CBI's chargesheet in recruitment corruption case:নিয়োগ দুর্নীতি (Job scam) মামলার চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই (CBI)। সেখানে বলা হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষক (SSC) নিয়োগ-সহ একাধিক সরকারি চাকরির নামে পরীক্ষার্থীদের থেকে টাকা তোলা হয়েছে। 

CBI's chargesheet in recruitment corruption case:নিয়োগ দুর্নীতি (Job scam) মামলার চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই (CBI)। সেখানে বলা হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষক (SSC) নিয়োগ-সহ একাধিক সরকারি চাকরির নামে পরীক্ষার্থীদের থেকে টাকা তোলা হয়েছে। সেই টাকা গিয়েছে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের হাতে। চার্জশিটে সতটি উপায় প্রমাণ লোপাটের কথাও বলা হয়েছে। সিবিআই-এর জমা দেওয়া চার্জশিটে বলা হয়েছে কালীঘটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র নিজেই প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছিলেন। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তৃতীয় অতিরিক্ত চার্জশিটে প্রমাণ লোপাটের ৭টি কারণের কথা উল্লেখ করেছে সিবিআই।

এজেন্ট মারফত টাকা

চার্জশিটে সিবিআই জানিয়েছে, প্রাথমিক শিক্ষক থেকে শুরু করে এসএসসি বা বিভিন্ন সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে চাকরি প্রার্থীদের থেকে টাকা তোলা হয়েছে। কোটি কোটি টাকা গিয়েছে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের হাতে। সিবিআই চার্জশিটে আরও বলেছে, টাকা তোলার পর যাদের চাকরি হয় তাদের কিন্তু টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি। সিবিআই চার্জশিটে আরও বলেছে, টাকা তোলার জন্য একাধিক এজেন্ট ব্য়বহার করা হয়েছে। যাদের মধ্যে রয়েছে, কুন্তল ঘোষ, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্য়ায়, অরুণ হাজরার মত অভিযুক্তরা।

তৃতীয় অতিরিক্ত চার্জশিট

সিবিআই তৃতীয় অতিরিক্ত চার্জশিটে উল্লেখ করেছে কী করে প্রমাণ লোপাট করা হয়েছে। সিবিআই চার্জশিটে দাবি করেছে গোটা ঘটনায় নাটের গুরু ছিলেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। তেমনই বলছে সূত্র।

ডায়েরিতে আগুন

নিয়োগ দুর্নীতির চার্জশিটে সিবিআই উল্লেখ করেছে তথ্য প্রমাণ লোপাটের জন্য ডায়েরিতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রমাণ হিসেবে সিবিআই সুজয়কষ্ণ ভদ্রের এক অনুগামীর কথা উল্লেখ করেছে। সেখানেই সেই অনুগামী দাবি করেছে, চাকরি প্রার্থীদের থেকে টাকা পেলে তা একটি ডায়েরিতে লিখে রাখত সে। এমনই একাধিক ডায়েরি ছিল। কিন্তু সেই ডায়েরি সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের নির্দেশে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যদিও চার জন এজেন্টের কাছে এমনই ১০টি ডায়েরি উদ্ধার করেছে সিবিআই। তাতে প্রার্থীদের নাম ও টাকা দেওয়ার তারিখের উল্লেখ রয়েছে। পাশাপাশি টাকার পরিমাণও রয়েছে। যা নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি।

ঘুষের ভিডিও গায়েব

চাকরির জন্য ঘুষ নেওয়ার ভিডিও রেকর্ডিং করা হয়েছিল। সেই কথা জানতে পেরেছিল সিবিআই। যদিও সেই ভিডিও ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে। এখানেই নাটের গুরু সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। সাক্ষী জানিয়েছে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের নির্দেশেই তিনি সেটি ডিলিট করে দেন।

মোবাইল গঙ্গায়

এক সাক্ষীর বয়ান অনুযায়ী একবার ঘুষের ভিডিও সুজয়কৃষ্ণের হাতে তুলে দেওয়ার সময় তিনি লুকিয়ে সেটির ভিডিও করেছিলেন। পরে প্রার্থীর চাকরি না হওয়ায় সেই ভিডিও ফাঁস করার হুমকি দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরই তাঁর পরই তাঁর ফোনটি কেড়ে নিয়ে সুজয়কৃষ্ণ আদি গঙ্গায় ফেলে দেয়।

হার্ডডিস্ক গায়েব

মমালার আরও এক সাক্ষী জানিয়েছেন, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের নির্দেশেই তিনি নিজের ল্যাপটপে টাকা দেওয়া চাকরি প্রার্থীদের তালিকা তৈরি করে রাখতেন। সেখানে প্রায় ২ হাজার প্রার্থীর নাম ছিল। তিনি আরও বলেছেন, সেই ল্যাপটপের হার্ডডিস্কে সমস্যা হয়। পরে ফরম্য়াট করেই সেই তথ্য আর উদ্ধার করতে পারেননি।

মোবাইল নথি

লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের এক মহিলা কর্মী জানিয়েছিলেন, একাধিক এজেন্টের ইমেল আসত তাঁর কাছে। সুজয়কৃষ্ণের নির্দেশে সেগুলি প্রিন্ট করে দিতেন। কিন্তু পরে একজনের হুমকিতে তাঁকে তাঁর মোবাইল থেকে যাবতীয় চ্যাট মুছে ফেলতে হয়। তাঁকে প্রাণে মেরে দেওয়ার হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয়েছিল।

ইমেল অ্য়কাউন্ট বন্ধ

প্রার্থীদের নাম, টাকা দেওয়া-নেওয়ার নির্দেশ ইত্যাদি বেশির ভাগই ইমেলে পাঠানো হত। একাধিক সাক্ষী জিজ্ঞাসাবাদের মুখে ইমেল মুছে দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। সুজয়কৃষ্ণ নিজের ইমেল অ্যাকাউন্টও বন্ধ করে দিয়েছিলেন।

সিসিটিভি বন্ধ

এক সাক্ষী জানিয়েছেন, চাকরি প্রার্থীদের ঘুষের টাকা দিতে তিনি লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসে যেতেন। সেখানে এক মহিলা কর্মী আগেই তাদের আসর কথা সুজয়কৃষ্ণকে জানাতে। তারপর কালীঘাটের কাকুর নির্দেশ পেলে তবেই চেম্বারে ঢুকতেন। সেই সময় সমস্ত সিসিটিভি বন্ধ করে দেওয়া হত।