সংক্ষিপ্ত
মঙ্গলবার বগটুইয়ের হত্যাকাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পরই শাসক দলের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলেন বিরোধীরা। প্রশ্ন তোলা হয় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও। এরপরই আজ সকালে বগটুইয়ে পৌঁছান সেলিম। কিন্তু, সেখানে পা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে ঘটনাস্থলে যেতে বাধা দেয় পুলিশ।
রামপুরহাটে (Rampurhat Fire) গণহত্যার অভিযোগে সরব হলেন সিপিআইএম (CPIM) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম (MD Selim)। বুধবার সকালেই রামপুরহাটে যান তিনি। আর সেখানে পা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সঙ্গেই বাধার মুখে পড়তে হয় তাঁকে। পুলিশের (Police) সঙ্গে বচসাও শুরু হয় তাঁর। পরে তিনি জানান, মৃতদের মধ্যে একজন তাঁর পরিচিত ছিলেন। তাই পুড়ে যাওয়া (Burnt House) ঘরটা দেখতে এসেছেন তিনি।
মঙ্গলবার বগটুইয়ের (Bagtui Massacre) হত্যাকাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পরই শাসক দলের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলেন বিরোধীরা। প্রশ্ন তোলা হয় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও। এরপরই আজ সকালে বগটুইয়ে পৌঁছান সেলিম। কিন্তু, সেখানে পা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে ঘটনাস্থলে যেতে বাধা দেয় পুলিশ। তখন পুলিশকে তিনি সরাসরি জবাব দিয়ে বলেন, "আমি সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক, আমার নাম মহম্মদ সেলিম।" তাঁর ঘটনাস্থলে যাওয়ার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে গিয়ে বলার কথা বলেন তিনি। তারপরই ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে চলে যান।
আরও পড়ুন- রামপুরহাটকাণ্ডে উদ্বেগ প্রকাশ, এবার দিল্লি যাচ্ছেন রাজ্যপাল
এরপর ভাদু শেখের প্রাসাদের মতো বাড়ি দেখে আঁতকে ওঠেন সেলিম। তিনি বলেন, "এ তো গ্যাংস্টার! সব গ্রামে এই টাকা দিয়েই সাম্রাজ্য তৈরি করা হয়। এই টাকা দিয়ে পুলিশ পোষা হয়। এই টাকা দিয়ে খুনোখুনি হচ্ছে। আর তাকে অসহায় মানুষের প্রাণ যায়। সব কুঁড়ে ঘর পুড়ে গিয়েছে। কলকাতায় যেমন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো রয়েছে তেমনই এখানে আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো রয়েছে। তাঁরই ছত্রছায়ায় সব হয়। সব ধরনের লেনদেনগুলো হয়। ভাদু শেখ খুন হওয়ার পর কেন পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করল না। পুলিশ তো জানত ও একটা গ্যাংস্টার ছিল। পুড়ে যাঁদের মৃত্যু হল তাঁদের জন্য পুলিশ কিছু করছে না কেন। পুলিশ কেন ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। যাঁরা অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তাঁদের কেন কোনও বয়ান নেওয়া হচ্ছে না। সিটের দ্বিতীয়বার কবর খোঁড়ার আগে বাংলার বুকে তৃণমূলের কবর খুঁড়তে হবে।"
সেলিমের দাবি, তাঁর এক পরিচিতের মৃত্যু হয়েছে এই ঘটনায়। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, "নানুরে আমার এক বন্ধু ছেলের বিয়ে হয়েছিল এই গ্রামে। আগুনে মৃত্য়ু হয়েছে তাঁর। তাই ঘটনাস্থল দেখতে এসেছি। দু'মাস আগে ওদের বিয়ে হয়েছিল। আমার জামাইটা কোন ঘরে মারা গিয়েছে দেখতে এসেছি। সেই অধিকার আমার আছে।"
বাম নেতার অভিযোগ, "দুষ্কৃতীরা যখন একের পর এক বাড়ি পোড়াচ্ছিল, খুন করছিল তখন পুলিশ আসেনি, অথচ চারটি গাড়ি নিয়ে কিছুটা দূরেই রাস্তার মুখে দাঁড়িয়ে ছিল। গুণ্ডারা হাতে অস্ত্র, বোমা নিয়ে ঢুকে গেলেও তাদের কিছু বলেনি। ভাইপো এসডিপিওকে কিনে রেখে দিয়েছে। এই ঘটনা পুলিশের নামে তৃণমূল করেছে নাকি তৃণমূলের নামে পুলিশ করেছে এটা তারা বুঝবে। কিন্তু খুনিদের শাস্তি চাই।"
ঠিক কী ঘটেছে রামপুরহাটে?
নানুরের পর রামপুরহাট। ২ দশক পরে বীরভূমে ফের হত্যালীলা। তৃণমূল উপ প্রধান ভাদু শেখের খুনের পর রামপুরহাটে হত্যালীলা, ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়এছে। যদিও মৃতের সংখ্যা নিয়ে একাধিক ধোঁয়াশা রয়েছে। কারও মতে মৃতের সংখ্যা আরও একটু বেশিও হতে পারে। রামপুরহাটের বকটুই গ্রামে পরপর বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। মৃতদের মধ্যে শিশু ও মহিলাও রয়েছেন।
রামপুরহাটকাণ্ডে আজ রাজ্যে পৌঁছবে কেন্দ্রীয় দল। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট তলব। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-র সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে দাবি করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, অমিত শাহ আমাদের আশ্বস্থ করেছেন। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে। তারপর যুগ্মসচিব স্তরের আধিকারিকের নের্তৃত্বে কেন্দ্রীয় দল বাংলায় যাবে। বাংলায় এই ধরনের ঘটনা বারবার ঘটছে। রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেমন, তা খতিয়ে দেখতেই দিল্লি থেকে দল যাবে বাংলায়। পাশাপাশি এদিনই রামপুরহাট যাবেন বলে রওনা দিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারি।