সংক্ষিপ্ত
তাঁর নাম নিয়ে রাজনৈতিক তরজা প্রসঙ্গে একেবারেই উদ্বিগ্ন নন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি।
চলতি বছরেই বাংলায় শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বিপুল পরিমাণ অর্থের পর তাঁর একের পর এক ঘনিষ্ঠের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয়েছে বহু গুরুত্বপূর্ণ নথি ও ভুয়ো শিক্ষক নিয়োগের তথ্য। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তে উঠে এসেছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়-ঘনিষ্ঠ মিডলম্যান প্রসন্ন রায়ের নাম। এই ব্যক্তির নিউটাউনের বাড়িতে তল্লাশি করে সিবিআই বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার করেছে। চাঞ্চল্যকর ঘটনা হল, এই বাজেয়াপ্ত করা নথিগুলির মধ্যে রয়েছে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের নামের রেজিস্টার করা একটি দলিল।
প্রসন্ন রায়ই হলেন সেই মধ্যবর্তী ব্যক্তি, যার মাধ্যমে বহু মানুষের থেকে টাকা তোলা হয়েছিল চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে। পূর্ববর্তী জীবনে এই প্রসন্ন রায় ছিলেন একজন রঙের মিস্ত্রি। পরবর্তীকালে রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় এবং সেই ঘনিষ্ঠতার বহরে তিনি বিপুল সম্পত্তি বাড়িয়ে ফুলেফেঁপে ওঠেন। এর আগে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠের বাড়ি থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার, বিপুল সম্পত্তির হদিশ এবং বড়সড় তছরুপের ঘটনা নিয়ে শাসকদলকে বারবার কড়া ভাষায় বিদ্ধ করেছে গেরুয়া শিবির। এবার সিবিআই-এর তল্লাশিতে পার্থ-ঘনিষ্ঠ প্রসন্ন রায়ের বাড়ি থেকেই দিলীপ ঘোষের দলিল পাওয়া যাওয়ায় ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
উদ্ধার হওয়া জিনিসগুলির তালিকা, অর্থাৎ, ‘সিজার লিস্ট’ জমা না দেওয়ার বিষয়টি আদালতে উত্থাপিত করেছিলেন এসএসসির প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহা। তারপরেই সিবিআই আদালতে এই সিজার লিস্ট জমা দেয়। বাজেয়াপ্ত করা জিনিসগুলির মধ্যে সিজার লিস্টে উল্লিখিত আট নম্বর বস্তুটি হল একটি ৬০ পাতার দলিল। খতিয়ে দেখে জানা যায়, দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার একটি জমি কেনাবেচার ডিড হয়েছিল ২ ব্যক্তির মধ্যে। ২০২২ সালের ২২ এপ্রিল সেই ডিড সম্পন্ন হয় সৌভিক মজুমদার এবং দিলীপকুমার ঘোষের মধ্যে। উল্লিখিত জমিটি সৌভিক মজুমদারের থেকে কিনেছিলেন দিলীপ ঘোষ।
বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষের কেনা সম্পত্তির দলিল দুর্নীতিতে যুক্ত মিডলম্যানের বাড়িতে আসা নিয়ে জোরালো প্রশ্ন উঠেছে রাজ্যের অন্দরে। অবশেষে সেই প্রসন্ন রায়ের সঙ্গে নিজের পরিচিতির কথা স্বীকার করে নিলেন দিলীপ ঘোষ। বিজেপি সাংসদের বক্তব্য, ‘আমার ওই কমপ্লেক্সে ফ্ল্যাট ছিল। ইলেকট্রিক কানেকশনের জন্য দলিল দিয়েছিলাম। আগে পরিচয় ছিল। ও যে অন্য কোনও কাজের সঙ্গে যুক্ত আছে, তা জানতাম না।’
তাঁর নাম নিয়ে রাজনৈতিক তরজা প্রসঙ্গে একেবারেই উদ্বিগ্ন নন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি। দুর্নীতিকারীর সঙ্গে যোগ থাকলেও, তা যে একেবারেই অনিচ্ছাকৃত এবং অজ্ঞাত, তা সংবাদমাধ্যমের সামনে স্পষ্ট করে দিলেন তিনি।
আরও পড়ুন-
৫৫ লক্ষ ভোটারের হাতে নির্ধারিত হবে ৪১২ জন ভোটপ্রার্থীর ভাগ্য, হিমাচলে বিজেপি বনাম কংগ্রেসের জোর টক্কর
অনুব্রতর ছায়াসঙ্গী সায়গল কি আর ফিরছেন না আসানসোল জেলে? তিহার জেল থেকেই ভার্চুয়াল হাজিরার নির্দেশ
পূর্বাভাস অনুযায়ী পারদ পতন, বঙ্গে এবার আশানুরূপ সময়ের আগেই পৌঁছে যাচ্ছে শীত