ধূপগুড়ি ব্লকে শাসকদলের অন্দরেই এবার তীব্র বিতর্ক। তৃণমূলেরই এক দাপুটে নেতা অভিযোগ তুলেছেন, তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সমিতির বর্তমান সদস্যা আদতে বাংলাদেশি নাগরিক। এই অভিযোগ ঘিরে ইতিমধ্যেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
রাজ্যে চলা SIR-এর মধ্যেই ভুতুড়ে ভোটা, বাংলাদেশি নাগরিক ও অনুপ্রবেশকারী বিতর্কে একাধিকবার বিরোধীরা আঙুল তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। কিন্তু এবার বাংলাদেশি ইস্যুতে ধূপগুড়িতে দলীয় কোন্দোলে জেরবার শাসকদল। তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে দলেরই এক দাপুটে নেতা বাংলাদশি নাগরিক হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। শুধু তাই নয়, বিষয়টি নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে নির্বাচন কমিশনেরও।
বাংলাদেশি বিতর্ক ধূপগুড়িতে
ধূপগুড়ি ব্লকে শাসকদলের অন্দরেই এবার তীব্র বিতর্ক। তৃণমূলেরই এক দাপুটে নেতা অভিযোগ তুলেছেন, তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সমিতির বর্তমান সদস্যা আদতে বাংলাদেশি নাগরিক। এই অভিযোগ ঘিরে ইতিমধ্যেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে। নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে বলেও জানা গিয়েছে। ধূপগুড়ি ব্লকের গাদং-১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার অন্তর্গত ২৪ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির আসনে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী বর্তমান সদস্যা আনিছা বেগমের বিরুদ্ধে এই গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন দলেরই নেতা আবদুল রশিদ।

রশিদের দাবি, আনিছা বেগম অবৈধ পথে বাংলাদেশ থেকে এদেশে প্রবেশ করে প্রায় ২০০৭ সাল নাগাদ ভোটার তালিকায় নাম তোলেন এবং ধীরে ধীরে শাসকদলের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। অভিযোগ, রাজ্যে পালাবদলের পর শাসকদলের প্রভাব কাজে লাগিয়ে প্রথমে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর বিভিন্ন দায়িত্ব পান আনিছা বেগম। পরে মহাসংঘের কর্মকর্তা নির্বাচিত হন এবং শেষ পর্যন্ত ২০২৩ সালে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হয়ে ধূপগুড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যা হন। অভিযোগকারীর আরও দাবি, তাঁর স্বামী সাত্তার আলি সহ বাবা-মা এখনও বাংলাদেশের নাগরিক এবং সেখানেই বসবাস করেন।
আবদুল রশিদ নির্বাচন কমিশনের কাছে শুধু লিখিত অভিযোগই জানাননি, তদন্ত করে আনিছা বেগমের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার দাবিও তুলেছেন। কমিশন সূত্রে খবর, এসআইআর পর্বে আনিছা বেগম নিজের স্বামী সাত্তার আলির ফর্ম ফাঁকা জমা দিয়ে তাঁকে ‘নিরুদ্দেশ’ ক্যাটিগরিতে রাখার আবেদন করেন। তবে নিজের এসআইআর ফর্ম তিনি বিএলও-র হাতে না দিয়ে অনলাইনেই জমা দিয়েছেন।
সূত্রের আরও দাবি, অনলাইনে জমা দেওয়া এসআইআর ফর্মে আনিছা বেগম (ফর্মে নাম আছিমা) নিজের বাবার নাম হিসেবে উল্লেখ করেছেন ভোটপাড়া এলাকার বাসিন্দা রহমত আলির নাম। যদিও স্থানীয় খোঁজখবরে জানা যাচ্ছে, বছর পাঁচেক আগে রহমত আলির মৃত্যু হয়েছে। তাঁর একমাত্র ছেলে নুর মহম্মদ বর্তমানে কেরলে শ্রমিকের কাজ করেন। রহমত আলির ষাটোর্ধ্ব স্ত্রী জানান, তাঁদের পাঁচ কন্যা থাকলেও আছিমা নামে কোনও মেয়ে নেই। আনিছা বেগমের পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে, ব্যক্তিগত রোষের কারণে এমন অভিযোগ আনা হচ্ছে। ২০০৩ সাল থেকে আনিছা বেগম ভারতবর্ষের ভোটার। জমি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে, এই চক্রান্ত। শাসকদলের পঞ্চায়েত সদস্যাকে ঘিরে এমন বিস্ফোরক অভিযোগে স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনা তুঙ্গে। নির্বাচন কমিশনের তদন্তে এই অভিযোগ কতটা সত্য প্রমাণিত হয়, সেদিকেই তাকিয়ে ধূপগুড়ির রাজনৈতিক মহল।


