরু হয় বলে অভিযোগ। ভাঙচুর করা হয় পুলিশের প্রিজন ভ্যান, মোটরসাইকেলেও। ইটের আঘাতে ২ জন পুলিশকর্মী জখম হয়েছেন বলেও জানা গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে থানার পিছনের গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকতে থাকে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী। থানার গেটের সামনের দিকেই ছিলেন বিক্ষোভকারী মহিলারা। তাঁদের সামাল দিতে ডাকা হয় মহিলা পুলিশও।
পরিস্থিতি ক্রমাগত হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে বুঝতে পেরে বাধ্য হয়ে লাঠিচার্জ করা হয় পুলিশের তরফে। এতে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় উত্তেজিত জনতা। এরপর বিভিন্ন গলির ভিতরে ঢুকে বিক্ষোভকারীদের তাড়া করে পুলিশ। সারা রাত ধরে আশেপাশের গলিগুলিতে টহল দেওয়া শুরু হয়।
আরও পড়ুন-
সোম ও মঙ্গলবার কাজে বেরোনোর আগে দেখে নিন কোন সময়ে বন্ধ রাখা হবে কোন কোন রাস্তা
জ্বালানির দামে পতন, নাকি ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী পেট্রোল-দর? দেখে নিন সোমবারের লেটেস্ট আপডেট
দিনভর মেঘলা আকাশের সঙ্গে তাপমাত্রার বৃদ্ধি, পশ্চিমবঙ্গের কোন জেলায় কবে থামবে বৃষ্টি?