টেনে হিঁচড়ে বের করে আনা হল বাড়ির বাইরেতারপর বিবস্ত্র করে ঘোরানো হল গোটা গ্রামফের বাংলায় যৌন হেনস্থার শিকার আদিবাসী মহিলারাজস্থান বা উত্তরপ্রদেশের মতো ঘটনা এখন ঘটছে এই রাজ্যেও

আদিবাসী বা দলিত মহিলাদের উপর এই ধরণের হামলার ঘটনা আগে রাজ.স্থান বা উত্তরপ্রদেশ থেকে শোনা যেত। ক্রমে পশ্চিমবঙ্গেও বাড়ছে আদিবাসী মহিলাদের উপর আক্রমণ। মালদার হবিবপুরে দুই আদিবাসী যুবতীর ধর্ষণের অভিযোগের পর এবার এক আদিবাসী মহিলাকে বাড়ি থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করে, তাঁকের বিবস্ত্র করে ঘোরানো হল গোটা গ্রাম। আর, এই বর্বরোচিত ঘটনার পুরোটাই আবার রেকর্ড করা হল ক্যামেরায়। এমমনই গুরুতর অভিযোগ উঠেছে আলিপুরদুয়ারে। এই ঘটনায় অভিযোগে আঙুল অন্তত ১১ জন গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে। এরমধ্যে ছয়জনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার, ৯ জুন, আলিপুরদুয়ার জেলার কুমারগ্রাম থানার অন্তর্গত এক গ্রামে। তবে রবিবারের আগে পর্যন্ত ঘটনার কথা জানা যায়নি। রবিবারই এই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আর তারপরই পুলিশ-প্রশাসন ঘটনাটি সম্পর্কে জানতে পেরেছিল। কিনতু, কেন এমন হেনস্থা করা হল ওই মহিলাকে? স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মহিলার বিরুদ্ধে মাস ছয় আগে তাঁর স্বামীকে এক বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে ছেড়ে চলে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। গত সপ্তাহেই তিনি স্বামীর কাছে ফিরে এসেছিলেন। এরপরই বুধবার রাতে কয়েকজন গ্রামবাসী তার বাড়িতে ঢুকে, তাকে টেনে হিঁচড়ে বাইরে বার করে আনে। তারপর, তাঁর উপর চলে অশালীন নির্যাতন। শেষে তাকে বিবস্ত্র করে গোটা গ্রাম ঘোরানো হয়।

Scroll to load tweet…

ঘটনার পরই মহিলা ওই এলাকা থেকে বেপাত্তা হয়ে যান। এই ঘটনা নিয়ে কেউই পুলিশে অভিযোগ জানায়নি। ঘটনার ভিডিও সামনে আসার পর, পুলিশ নিজে থেকেই এই বিষয়ে সক্রিয় হয়। মহিলার স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, মহিলার বাপের বাড়ি অসমে। সেখান থেকে পুলিশ তাঁকে কুমারগ্রামে ফিরিয়ে আনে। অনেক বোঝানোর পর ওই মহিলা, তাঁর স্বামীর উপস্থিতিতে ঘটনার বিষয়ে একটি এফআইআর দায়ের করেন। পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে, হত্যার চেষ্টা-সহ ভারতীয় দণ্ডবিধির বেশ কয়েকটি ধারায় মামলা দায়ের করছে। রবিবার এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার ৬ জনকে ১২ দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন - রহস্য বাড়ছে ধৃত চিনা যুবককে ঘিরে - শরীরে কি লুকোনো গোপন যন্ত্র, হবে বডিস্ক্যান

আরও পড়ুন - 'দিদিমনির কাছে কাননের স্থান কখনই বদলাবে না', জল্পনা উসকে পার্থ-র বাড়িতে শোভন-বৈশাখী

আরও পড়ুন - শুভেন্দুর আহ্বানে সাড়া দিলেন না বিজেপির ২৪ বিধায়ক - তৃণমূল-মুখী স্রোতের ইঙ্গিত, না অন্যকিছু

পুলিশের দাবি, এই ঘটনার পিছনে কোনও সালিশি সভার ভূমিকা নেই। ওই মহিলা যে জনজাতি গোষ্ঠীর, সেই একই সম্প্রদায়ের কয়েকজন যুবক আচমকাই এই হামলা চালিয়েছে। ইতিমধ্যেই বিজেপি-সহ বেশ বিরোধীরা প্রশাসনের বিরুদ্ধে 'নীরবতা' এবং 'নিষ্ক্রিয়তা'র অভিযোগ এনেছে। পুলিশের অবশ্য দাবি, কেউ কেউ ঘটনাটিকে ভুলভাবে উপস্থাপন করছেন। তাদের বিরুদ্ধে আলাদাভাবে আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় তৃণমূল নেতা ধীরেশ রায়, এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে দোষীদের কঠোরতম শাস্তির দাবি করেছেন।