সংক্ষিপ্ত
বাবুলের শপথ ইস্যুতে ফের বিতর্কে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। বিধানসভার তিনবারের অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে পাশ কাটিয়ে উপাধক্ষ আশিষ বন্দ্য়োপাধ্যায়কে বাবুূলের শপথ পড়ানোর ক্ষমতা দিলেন রাজ্যপাল।
বাবুলের শপথ ইস্যুতে ফের বিতর্কে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তার সঙ্গে অধ্যক্ষের দৌরথের ছায়া পড়ল বাবুলের শপথে রাজ্যপালকে তাঁর সাংবিধানিক সীমারেখা মনে করানো অধ্যক্ষকে কার্যত ঘুরিয়ে পৃথক পথে হাঁটলেন রাজ্যপাল। বিধানসভার তিনবারের অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে পাশ কাটিয়ে উপাধক্ষ আশিষ বন্দ্য়োপাধ্যায়কে বাবুূলের শপথ পড়ানোর ক্ষমতা দিলেন।
ক
টুইট করে নিজের সিদ্ধান্ত ইতিমধ্য়েই জানিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। শনিবার টুইট করে রাজ্যপাল লেখেন, 'ভারতের সংবিধানের ১৮৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আমার ক্ষমতা ভিত্তিতে, উপাদক্ষ আশীষ বন্দ্য়োপাধ্যায়কে আমি দায়িত্ব দিলাম। তার কাছ থেকে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ১৬১ নম্বর বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে জয়ী বাবুল সুপ্রিয় শপথ গ্রহণ করবেন।' এর আগে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়-সহ তিন বিধায়কের শপথ পড়ানোর ক্ষেত্রে ঠিক একইভাবে উপাদক্ষকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সরকারের তরফে তা নিয়ে আপত্তি জানানো হয়। বিধানসভার সচিবালয় সূত্রে খবর, এবারও তাঁদের পক্ষ থেকে একই আপত্তির কথা জানিয়ে দেওয়া হতে পারে।
আরও পড়ুন, ঘনিষ্ঠভাবে দেখে ব্ল্যাকমেল, ভিডিও ভাইরালের হুমকি দিয়ে নাবালিকাকে লাগাতার গণধর্ষণ বোলপুরে
অপরদিকে, বাবুল সুপ্রিয় টুইট করে বলেছেন,বালিগঞ্জ কেন্দ্রের মানুষদের খাতিরে বলছি, সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণের পর গত কয়েকমাস ধরে বিধায়কবিহীন। তাই আপনার কাছে একান্ত অনুরোধ, আপনার সিদ্ধান্ত বদলে দিন। মহামান্য স্পিকারকেই শপথের দায়িত্ব দিন। যাতে আমি দ্রুত বিধায়ক হিসেবে কাজ শুরু করতে পারি।'এদিকে বাবুল সুপ্রিয়-র শপথের অনুমতি দেওয়া নিয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের প্রশ্ন অমূলক। এর সঙ্গে শপথের কোনও সম্পর্ক নেই। নবান্নের পরিষদীয় দফতরে যে নোটটি পাঠিয়েছিল রাজ্যপাল, সেই ফাইল বিধানসভার সচিবালয়ে পাঠিয়েছে নবান্ন। উল্লেখ্য, সম্প্রতি রাজ্যের প্রয়াত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের আসনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন বিজেপি ছেড়ে আসা তৃণমূল প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়। একসময়ের বাবুলকে সমর্থন করা রাজ্যপাল এখন উল্টোসুর গাইছেন বলে কটাক্ষ রাজ্যের শাসকদলের।
প্রসঙ্গত, যদিও বিজেপির মন্ত্রী থাকাকালীন বাবুলের প্রতি রাজ্যপালের উপস্থিতি পুরোপুরিই আলাদা ছিল। কারণ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে যেবার তুমুল গন্ডোগোলের মধ্যে পড়ে তৎকালীন বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়, সেই বিপদকালীন অবস্থায় তাঁকে উদ্বার করতে নিজে এসেছিলেন রাজ্যপাল। তবে বিজেপি বিয়োগের পর, তারপর আবার বালিগঞ্জ বিধানসভা জয়ে বিজেপির চক্ষুশূল এখন তাঁদের প্রাক্তন সহকর্মী তথা রাজ্যের প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। আর এবার তৃণমূল জয়ী বিধায়ক বাবুলের শপথেই কার্যত বাধা হয়ে দাঁড়ালেন রাজ্যপাল। বাবুলের শপথ ঘিরে শুরু হয়েছে নজিরবিহীন জটিলতা। তৃণমূলের অভিযোগ, এর মূলে রয়েছেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
আরও পড়ুন, আজ কি ফের ঝড়-বৃষ্টি কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে ? কী বলছে হাওয়া অফিস
এদিকে রাজ্য ও রাজ্যপালের সংঘাত শুরু। আর তাতেই বিপাকে পড়লেন বালিগঞ্জের নতুন বিধায়ক বাবুল সুপ্রিয়। কারণ বাবুল সুপ্রিয়র শপথ গ্রহণ সংক্রান্ত ফাইল ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। উল্টে তিনি তলব করেন বিধানসভার সচিবকে। পাশাপাশি রাজ্যপাল বলেছেন বাবুল সুপ্রিয়কে শপথবাক্য পাঠ করানোর আগে তাঁর কিছু শর্ত রয়েছে। রাজ্যপালের এই জাতীয় মনভাবের কারণ স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্য়ায় যাতে বাবুল সুপ্রিয়কে শপথ বাক্য পাঠ করাতে পারেন তার সেই সংক্রান্ত একটি ফাইলও রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কাছে পাঠান হয়েছিল। কিন্তু সেটিও নাকি রাজ্যপাল ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছেন বলে খবর। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্য়োপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে বলেছেন, 'কোনও বিধায়ককে শপথবাক্য পাঠ করানো শর্তের ওপর নির্ভর করতে পারে না। বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, 'বিধাককে শপথবাক্য পাঠ করানো রাজ্যপালের সাংবাধানিক দায়বদ্ধতার মধ্য়ে পড়ে।'