সংক্ষিপ্ত

ভ্রমণে এসেই বাঘের দেখা পেলেন পর্যটকরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের সজনেখালি রেঞ্জের পিরখালি ৫ নম্বর জঙ্গলে দেখা গেল বাঘবাহাদুরকে।

এ যেন মহারাজার (Royal Bengal Tiger) রাজকীয় দর্শন। মরশুমের শুরুতেই সুন্দরবনে (Sunderban) বাঘের দর্শন পেলেন পর্যটকরা(Tourists)। জঙ্গলের (Forest) মহারাজের দেখা পেয়ে আহ্লাদে কার্যত আটখানা সেখানকার পর্যটকরা। শীতের আমেজ অনুভূত হচ্ছে গত কয়েকদিন ধরেই। আর হালকা শীতের ওম গায়ে মেখে ভ্রমণ পিপাসু বাঙালি বেড়িয়ে পড়েছে এদিক ওদিক। হাতের কাছে ছোট্ট ছুটির ফাঁকে ঘোরার জায়গা বলতে প্রথমেই যার নাম মাথায় আসে, তা হল সুন্দরবন। জল-জঙ্গল-খাঁড়ির জগতে পর্যটকরা লুটে নেন নৈসর্গিক দৃশ্যের সুখানুভূতি। 

তাই এখন সুন্দরবন ভ্রমণে বেড়িয়ে পড়েছেন বহু পর্যটক। আর ভ্রমণে এসেই বাঘের দেখা পেলেন পর্যটকরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের সজনেখালি রেঞ্জের পিরখালি ৫ নম্বর জঙ্গলে দেখা গেল বাঘবাহাদুরকে। দোবাঁকি খালের কাছে বাঘের দেখা পান কলকাতা থেকে আগত ১১ সদস্যের পর্যটক দলটি। অবলীলায় সাতার কেটে পাড়ে উঠলেন তিনি। তারপর হেলতে দুলতে চললেন জঙ্গলের দিকে। সুন্দরবন বেড়াতে এসে বাঘের দেখা পেয়ে ভীষণ খুশি পর্যটকরা।

তবে বাঘের উপস্থিতি সবসময় আনন্দদায়ক হয় না। দিন কয়েক আগেই নদীতে কাঁকড়া ধরে নৌকায় শুয়ে গল্প করছিলেন তিন মৎস্যজীবী। সুন্দরবনের জঙ্গল থেকে বাঘ বেরিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ল নৌকায়। মৎস্যজীবী লক্ষ্মীন্দর সাপুই-এর মাথায় কামড় বসিয়ে জঙ্গলে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বাঘটি। কিন্তু অপর দুই সঙ্গী লাঠি, বৈঠা নিয়ে সঙ্গীকে বাঁচাতে বাঘের দিকে তেড়ে যায়। শেষে শিকার ছেড়ে জলে ঝাঁপিয়ে সাঁতরে জঙ্গলে চলে যায় বাঘ। জীবন বাঁচে লক্ষ্মীন্দরের। 

তেসরা নভেম্বরও মৎস্যজীবীর ওপরে বাঘের হামলার ঘটনা ঘটেছিল। বছর বাহান্নর মৃত ওই ব্যাক্তির নাম শ্রীনিবাস মন্ডল। বাঘের সঙ্গে লড়াই করে সঙ্গীকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন সহযোগী মৎস্যজীবীরা। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিন ২৪ পরগনার সুন্দরবনের ঝিলার জঙ্গলে। 

NSA Meet-স্থিতিশীল আফগানিস্তান তৈরির পক্ষে একজোট সাত দেশ, নেতৃত্বে নরেন্দ্র মোদী

Terrorists Killed- সাফল্যের তালিকা, চলতি বছরে সেনা-সিআরপিএফের হাতে খতম ১৩৮ জঙ্গি

মৈপীঠ কোস্টাল থানার কিশোরী মোহনপুরের বাসিন্দা শ্রীনিবাস মন্ডল। তাঁর বয়েস হয়েছিল ৫২ বছর । সোমবার দুই সঙ্গীকে নিয়ে কিশোরীমোহনপুরের ঘাট থেকে নৌকায় করে সুন্দরবনের জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে রওনা দেন তিনি। এমনই সময় অজান্তেই বাঘ এসে শ্রীনিবাসের ঘাড়ে আক্রমণ করে। আর্তনাদে মুহূর্তেই ভেঙে যায় নিস্তব্ধতা। 

দুই সঙ্গী তাঁদের বন্ধুকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করে। এবং বাঘের সঙ্গে লড়াই করে শ্রীনিবাসকে শেষ অবধি ছাড়িয়ে নিয়ে আসলেও তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। বাঘের হামলায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হয় শ্রী নিবাসের। যার ফলে মৃত্যু হয় তাঁর। তবে বাঘের হামলায় মৃত্যু প্রথমবার নয়, চলতি বছরে একের পর এক জলজ্যান্ত উদাহরণ রয়েছে। তবুও প্রাণের দায়ে সেই জীবনের ঝুকি নিয়ে একই পথে সুন্দরবনবাসী।