সংক্ষিপ্ত

  • হাবড়ার স্কুলে অভিভাবকদের বিক্ষোভ
  • স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ
  • মানসিক চাপ দেওয়ার অভিযোগ প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে
  • মন্ত্রীর দ্বারস্থ হলেন অভিভাবকরা

ক্লাসে এসে পড়ুয়াদের দিয়ে গা, হাত, পা মাসাজ করান অঙ্কের শিক্ষক। সঙ্গে মোবাইলে গেমস খেলতে ব্যস্ত থাকেন তিনি। শুধু তাই নয়, নেশাগ্রস্ত অবস্থাতেও ক্লাসে আসার অভিযোগ রয়েছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ নিয়েই শনিবার বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন উত্তর চব্বিশ পরগণার হাবড়ার উদ্বাস্তু প্রাথমিক শিক্ষা নিকেতন স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকরা। তাঁদের আরও অভিযোগ, স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ছাত্রছাত্রীদের উপরে মানসিক নির্যাতন করছেন। 

হাবড়ার ওই প্রাথমিক স্কুলটিতে মূলত নিম্নবিত্ত পরিবারের ছাত্রছাত্রীরাই আসে। অভিযোগ, অমিত স্যার নামে স্কুলেরই এক পার্শ্বশিক্ষক ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে নিয়মিত গা, হাত, পা মাসাজ করান। মদ্যপ অবস্থাতেও স্কুলে আসেন তিনি। স্কুলের পড়ুয়াদের অভিযোগ, পড়া জিজ্ঞেস করতে বা বুঝতে গেলেও তা না করে মোবাইলে গেম খেলতেই ব্যস্ত থাকেন ওই শিক্ষক। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সুজাতা পালের মদতেই ওই শিক্ষক এমন আচরণ করেন বলে অভিযোগ পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের। বর্তমানে অভিযুক্ত ওই শিক্ষক পার্শ্বশিক্ষকদের আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন। এর পাশাপাশি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধেও একগুচ্ছ অভিযোগ রয়েছে অভিভাবকদের। 

অভিযোগ, স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সবসময়ই ছাত্রছাত্রীদের উপরে পড়াশোনা নিয়ে মানসিক চাপ তৈরি করেন। পরীক্ষায় ভাল ফল হবে না, এমন চাপও দেওয়া হয় তাদের। এই মানসিক চাপের ফলেই এ দিন পরীক্ষা চলাকালীন এক ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। হাবড়া হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে তার চিকিৎসা করাতে হয়। বেশ কিছুক্ষণ হাসপাতালে থাকার পর পরীক্ষা দেওয়ার জন্য স্কুলে ফেরানো হয় ছাত্রীকে। তাকে মনরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় হাসপাতালের তরফে।

অভিযোগ, ওই ছাত্রীকে হাসপাতাল থেকে যে প্রেসক্রিপসন দেওয়া হয়েছিল, তা ফেলে দেন প্রধান শিক্ষিকা। বিষয়টি নজরে আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন অভিভাবকরা। তাঁদের আরও অভিযোগ, ওই প্রধান শিক্ষিকা স্কুলের মিড ডে মিলের রাঁধুনিকে দিয়ে তাঁর বাড়ির রান্না করিয়ে নেন। বাচ্চাদের জন্য বরাদ্দ ডিমও নিয়মিত দেওয়া হয় না। 

এই সমস্ত অভিযোগ নিয়ে এ দিন মন্ত্রী এবং স্থানীয় বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান অভিভাবকরা। স্কুল নিয়ে যাবতীয় অভিযোগ শিক্ষা দফতরকে জানানোর কথা বলেছেন খাদ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি তিনি বলেন, 'এই স্কুলে যারা পড়তে আসে তাদের অধিকাংশই খুব গরিব পরিবারের। প্রধান শিক্ষিকাকে সচেতন করতে হবে। কোনও ছাত্রছাত্রীর উপরে মানসিক চাপ তৈরি যাবে না। প্রধান শিক্ষিকা শোধরানোর সময় দিচ্ছি। মিডে ডে মিলের বিষয়ে আমরা অত্যন্ত কঠোর। খাবারের মান বজায় রাখতেই হবে। এর জন্য মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী অনেক টাকা বরাদ্দ করেছেন।'

এ ছাড়াও মদ্যপ অবস্থায় স্কুলে আসা এবং ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে মাসাজ করানোর অভিযোগেও কড়া বার্তা দিয়েছেন জ্যোতিপ্রিয়বাবু। তিনি বলেন, 'নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর জন্য জেলা স্কুল পরিদর্শক আছেন। আমার কাছেও অভিযোগ দিলে  বিষয়টি শিক্ষামন্ত্রীর নজরে আনব।' এ নিয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকার কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।