সংক্ষিপ্ত

ঘটনার সূত্রপাত গাড়ির গতি নিয়ে। তখন সকাল ৯টা। তীব্র গতিতে গাড়ি ছুটিয়ে হুগলি সেতুর ওপর দিয়ে চলেছিলেন তমলুকের বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। গাড়ির গতিতে আপত্তি জানান বাবুল সুপ্রিয়।

 

কোনও বিতর্কের মঞ্চে নয়, এবার একদম ব্রিজের ওপর ঝগড়া জুড়ে দিলেন বিজেপি সাংসদ ও তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক। গাড়ির গতি নিয়ে ঝামেলার সূত্রপাত। দ্বিতীয় সেতুর ওপর গাড়ি থামিয়ে দিয়ে ঝগড়া করলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ও বাবুল সুপ্রিম। দুই জনপ্রতিনিধির ঝগড় থামাতে ছুটে আসতে হয় হাওড়ার সিটি পুলিশকে। তবে দুই জনপ্রতিনিধির ঝগড়ার জেরে ব্যস্ততম দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে শনিবার তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

ঘটনার সূত্রপাত গাড়ির গতি নিয়ে। তখন সকাল ৯টা। তীব্র গতিতে গাড়ি ছুটিয়ে হুগলি সেতুর ওপর দিয়ে চলেছিলেন তমলুকের বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই সময় তিনিও হুগলি সেতু দিয়ে যাচ্ছিলেন। অভিজিতের গাড়ি এতটাই জোরে যাচ্ছিল যাতে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এমনই অভিযোগ করে অভিজিতের গাড়ির গতি নিয়ে আপত্তি জানান তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক বাবুল সুপ্রিয়। অনেকে আবার জানিয়েছেন, অভিজিতের গাড়ি বাবুলের গাড়িকে ওভারটেক করতে চেয়েছিল। আর সেই জন্য একপাশে চেয়ে দিয়েছিল তৃণমূল বিধায়কের গাড়ি। যদিও প্রথমে বাবুল বুঝতে পারেনি তীব্র জোরে যাওয়া গাড়িতে অভিজিতের। কিন্তু নীল বাতি লাগান গাড়িটিতে তিনি রাস্তাতেই থামতে বাধ্য করেন। । নীলবাতি লাগানো সেই গাড়ি থামিয়ে চালককে প্রশ্ন করার সময়ই বাবুল দেখেন, পিছনের আসনে বসে রয়েছেন প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ‌্যায়।

বাবুল অভিজিৎকে দেখতে পেলেও চালকের সঙ্গেই প্রথমে কথা বলেন। চালককে দ্রুত গাড়ি চালানোর কারণ জিজ্ঞাসা করেন। কিন্তু চালক কিছু বলার আগেই পিছনের সিটে বসে কুকথা বলতে শুরু করেন অভিজিৎ। বাবুলের আপত্তিতে কান দেননি অভিজিৎ। অভিযোগ তিনি উল্টে তৃণমূল বিধায়ককে লক্ষ্য করে কুকথা বলেন। অভিযোগ অশালীন ভাষায় ববুলকে আক্রমণ করেন। বাবুল তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করে যে গতিতে অভিজিতের গাড়ি চলছে তাতে যে কোনও সময়ই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। পাশাপাশি অভিজিতের ভাষায় আপত্তি জানান বাবুল। ট্রাফিকের যে স্পিড লিমিট রয়েছে, তা মানছেন না অভিজিৎ। সেইসঙ্গে নিয়ম না মেনে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ‌্যায় নীল রঙের আলো ব‌্যবহার করছেন, যা তিনি কখনওই করতে পারেন না। এসব শুনেই খেপে যান অভিজিৎবাবু। রীতিমতো অকথ্য ভাষা ব‌্যবহার করেন বলে অভিযোগ। রাস্তার ওপরই বিবাদে জড়িয়ে পড়েন দুই জনপ্রিতিনিধি। বাবুলও জানান বিজেপি বিধায়ককে ক্ষমা চাইতে হবে।

সাত সকালে অফিসের ব্যস্ত সময় বাবুল-অভিজিতের মধ্যে প্রায় ঝগড়া শুরু হয়ে যায় দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে। ব্রিজের ওপর লোকজন জড়ো হয়ে যায়। যানজট হতে শুরু করে। খবর পেয়ে দ্রুত খবর পেতেই দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট ও কর্মীরা। বাবুল সাফ জানান, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ‌্যায় ক্ষমা না চাইলে তাঁকে যেতে দেওয়া হবে না। এরপরই অভিজিৎ তাঁর সঙ্গে থাকা নিরাপত্তারক্ষী ও পুলিশকর্মীদের উদ্দেশ‌্য করে বলতে থাকেন, 'বাবুলকে এখনই গ্রেপ্তার কর।' পাল্টা বাবুল প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন এভাবে কাউকে গ্রেফতার করা যায় না। পাশাপাশি অভিজিতের এক্তিয়ার নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বালুল। মনে করিয়ে দেন এখন আর অভিজিৎ বিচারপতি নন। শেষ পর্যন্ত কিছুটা বাধ্য হয়েই রণভঙ্গ দেন অভিজিৎ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ বাবুল পরে বলেন, 'উনি নিয়ম ভাঙছেন। আবার তার প্রতিবাদ করলে জঘন‌্য ভাষায় কথা বলছেন। তবে শেষ পর্যন্ত উনি ক্ষমা চাইতে বাধ‌্য হয়েছেন।' যদিও এই বিষয়ে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এখনও সাংবাদিকদের মুখোমুখি হননি। তবে এই প্রথম রাজ্যে এভাবে প্রকাশ্যে রাস্তার ওপর দুই জনপ্রতিনিধিকে বচসায় জড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। সধারণত ভোটের সময় এজাতীয় ঘটনা দেখা যায়। বিধানসভা বা লোকসভাতেও জনপ্রতিনিধিদের বিতর্কে জড়িয়ে পড়তে দেখা যায়।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।