সংক্ষিপ্ত
ইংরেজবাজার, মাটিয়া, দেগঙ্গা, এবং বাঁশদ্রোণীতে ঘটে যাওয়া নৃশংশ চার ধর্ষণকাণ্ডে আদালতে রিপোর্ট পেশ করল রাজ্য। তদন্তের অগ্রহতি সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে বলে খবর।
ইংরেজবাজার, মাটিয়া, দেগঙ্গা, এবং বাঁশদ্রোণীতে ঘটে যাওয়া নৃশংশ চার ধর্ষণকাণ্ডে আদালতে রিপোর্ট পেশ করল রাজ্য। তদন্তের অগ্রহতি সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে বলে খবর। পাশাপাশি দময়ন্তি সেনের তরফ থেকে তদন্ত আধিকারিকদের একাধিক নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তা লেখা রয়েছে রিপোর্টে। উল্লেখ্য, ইংরেজবাজার, মাটিয়া, দেগঙ্গা, এবং বাঁশদ্রোণী ধর্ষণকাণ্ডে কলকাতা হাইকোর্ট জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল। ১২ এপ্রিল চারটি মামলার এক সঙ্গে শুনানি হয় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে। সেখানে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব বলেন,'আমরা প্রতিটা ঘটনার দিকে নজর দিচ্ছি। যদিও কোনও ঘটনায় আলাদা কের এজেন্সি বা বিচারপতির নের্তৃত্বে তদন্তের প্রয়োজন হয়, সেটা আমরা করব। আগে দিল্লি বা দেশের অন্য কোনও জায়গা থেকে এই ধরণের অভিযোগ পাওয়া যেত।'
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে রাজ্যের ৪টি ধর্ষণ মামলার তদন্তভার নিয়েছেন কলকাতা পুলিশের স্পেশাল কমিশনার দময়ন্তী সেন। ইতিমধ্যেই ধর্ষণকাণ্ডগুলির তদন্তের অগ্রগতি জানতে তৎপরতা শুরু। একেদিকে রাজ্য পুলিশের উপর ভরসা না পেয়ে মাটিয়া, হাঁসখালি ধর্ষণকাণ্ডের তদন্ত ভার সিবিআই-কে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেদিক থেকে দাঁড়িয়ে দেখতে গেলে, এই পরিস্থিতিতে দময়ন্তী সেনের উপর হাইকোর্টের ভরসা করাটা বেশ সম্মানের। ইতিমধ্যই গত শনিবার মালদহের ইংরেজ বাজার এবং দেগঙ্গা ধর্ষণকাণ্ডে তদন্তকারী মোট ৬ আধিকারিককে কলকাতায় তলব করেন দময়ন্তী সেন। সূত্রের খবর, ইংরেজ বাজার থানার আইসি আশীস দাস, তদন্তকারী অফিসার এবং এসডিপিও বা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মর্যাদার কোনও অফিসারকে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল কমিশনার দময়ন্তী সেনের দফতরে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়।সেখানে এই ধর্ষণকাণ্ড নিয়ে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
আরও পড়ুন, যৌন সঙ্গমের পরেই কি খুন, বীরভূমের কীর্ণাহারে বিধবা মহিলার দেহ উদ্ধার
প্রসঙ্গত, ২৪ মার্চ উত্তর ২৪ পরগণার বসিরহাটের মাটিয়াতে ১১ বছরের এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। উপহারের লোভ দেখিয়ে এক নির্জন জায়গায় তাঁকে ধর্ষণ করে এক যুবক। নির্যাতিতাকে ভর্তি করা হয় আরজিকর হাসাপাতালে। ১১ এপ্রিল তাকে ছাড়া হয়। পাশাপাশি ২৭ মার্চ মালদহের ইংরেজ বাজারে শোভাবাজার গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে এক প্রতিবেশি যুবকের বিরুদ্ধে।বাডডিতে ঢুকে মুখ হাত বেধে মুখে পিস্তল ঢুকিয়ে ধর্ষণ করা হয়। মাধ্যমিকের ওই ছাত্রীকে তারপর মালদহ মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়।অপরদিকে ২৮ মার্চ দেগঙ্গায় এক মহিলার অর্ধনগ্ন মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। অভিযোগ মদ খাওয়ানোর পর ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছে তাঁকে।পুলিশ মহিলার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থল থেকে মদের বোতল, জলের বোতল অনেকে কিছুই উদ্ধার করেছে দেগঙ্গার পুলিশ। চতুর্থ ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছে বাঁশদ্রোণীতে। ১৮ মার্চ দোলের দিন ১৩ বছরের এক কিশোরীকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ওই দিন বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছিল ওই কিশোরী। অভিযোগ পাড়ার দুই যুবকই তাকে ধরে একি বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানেই ধর্ষণ করা হয় তাঁকে।
আরও পড়ুন, 'আমাকে বলেছিল, ধর ওকে রেপ করব', হাঁসখালিকাণ্ডে সিবিআই-র কাছে এল ভয়াবহ তথ্য
রাজ্যের একের পর এক ধর্ষণের ঘটনায় জল গড়িয়েছে হাইকোর্টে। রাজ্যে অরাজোকতার অভিযোগ তুলে শাসকদলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য়ের ৪টি ধর্ষণ মামলায় তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই কমিটির নের্তৃত্বে রাখা হয়েছে দময়ন্তী সেনকেই। ২০১২ সালে পার্কস্ট্রিট গণধর্ষণ মামলায় তদন্ত করেছিলেন তিনি।সেই সময় তাঁর স্বচ্ছ ভাবমূর্তির প্রশংসা করেছিল অনেকেই। তবে ওই মামলার তদন্ত ঘিরেই রাজ্য সরকারের সঙ্গে দময়ন্তী সেনের চাপান উতোর তৈরি হয়েছিল। এমনকি তাকে কলকাতা পুলিশের পদ থেকে বদল করা হয়। দীর্ঘ সাতবছর পর আবার তিনি কলকাতা পুলিশে ফিরে এসেছেন। এখন তিনি কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল কমিশনার। পুলিশ ট্রেনিং ইন্সিটিউটের দায়িত্বে রয়েছেন।
আরও পড়ুন, রাজ্যে ১০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ, ২৫ হাজারেরও বেশি চাকরি, আদানির মুখে মমতার প্রশংসা