সংক্ষিপ্ত

পশ্চিমবঙ্গে কেন্দ্রীয় প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যাপক দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। 
 

নয়া দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাসভবনে ইতিমধ্যেই ৪০ মিনিটের দীর্ঘ বৈঠক সেরে ফেলেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের বকেয়া প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকা মিটিয়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন মমতা। তবে, তাঁর দিল্লিতে যাওয়াকে ‘সেটিং’ বলে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। আর এবার, তাঁর দাবির বিরুদ্ধে গিয়ে রাজ্যের ব্যাপক আর্থিক তছরুপ সম্পর্কে অবহিত করে নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। 

চিঠির শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর কুশল সংবাদ নিয়ে তিনি লেখেন, আশা করি আপনি ভাল আছেন এবং আপনার স্বাস্থ্যের যত্ন নিচ্ছেন। পশ্চিমবঙ্গে কেন্দ্রীয় অনুদানের অপব্যবহার সম্পর্কে আমি আপনাকে অবহিত করতে চাই। রাজ্যে বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক প্রদত্ত তহবিল বিশেষ করে MGNREGA, PMAY (প্রধান মন্ত্রী আবাস যোজনা) এবং PMGSY (প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা)-এ অর্থ বিনিয়োগ করা হয়। জনকল্যাণের জন্য কেন্দ্র সরকারের এই স্কিমগুলির মাধ্যমে গৃহীত অর্থ দুর্নীতিগ্রস্ত কার্যকলাপ এবং প্রতারণার মাধ্যমেই খরচ হয়ে যাচ্ছে। কেন্দ্র সরকারের কাছে টাকা খরচ হওয়ার মিথ্যা শংসাপত্র পাঠানো হয়েছে। 


তিনি অভিযোগ তোলেন, এই প্রকল্পগুলির কোটি কোটি টাকা রাজ্য সরকার হাতিয়ে নিচ্ছে। MGNREGA তহবিলের জন্য হাজার হাজার হেক্টর জমির হিসেব দেখানো হচ্ছে, কিন্তু বাস্তবে এর কাজ এখনও অনেক দূরে। রাজ্যের তরফ থেকে এটি দাবি করা হচ্ছে যে, ইয়াস এবং আম্ফান বা অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো ঘূর্ণিঝড়ে গাছপালা ধুয়ে গেছে। এমনকি প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা গাছপালাগুলি
MGNREGA-এর অধীনে তৈরি উদ্ভিদ রোপণ হিসাবে দেখানো হয়েছে। পঞ্চায়েত অঞ্চলের অধীনে এমন উদাহরণ সহজেই লক্ষ্য করা যায়। 


নরেন্দ্র মোদীকে শুভেন্দু অধিকারী সোজাসুজি জানান, এইসব খাতে নিয়োজিত কেন্দ্রীয় অর্থের ব্যক্তিগত সুবিধাভোগী যারা ছিলেন, তাঁরা অধিকাংশই ক্ষমতাসীন দল থেকে নির্বাচিত সদস্য।

তছরুপের সম্ভাবনা থাকা প্রায় ১৫কোটি ৫০ লক্ষ ১৭৩৫০ টাকার হিসেব স্পষ্ট করে দিয়ে বিজেপি নেতার দাবি, পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে MGNREGA-কে একটি অর্থ মিন্টিং স্কিমে পরিণত করেছে ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা। রাজ্যে দরিদ্র জব কার্ডধারীদের কাজ করিয়ে নিয়ে ঠিকমতো বেতন দেওয়া হয় না, অথবা তাদের কার্ড কেড়ে নেওয়া হয় এবং এই ধরনের দুর্নীতিবাজদের কাছে সেই কার্ড রেখে দেওয়া হয়।  এখনও পর্যন্ত, কেন্দ্রীয় দলগুলি পশ্চিমবঙ্গের কিছু পঞ্চায়েতে সমীক্ষা চালিয়েছে। পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিরা ও কর্তৃপক্ষরা এ বিষয়ে বেশ নার্ভাস। 

প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই তছরুপের সুবিচার চেয়ে শুভেন্দু আর্জি জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও তার প্রশাসন কেন্দ্রীয় প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় ও নিয়ম মেনে চলতে অনিচ্ছুক। অনেক ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নামও পরিবর্তন করে দেওয়া হচ্ছে, গ্রাম্য মানুষের কাছে ভুল তথ্য প্রচার করে দেওয়া হচ্ছে। তাই আপনার কাছে আমার অনুরোধ, সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ দিয়ে বড়সড় পর্যবেক্ষণ পরিচালনা করার জন্য আরও কেন্দ্রীয় দল প্রেরণ করুন যাতে রাজ্যে কেন্দ্রীয় তহবিলের প্রকৃত অপব্যবহার উদ্ঘাটন হয়। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এই বিরাট পরিমাণ অপব্যবহার পুরো দেশকে হতবাক করে দেবে।

আরও পড়ুন-
'প্রতি দুমাস অন্তর অন্তর ক্যাবিনেট রিশাফল হবে, এত উইকেট পড়বে' মন্তব্য শুভেন্দু অধিকারী'র
সিএএ কার্যকরের দাবি থেকে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি-শুভেন্দু অমিত শাহ বৈঠকে উঠল একাধিক ইস্যু
রক্ষাকবচ মজবুত করতেই কি দিল্লি গেলেন শুভেন্দু? আজ অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা