নদীয়া জেলার রানাঘাট এবং পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় বিজেপির উদ্যোগে বন্দেমাতরম গানের ১৫০ বছর পূর্তি উদযাপিত হলো। রানাঘাটের অনুষ্ঠানে তারকা নেতা মিঠুন চক্রবর্তীর উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো, যেখানে দেড়শ প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করা হয়। 

নদীয়া জেলার রানাঘাটে আয়োজিত হলো বন্দেমাতরম গানের ১৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান। শুক্রবার বিকেলে রানাঘাট এক নম্বর ব্লকের পরিমল ভবনে বিজেপির উদ্যোগে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এদিকে এগরায় “বন্দে মাতরম”— ভারত মাতার জয়গানে মুখরিত হল গোটা এলাকা। শুক্রবার সকাল থেকেই সাজসজ্জায় মোড়া এগরা ১ ব্লকের নেগুয়া গ্রাম। মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার এগরা ২ মণ্ডলের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হল বন্দেমাতরম সংগীতের ১৫০ তম বর্ষ উদযাপন উপলক্ষে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

রানাঘাটে অনুষ্ঠানের সূচনা হয় দেড়শ প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে। উদ্বোধন করেন নদীয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভানেত্রী অপর্ণা নন্দী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য রাজনীতির জনপ্রিয় মুখ তথা বিজেপির তারকা নেতা মহাগুরু মিঠুন চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানজুড়ে বিজেপি কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে ছিল প্রবল উদ্দীপনা ও উৎসাহের পরিবেশ। বন্দেমাতরমের ১৫০ বছর উপলক্ষে দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবাদের বার্তা ছড়িয়ে পড়ে গোটা প্রাঙ্গণে।

এছাড়াও এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রানাঘাট উত্তর-পশ্চিম কেন্দ্রের বিধায়ক পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়, জেলা নেতা অশোক বিশ্বাস, বঙ্কিম ঘোষ, অসীম বিশ্বাস সহ একাধিক নেতৃত্ব ও কর্মী। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মিঠুন চক্রবর্তী বলেন, “বন্দেমাতরম শুধুমাত্র একটি গান নয়, এটি ভারতের আত্মার প্রতীক। এই গান আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাস ও দেশপ্রেমের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে যুক্ত।”

এদিকে পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় অনুষ্ঠানের শুরুতেই নেগুয়া থেকে বড়োপুকুর পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার জুড়ে জাতীয় পতাকা হাতে পদযাত্রা করেন শতাধিক বিজেপি কর্মী, সমর্থক ও সাধারণ মানুষ। “ভারত মাতা কি জয়”, “বন্দে মাতরম”, “জয় শ্রী রাম” ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। স্থানীয় মানুষরাও রাস্তার দু’ধারে দাঁড়িয়ে অংশগ্রহণকারীদের অভিনন্দন জানান।

শোভাযাত্রা শেষে নেগুয়া ফাঁড়ির সামনে সাহিত্য সম্রাট ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মূর্তিতে মাল্যদান ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। বঙ্কিমচন্দ্রের সাহিত্য, তাঁর দেশপ্রেম ও বন্দেমাতরম রচনার ঐতিহাসিক তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা করেন উপস্থিত নেতৃবৃন্দ। বক্তৃতায় তাঁরা বলেন, “বঙ্কিমচন্দ্রের ‘বন্দেমাতরম’ কেবল গান নয়, এটি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রেরণার মন্ত্র।”

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এগরা ১ ব্লকের বিরোধী দলনেতা তাপস কুমার দে, এগরা ২ মণ্ডলের সভাপতি বিমল শীট, সহ-সভাপতি অরূপ দাশ, অমলেশ পাহাড়ি, স্বপন দত্ত, সুভাষ দাস, রামচন্দ্র আচার্য, বিমল সাউ, কমলেন্দু দাস মহাপাত্র প্রমুখ বিজেপি নেতৃত্ব। অনুষ্ঠান ঘিরে তৈরি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ। শোভাযাত্রার পথে দেশাত্মবোধক গান, ঢাক-ঢোলের তালে তালে মিছিল, পতাকার রঙে রাঙানো শহর — এক অনন্য দৃশ্যের সাক্ষী থাকল এগরা। রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে বহু সাধারণ মানুষও অংশ নেন এই দেশপ্রেমিক আয়োজনের সাক্ষী হতে।