সংক্ষিপ্ত
অভিযোগ, সাগরদিঘি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই উড়ে যাচ্ছে লোকালয়ে। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাড়িঘর, আসবাবপত্র, চাষের জমি ও গাছপালা। স্থানীয়দের শ্বাসজনিত নানান রোগের সমস্যাও দেখা দিচ্ছে।
যাবতীয় পরিকাঠামো থাকার সত্ত্বেও চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন মনোভাব মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) 'পিডিসিএল' তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের (PDCL Thermal Power Plant)। ওই কেন্দ্র থেকে ছড়ানো সীমাহীন দূষণের (Pollution) প্রতিবাদে সাগরদীঘি এলাকায় সরব হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা (Locals)। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তাঁরা।
অভিযোগ, সাগরদিঘি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই উড়ে যাচ্ছে লোকালয়ে। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাড়িঘর, আসবাবপত্র, চাষের জমি ও গাছপালা। স্থানীয়দের শ্বাসজনিত নানান রোগের সমস্যাও দেখা দিচ্ছে। এর ফলে বেজায় সমস্যায় পড়ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ব্যবসা-বাণিজ্যেরও ক্ষতি হচ্ছে। দূষিত হচ্ছে গোটা এলাকা। তবে এই বিষয়ে তাপবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনকে একাধিকবার জানিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু, তাতেও কোনও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ। তাই বাধ্য হয়ে তাঁরা অবরোধ, বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন।
আরও পড়ুন- মোদীকে চিঠি দিয়ে বিজেপি ছাড়লেন, ‘অভিমানী’ জয় বন্দ্যোপাধ্যায় কি এবার তৃণমূলের পথে
বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে 'পিডিসিএল' কর্তৃপক্ষ। তাতেও টনক নড়েনি বলে অভিযোদ। এ প্রসঙ্গে সাগরদিঘি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার কৌশিক দত্ত বলেন, "পুরো বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। সেইমতো এলাকা পরিদর্শন করেছি এক দফা। ওই এলাকার মূল রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে রয়েছে। ফলে, যানবাহন চলাচল করলে ধুলো ওড়ে। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই সমস্যা নয়। তবুও যাতে ধুলো না ওড়ে তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। এর থেকে বেশি কিছু এখন বলা সম্ভব নয়।"
আরও পড়ুন- "এত লজ্জা না পেয়ে দল ছেড়ে দিন", ‘ধৈর্যের বাঁধ’ ভেঙে তথাগতর বিরুদ্ধে মন্তব্য দিলীপের
এলাকার ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের অভিযোগ, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই নিয়ে যাওয়ার সময় উড়ে তা আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। ঘরবাড়ি থেকে খাবার ও পানীয় জল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। চাষের ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। জানা গিয়েছে, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে লরি ও ডাম্পারে করেই ছাই স্থানীয় সিমেন্ট কারখানা বা অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়। খোলা অবস্থায় লরি বা ডাম্পারে ছাই নিয়ে যাওয়ায় তা ছড়িয়ে পড়ে। দোকানের খাবার ও জিনিসপত্রে ছাই জমে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন- কেন্দ্র কমালেও জ্বালানিতে ভ্যাট কমাচ্ছে না রাজ্য, আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি বিজেপির
স্থানীয় এক বাসিন্দা মিন্টু রহমান বলেন, "দীর্ঘদিন ধরে কোনওরকম পরিকল্পনা ছাড়াই সাগরদিঘি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজকর্মের জন্য এলাকায় আমাদের প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে। অনেকবার বলেও কোনও সুরাহা হয়নি। আগামী দিনে সমস্যার সমাধান না হলে দীর্ঘতর প্রতিবাদ হবে।" আরও এক বাসিন্দা কামাল হোসেন বলেন, "এই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই এর প্রভাবে বয়স্ক থেকে শিশুদের শরীরে নানান ধরনের শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগ থেকে চামড়ার অসুখ দেখা গিয়েছে। ফলে সারা বছরই এখানে কম বেশি অসুস্থ হয়ে থাকতেন স্থানীয়রা। সবকিছু জানার পরও প্রতিরোধের কোনও রকম ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এরকম চলতে থাকলে আমরা আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটব।"