সংক্ষিপ্ত
একদিন আগেই মন্ত্রিসভা ও দলের পদ ছেড়েছেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা
তারপরই যেন আল খুলে গিয়েছে হাওড়া তৃণমূলের
মুখ খুলছেন একের পর এক নেতা
এদিন বেসুরে গাইলেন জগদীশপুরের পঞ্চায়েত প্রধান থেকে হাওড়ার প্রাক্তন মেয়র।
একদিন আগেই রাজ্যের মন্ত্রিত্ব এবং তৃণমূল দলের পদ ছেড়েছেন প্রাক্তন ক্রিকেটার লক্ষ্মীরতন শুক্লা। ইস্তফাপত্রে তিনি খেলার জগতে বেশি সময় দেওযার কারণ উল্লেখ করলেও, জোর গুঞ্জন জেলার নেতাদের সঙ্গে বিরোধের জেরেই রাজনীতি 'আপাতত' ছেড়েছেন লক্ষ্মী। তিনি দল ছাড়ার পরই হাওড়া জেলা তৃণমূলে টলমল করতে শুরু করেছে। একেবারে বিধায়ক স্তর থেকে পঞ্চায়েত স্তর অবধি বিভিন্ন নেতানেত্রী একের পর এক বেসুরে মুখ খুলতে শুরু করেছেন।
বুধবার, হাওড়া জগদীশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান গোবিন্দ হাজরা একেবারে প্রকাশ্যেই দলের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন। জানালেন, লক্ষ্মীরতন শুক্লার ইস্তফার কারণ দলের একাংশের প্রতি ক্ষোভেরই বহিপ্রকাশ। তাঁর অভিযোগ, জেলার একাংশের নেতারা অসহোযোগিতা করেছেন লক্ষ্মীর সঙ্গে। সরকারি পরিষেবা সকলের কাছে পৌঁছচ্ছে না। তিনি জানান, মমতা বন্দোপাধ্যায় 'দুয়ারে দুয়ারে' কর্মসূচী গ্রহণ করলেও তাঁরা দুয়ারে দুয়ারে যেতে ভয় পাচ্ছেন। কারণ মানুষ ঝাঁটা হাতে অপেক্ষা করছে তৃণমূল কংগ্রেস-এর জন্য। গেলেই পেটাবে।
তিনি উল্লেখ করেন দলের একাংশের দুর্নীতির কথা। জানান, আমফান-এর ত্রাণ দেওয়ার জন্য একেক পাড়ায় ১৪-১৫টি বাড়ির মানুষের নাম গ্রহণ করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু, ত্রাণ পেয়েছে ২-৩ টি বাড়ি। বাকিরা তো প্রশ্ন তুলবেই। দলের পক্ষ থেকে ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরকে নিয়োগ করা নিয়েও নিজের ক্ষোভ গোপন করেননি গোবিন্দ হাজরা। তিনি জ-জানান, পিকে কিছু ১৬-১৭ বছরের বাচ্চা ছেলেকে পাঠাচ্ছে। তাঁদের মতো পোড় খাওয়া রাজনীতিকদের সেই বাচ্ছা ছেলেদের কথা শুনে চলতে বলা হচ্ছে।
এদিন লক্ষ্মীর পক্ষে মুখ খুলেছেন হাওড়ার প্রাক্তন মেয়র তথা তৃণমূল নেতা রথীন চক্রবর্তীও। তিনি বলেন, দলের একাংশ ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে চাইছে বলেই লক্ষ্মীরতন শুক্লাদের মতো কাজের মানুষদের কাজ করতে দিচ্ছেন না। লক্ষ্মীদের মতো কৃতী মানুষকে দেখে অনেক হাওড়াবাসী তৃণমূল করতে আগ্রহী হয়েছিলেন, রাজনীতি করতে আগ্রহী হয়েছিলেন। লক্ষ্মী সরে যাওয়ায় তাঁরাও সরে যাবেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তবে লক্ষ্মীর পদত্যাগের আগেই হাওড়ার আরেক তৃণমূল নেতা তথা প্রাক্তন ফুটবলার প্রসুন বন্দ্যোপাধ্যায়ও, হাওড়া জেলা তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসের কর্মসূচি-সহ দলের অনেক কর্মসূচিতেই তাঁকে আর ডাকা হয় না বলে আক্ষেপ করেছিলেন তিনি। দলের মধ্যে গোষ্ঠী তৈরি হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছিলেন। সব মিলিয়ে হাওড়া তৃণমূলে যে বিস্তর গন্ডোগোল চলছে, তা লক্ষ্মীরতন শুক্লার ইস্তফায় যেন আরও নগ্ন হয়ে গিয়েছে। আর আরেক তৃণমূল বিধায়ক বৈশাখি ডালমিয়া তো একেবারে রাখঢাক না রেখে দলের একাংশকে উইপোকার সঙ্গে তুলনা করেছেন।