সংক্ষিপ্ত
সোমবার তৃণমূলের নির্বাচিত সদস্যদের হাতেই অনাস্থা ভোটে হারতে হল পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তথা তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতিকে।
পঞ্চায়েত(Panchayat Member) সমিতির সহ-সভাপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতির(Corruption) অভিযোগ উঠছিল অনেকদিন আগে। যা নিয়ে উত্তেজনা বাড়ে শাসক দলের অন্দরে। পরবর্তীতে দফায় দফায় বৈঠক করেও ড্যামেজ কন্ট্রোল আটকাতে পারেননি পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল(trinamool) নেতৃত্ব। অবশেষে সোমবার তৃণমূলের নির্বাচিত সদস্যদের হাতেই অনাস্থা ভোটে হারতে হল পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তথা তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের আইএনটিটিইউসি-র(INTTUC) জেলা সভাপতিকে। ঘটনা পুরুলিয়ার(Purulia) আড়ষা পঞ্চায়েত সমিতির। যা নিয়ে জোরদার আলোচনা শুরু হয়েছে পুরুলিয়ার রাজনৈতিক শিবিরের অন্দরে।
পুরুলিয়ার আড়ষা পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তথা তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি উজ্জ্বল কুমারের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে গত ২৭ অক্টোবর আড়ষা ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের কাছে অনাস্থা প্রস্তাব জমা করেন দলের ১২ জন সদস্য। সোমবার দুপুরে ছিল তার তলবী সভা। সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে সন্ধের মুখেও এই অনাস্থা নিয়ে ছিল উত্তেজনা। আড়শা ব্লক অফিস চত্বরে তাই ১৪৪ ধারা জারি করে ব্লক প্রশাসন। নির্দিষ্ট সময়ের প্রায় ২ ঘণ্টা আগেই প্রস্তাবের পক্ষে থাকা ১২ জন সদস্য ব্লক অফিসের সভা কক্ষে চলে আসেন। তার কিছু সময় আরও পরে আরও ১ জন সদস্য এই সভায় যোগ দেন। নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও আর কোনও সদস্য না আসায় সভায় উপস্থিত সব সদস্য-সদস্যারা অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে মত দেন।
আরও পড়ুন-SSC-র পর TET কাঁটা, দ্রুত রেজাল্ট বের করার দাবিতে এপিসি ভবনের সামনে বিক্ষোভ পরীক্ষার্থীদের
বর্তমানে আড়ষা পঞ্চায়েত সমিতির মোট সদস্য সংখ্যা ২৩।এই মুহূর্তে তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য সংখ্যা ২০, বিজেপি ২, কংগ্রেস ১। তৃণমূলের ১২ জন সদস্য-সদস্যা লিখিত ভাবে অনাস্থা প্রস্তাব জমা করেন। ১২ জন ছাড়াও দলের আরও ১ জন মোট ১৩ জন আজকের সভায় উপস্থিত ছিলেন। বাকি সভাপতি সহ ৭ জন সদস্য আজকের তলবী সভায় উপস্থিত হননি। এছাড়াও বিজেপির ২ ও কংগ্রেসের ১ সদস্য আজকের সভায় অনুপস্থিত ছিলেন। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই দলের সদস্যরা আলোচনা করে নতুন সহ-সভাপতির নাম ঘোষণা করবেন।
আরও পড়ুন - ভাঙন অব্যহত বিরোধী শিবিরে, বিজেপি-কংগ্রেস-সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেড় হাজার কর্মীর
এদিকে সোমবারের অনাস্থা সভায় উজ্জ্বল কুমারের লোক জন হামলা করতে পারে আশঙ্কা করেন অন্যান্য তৃণমূল নেতারা। অনাস্থা ভোট বানচাল করতেই এই কাজ করা হতে পারে বলে জানান তারা। এমনকী অনেকের প্রাণ হানিও হতে পারে তৃণমূলের একাংশের নেতারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন।আর ঠিক সেই কারণেই গত ১৭ই নভেম্বর তাই পর্যাপ্ত নিরাপত্তা চেয়ে সদর মহকুমা শাসক এবং পুলিশ সুপারের কাছে দরবার করেন তারা। যার জেরে বেশ চাপে পড়ে পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল কংগ্রেস। বিষয়টি নিয়ে নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া করে ড্যামেজ কন্ট্রোল করার চেষ্টা চালান ঘাসফুল শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্ব। প্রবল চেষ্টা করা হলেও কিন্তু শেষ মুহূর্তে অনাস্থা ভোটের পথে হাঁটেলেন তৃণমূল কংগ্রেস থেকে নির্বাচিত সদস্য সদস্যারা। আর যার জেরে পদ থেকে সরে যেতে হল পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তথা তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি উজ্জ্বল কুমারকে।