সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছেন, 'আজ ওনাদের সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা হল। নির্যাতিতার বাবা মাকে জানিয়েছেন, ঘটনার দিন যখন বাড়িতে মেয়ের দেহ শায়িত রয়েছে তখন তাঁর হাতে টাকার প্যাকেট দিতে চেয়েছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর সঞ্জীব মুখোপাধ্যায়।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (G Kar Medical College Hospital )নির্যাতিতা তরুণীর বাড়িতে গেলেন বিজেপি (BJP) নেতা সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumder)। কথা বলেন নিহত তরুণী চিকিৎসকের বাবা ও মায়ের সঙ্গে। বৃহস্পতিবার সোদপুরের এইচবি টাউনে নির্যাতিতার পরিবারের বাড়ির বাইরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বিজেপি নেতা। সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগ পুলিশ নির্যাতিতার পরিবারকে ভয় দেখিয়ে মুখ বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে নির্যাতিতার পরিবারও জানিয়েছেন কীভাবে তৃণমূল নেতা ও পুলিশ আগে থেকেই টাকা দিয়ে তাদের থামাতে চেয়েছিল।
সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্যঃ
নির্যাতিতার পরিবারের বাড়ির দরজায় দাঁড়িয়ে সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছেন, 'আজ ওনাদের সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা হল। নির্যাতিতার বাবা তাঁকে জানিয়েছেন, ঘটনার দিন যখন বাড়িতে মেয়ের দেহ শায়িত রয়েছে তখন তাঁর হাতে টাকার প্যাকেট দিতে চেয়েছিলেন স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলর সঞ্জীব মুখোপাধ্যায়। হাসতে হাসতে তিনি তাঁর দিকে টাকার প্যাকেট এগিয়ে দেন। সেই সময় সঙ্গে ছিলেন ডিসি নর্থ। নির্যাতিতার বাবা সেই সময় তাঁদের বলেছিলেন, আপনি যত কষ্ট করে আইপিএস হয়েছেন তার থেকে বেশি কষ্ট করে আমার মেয়ে ডাক্তার হয়েছে।'
বিজেপি নেতা আরও দাবি করেছেন, নির্যাতিতার বাবাকে ভয় দেখিয়ে মুখ বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করছে প্রশাসন। তিনি আরও বলেছেন নির্যাতিতার পরিবার তাঁকে বলেছেন, 'পুলিশ তাদের বলেছে প্রকাশ্যে মুখ খুললে দোষী ছাড়া পেয়ে যাবে। সেই ভয় তাঁরা মুখ খোলেননি।' সুকান্ত আরও বলেছেন, আরজি করের ঘটনার চার দিনের মাথায় তিনি নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। সেই সময় নির্যাতিতার পরিবার পুলিশের ভয়ই চাননি তিনি বাড়িতে ঢুকে তাদের সঙ্গে দেখা করুন। কিন্তু আদালতের রায় আসার পরই নির্যাতিতার পরিবার বিচারের দাবিতে সরব হয়েছেন। সুকান্ত মজুমদার আরও জানিয়েছেন, শাসকদলের পক্ষ থেকে নির্যাতিতার পরিবারের উদ্দেশ্যে কুরুচিকর মন্তব্য করা হয়েছে। তাই নিয়ে তিনি তাদের বিচলিত হতে নিষেধ করেছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন রাজ্যের মানুষ ও বিজেপি নির্যাতিতার পরিবারের পাশে রয়েছে। তিনি আরও বলেন,'আরজি করের নির্যাতিতার খুনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।'
নির্যাতিতার পরিবারের বক্তব্যঃ
তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রকে নিজের বাড়িতে আসার আমন্ত্রণ জানিয়ে নির্যাতিতার পরিবার বলেন, ' উনি একদিন আসুন খোঁজখবর নিয়ে যান। আমার যখন দশ টাকা মূলধন ছিল তখনও টাকা পিছনে দৌড়ায়নি এখনো টাকার পিছনে দৌড়াচ্ছি না আর সেই কারণেই ভগবান আমাদের মতে করে পরিচালনা করার জন্য ওরকম একটা মেয়ে আমাদের ঘরে জন্ম দিয়েছিলেন কিন্তু এই সমাজ আমাদের আমার এই মেয়েটাকে বাঁচতে দেয়নি। তার বিচার আমরা যেখান থেকে পারব নেব। তৃণমূল নেতারা যতই যা বলুন আমাদেরকে বিভ্রান্ত করতে পারবেন না। '
নির্যাতিতার পরিবার সিবিআই তদন্তকারী দলের উপর অনাস্থা প্রকাশ করে ইতিমধ্যেই সিবিআই এর ডিরেক্টরের কাছে একটি চিঠি লিখেছেন অভয়ার বাবা-মা। এদিন সেই বিষয়টিও তুলে ধরেন। এই বিষয়ে তাঁরা রাজ্যপালের কাছেও নাশিল জানিয়েছেন। মেয়ের মৃত্যুর পরই টাকার বান্ডিল নিয়ে বাড়িতে তাদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন কলকাতা পুলিশের তৎকালীন ডিসি নর্থ। আর তাকে বাড়ির দোতলা ঘর পর্যন্ত নিয়ে যান তাদেরই প্রতিবেশী স্থানীয় তৃণমূল নেতা সঞ্জীব মুখার্জি। কিন্তু টাকার বান্ডিল দেখেই ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে অভয়ার বাবা সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, 'আপনি যতটা কষ্ট করে আইপিএস হয়েছেন, তার থেকে বেশি কষ্ট করে আমার মেয়েকে খুন হতে হয়েছে। আপনি এই জিনিসটা করবেন না।' নির্যাতিতার বাবার মুখে ওই কথা শুনে আর বেশিক্ষণ দাঁড়াননি ওই পুলিশ অফিসার, এরপরই সিঁড়ি সোজা নিচে নেমে যান। এদিন নির্যাতিতার পরিবার সেই প্রসঙ্গও তুলে ধরে।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।
