Digha Jagannath Temple News: আগামী ৩০ এপ্রিল মন্দির উদ্বোধন ও জগন্নাথের প্রাণপ্রতিষ্ঠা। তার আগের দিন আয়োজন করা হয়েছে যজ্ঞের। জানুন বিস্তারিত…       

Digha Jagannath Temple News: আগামী ৩০ এপ্রিল মন্দির উদ্বোধন ও জগন্নাথের প্রাণপ্রতিষ্ঠা। তার আগের দিন আয়োজন করা হয়েছে যজ্ঞের। ওই দুই দিন মন্দির সেজে উঠবে আলোকমালায়। শুধু মন্দির চত্বর নয়, সেজে উঠেছে দীঘাও।

জানা গিয়েছে, পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আদলে গড়া হয়েছে দীঘার জগন্নাথ মন্দির। ফলে পরিকল্পনা এবং অন্যান্য আবহে পুরীর মতোই তৈরি করা হচ্ছে তাকে। পোশাকি ভাষায় বলা হচ্ছে জগন্নাথধাম। সেখানে পুরীর মন্দির চত্বরের মতোই চত্বর গড়ে তোলা হয়েছে। থাকছে জগন্নাথের মাসির বাড়িও। রথের সময়ে পুরীর মন্দিরের সামনের রাস্তা সোনার ঝাড়ু দিয়ে ঝাঁট দেওয়া হয়। দীঘাতেও তেমনই হবে। সেই সোনার ঝাড়ুর জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের ব্যক্তিগত সঞ্চয় থেকে ৫ লক্ষ ১ টাকা দিচ্ছেন বলে আগেই নবান্ন থেকে এই কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আগামী ২৯ এপ্রিল চার-পাঁচ ঘন্টা ধরে যজ্ঞ হবে সদ্য নির্মিত দীঘার এই জগন্নাথ মন্দিরে। ৩০ তারিখ বেলা ১১টা নাগাদ হবে মূর্তিতে প্রাণপ্রতিষ্ঠা। তার পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেখানে ওড়িশি নৃত্য পরিবেশন করবেন ডোনা গঙ্গোপাধ্যায় (Dona Ganguly) এবং তাঁর সহযোগীরা। সঙ্গীত পরিবেশন করবেন শ্রীরাধা বন্দ্যোপাধ্যায়, মুম্বইয়ের সুরকার জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, বিধায়ক তথা গায়িকা অদিতি মুন্সি।

সূত্রের খবর, দ্বিতীয় বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে ২০১৮ সালে পুরীর সমান উচ্চতার জগন্নাথ মন্দির দীঘায় তৈরির কথা ঘোষণা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওল্ড দীঘায় প্রস্তাবিত জগন্নাথদেবের মাসির বাড়িতেই গোড়ায় জগন্নাথ মন্দির নির্মাণের ভাবনাচিন্তা করেছিল রাজ্য সরকার। পরে নিউ দীঘা স্টেশনের ধারে ভোগীবহ্মপুর মৌজায় মন্দির নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। দীঘা উন্নয়ন পর্ষদের হাতে থাকা ২৫ একর জায়গা মন্দির নির্মাণের জন্য বেছে নেওয়া হয়। ২০১৯ সালে মুখ্যমন্ত্রী মন্দির তৈরির ঘোষণা করলেও কোভিড পরিস্থিতির কারণে নির্মাণকাজ শুরু হতে দেরি হয়েছিল। শেষপর্যন্ত ২০২২ সালের অক্ষয় তৃতীয়ায় ২৫ একর জমিতে জগন্নাথধাম ও সংস্কৃতি কেন্দ্র গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়। রাজ্য সরকারের তরফে নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে হিডকোকে। খরচ হচ্ছে প্রায় ২০০ কোটি টাকা।

এদিকে জগন্নাথ মন্দিরের (Jagannath Temple Digha) উদ্বোধন ঘিরে দীঘায় এখন জোরদার কড়া নিরাপত্তা ব‍্যবস্থা। রয়েছে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা। দীঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সম্প্রচার যত বেশি সম্ভব মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। সরাসরি সম্প্রচার দেখার জন্য জায়গায় জায়গায় লাগানো হয়েছে এলইডি স্ক্রিন। বিশেষ নজর থাকবে যান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাতেও।

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, প্রতিটি ব্লক এবং পুরসভা এলাকায় সেই বন্দোবস্তের জন্য ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসনগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে নবান্নের সর্বোচ্চ মহল। এ জন্য পৃথক খরচও দেওয়া হবে জেলা প্রশাসনগুলিকে বলে জানানো হয়েছে। গত বুধবারই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন পাঁচ মন্ত্রীকে ২৭ এপ্রিল দীঘায় পৌঁছে যেতে। তাঁরা হলেন অরূপ বিশ্বাস, পুলক রায়, স্নেহাশিস চক্রবর্তী, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং সুজিত বসু। থাকবেন ওই মন্ত্রীদের প্রত্যেকের দফতরের সচিবরাও। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে বলেছেন রামনগরের বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী অখিল গিরিকে। দায়িত্ব দিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিককেও। পাঁচ মন্ত্রী, মুখ্যসচিব থেকে শুরু করে রাজ্য পুলিশের ডিজি-সহ রাজ্য প্রশাসনের অন্যতম শীর্ষকর্তারা দীঘায় চলে যাবেন তার আগে। নিয়ে যাওয়া হবে শিল্পপতিদেরও। আহ্বান করা হচ্ছে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরের সংবাদমাধ্যমকেও।

Scroll to load tweet…

পুলিশ, জনস্বাস্থ্য কারিগরি, স্বাস্থ্য, পরিবহণ, দমকল, তথ্য ও সংস্কৃতি— সমস্ত দফতরের মধ্যে সমন্বয় রেখে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা থেকে দীঘার পথে প্রতিটি থানা এলাকায় মেডিক্যাল ক্যাম্প রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাখতে বলা হয়েছে অ্যাম্বুল্যান্সও। মুখ্যমন্ত্রী আগেই জানিয়েছিলেন, তিনি ২৮ এপ্রিল দুপুরের মধ্যে দীঘায় পৌঁছে যাবেন। জানা গিয়েছে, তারপরে আর দিঘা গেট পার হওয়ার জন্য অনুমতি পাবে না কোনও বেসরকারি যানবাহন। অন্যদিকে, বছর ঘুরলেই ২০২৬ সালে বিধানসভা নির্বাচন। ভোটের আগে এই জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন ঘিরে প্রশাসনের তৎপরতাকে অর্থবহ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।