সংক্ষিপ্ত
সাধারণত আফগানিস্থান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, বাংলাদেশ, নেপাল, ভূটান প্রভৃতি দেশ থেকে উড়ে আসে ঝাঁকে ঝাঁকে পরিযায়ী পাখির (Migratory Birds) দল। মে মাসের শেষ দিক থেকে উষ্ণতার খোঁজে এরা এসে ভিড় জমায় মালদহের আদিনায়(Adina Jungle of Malda)।
হাজার হাজার কিলোমিটার পথ পেরিয়ে ওরা আসে। ওরা অতিথি। ওরা পরিযায়ী পাখি। গত কয়েক বছর ধরেই পরিযায়ী পাখিদের(Migratory Birds) পছন্দের ঠিকানা মালদহের আদিনা ফরেষ্ট(Adina Jungle of Malda)। পরিযায়ীদের কলোরব মুখর আদিনায় এবার করা হল পাখি সুমারী। আর এতেই মিলেছে সুখবর। সহজ ভাবে সুখবরের কথা বললে বলতে হয় মালদহের আদিনা জঙ্গলে একটি সাম্প্রতিক গণনায় হদিশ মিলেছে ২৩ হাজারেরও বেশি অতিথি পাখির। আর এতেই খুশির হাওয়া বইতে শুরু করেছে বনকর্মীদের মধ্যে। এদিরে দীর্ঘদিন পর ফের মালদহের আদিনা ফরেস্টে করা হল পরিযায়ী পাখির সুমারী। কত সংখ্যক পাখি ভারতীয় উপ মহাদেশের বিভিন্ন দেশ থেকে আদিনায় এসেছে তাঁর হিসেব কষতেই করা হয় পাখি গননা।
সাধারণত আফগানিস্থান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, বাংলাদেশ, নেপাল, ভূটান প্রভৃতি দেশ থেকে উড়ে আসে ঝাঁকে ঝাঁকে পরিযায়ী পাখির দল। মে মাসের শেষ দিক থেকে উষ্ণতার খোঁজে এরা এসে ভিড় জমায় মালদহের আদিনায়। এবছর ২৭ মে প্রথমবার দুটি পরিযায়ী পাখির দেখা মেলে আদিনায়। এরপর থেকে সময় যত গড়িয়েছে ততই ভিড় বেড়েছে পরিযায়ীদের। এদিকে মালদহের আদিনা ফরেস্টের বিস্তৃতি সাত হেক্টরেরও বেশি এলাকা জুড়ে। এর শতকরা ৭৫ (পচাত্তর) ভাগে ইউক্যালিপটাস, মেহেগুনি, অর্জুন, জাম, পিঠালী, কদম প্রভৃতি গাছে ভর্তি। আর সেখানেই বাসা বেঁধেছে রয়েছে এই অচেনা অতিথির দল।
আরও পড়ুন-কবে হচ্ছে উচ্চমাধ্যমিকের টেস্ট, পরীক্ষার দিনক্ষণ বেঁধে দিয়ে বড় নির্দেশিকা সংসদের
মূলত জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত চলে বসবাস ও বংশ বিস্তার। গাছে গাছে পাখির বাসায় জন্ম নেয় নতুন খুদে অতিথি। এরপর নভেম্বর জুড়ে চলে নতুন পাখিদের উড়তে শেখার পালা। আর ডিসেম্বর মাস এলেই ধীরে ধীরে ফাঁকা হতে থাকে বাসা। ফাঁকা হয় আদিনাও। জাকিয়ে শীত পড়ার আগেই পরিযায়ীরা উড়ে যায় নতুন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। এদিকে পাখি সুমারীর পদ্ধতিতেও রয়েছে বিশেষ চমক। বিশেষ প্রক্রিয়াতেই চলে গণনা কাজ। আদিনার বিস্তৃত বনাঞ্চলে গাছ ধরে ধরে নির্দিষ্ট মার্কিং করে, চলে গননার কাজ। প্রথমে গাছের গায়ে নির্দিষ্ট নম্বর লিখে দিয়ে নথিভুক্ত করা হয় সংশ্লিষ্ট গাছের নাম ও পাখির বাসার সংখ্যা। এভাবের হাজারেরও বেশি গাছ ধরে ধরে পাখির বাসার হিসেব তৈরি হয়। এরপর তাঁর থেকে পৌছন হয় পাখির নির্দিষ্ট সংখ্যায়।
আরও পড়ুন-কর্তারপুরে ফটোশ্যুটের ঘটনায় বাড়ছে চাপ, বিতর্কের মুখে পড়ে ক্ষমা চাইলেন পাক মডেল
মালদহের আদিনা মূলক যে পরিযায়ীরা বাসা বাঁধে তা হলো ‘ওপেন বিল স্টক’। নভেম্বরে প্রকাশ্যে এসেছে পাখি সুমারীর ফল। যা দেখে অত্যন্ত আশাবাদী বন দপ্তর। জানা গিয়েছে, আদিনায় গননায় মিলেছে ৪(চার) হাজার ৬৩৫ টি পাখির বাসা। এছাড়াও মিলেছে ২৩ হাজার ১৭৫ টি পরিযায়ী পাখির হদিশ। এই ফল দেখে বন দপ্তর নিশ্চিত পছন্দের ‘ডেস্টিনেশন’ হিসেবে পরিযায়ীদের কাছে আকর্ষন বাড়ছে আদিনার। আর তাই আগামী দিনে পাখির উপযুক্ত পরিবেশ রক্ষায় বাড়তি নজর দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন, মালদহের বিভাগীয় বনাধিকারিক। শুধু পাখির সংখ্যা বৃদ্ধিই নয়। পরিযায়ীদের ভিড় এভাবে বাড়লে আদিনা ফরেস্টকে ঘিরে পর্যটনেও আরও গতি আসবে বলে আশা স্থানীয়দেরও।