সংক্ষিপ্ত
২০১৪ সালে হওয়া প্রাথমিকের টেটে দুর্নীতিতে উত্তরপত্র বা ওএমআর শিট নিয়ে বিরাট কারচুপি হয়েছে- যা আগেই সামনে এসেছিল। কিন্তু কী করে সেই কেলেঙ্কারি হয়েছে তা এবার সামনে আনল সিবিআই।
নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত যত এগিয়ে যাচ্ছে ততই সামনে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক এমনকি উচ্চমাধ্যমিক স্কুল-সর্বত্রই নিয়োগ ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছ। মামলা চলছে কলকাতা হাইকোর্টে। তদন্ত করছে সিবিআই ও ইডি। সেই তদন্তে এবার প্রাথমিক নিয়োগে যে দুর্নীতি হয়েছে তার চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আনল সিবিআই।
২০১৪ সালে হওয়া প্রাথমিকের টেটে দুর্নীতিতে উত্তরপত্র বা ওএমআর শিট নিয়ে বিরাট কারচুপি হয়েছে- যা আগেই সামনে এসেছিল। কিন্তু কী করে সেই কেলেঙ্কারি হয়েছে তা এবার সামনে আনল সিবিআই। যদিও এই মামলাতেই কলকাতা হাইকোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছে সিবিআইকে। আদালত বলেছিল 'তাহলে কি উড়়ে গেল চাকরিপ্রার্থীদের ওএমআর শিট?' সিবিআই অবশ্য বলছে, উড়েই গিয়েছে ওএমআর শিট। যদিও আদালত সিবিআইকে ওএমআর শিট উদ্ধারের জন্য তৃতীয় পক্ষের সহযোগিতা নিতে বলেছে। তৃতীয়পক্ষকে নিয়েই সিবিআই ওএমআর শিট উদ্ধার করতে শুরু করেছিল। তাতেই সিবিআই সূত্রের খবর যে সার্ভারে উত্তরপত্রের নথি রাখা হয় তা ২০১৭ সালে বদলে ফেলা হয়।
সিবিআই সূত্রের খবর যে হার্ডডিক্সে তথ্য রাখা হয়েছিল সেটা ২০১৭-১৮ সালে হাতুড়ি দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়েছিল। পরবর্তীকালে সার্ভার ক্র্যাশ হওয়ার যুক্তি খাড়া করা হয়েছিল। টেট দুর্নীতিকাণ্ডে অভিযুক্তদের জেরা করেই সেই তথ্য সামনে এসেছে। সিবিআই সূচ্রের খবর এস বসু রায় অ্যান্ কোম্পানির অংশীদার গৌতম মাজি হার্ড ডিক্স ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। গৌতম মাঝি যদিও মারা গেছেন। সিবিআই সূত্রের দাবি টেক্সট ফাইল হিসেবে ওএমআর শিটের নথি সংরক্ষণ করা হয়েছিল তা পরবর্তীকালে বদলে দেওয়া হয়। সিবিআই-এর অনুমান তথ্য নষ্ট করার জন্যই এই পদক্ষেপগুলি করা হয়েছিল।
সিবিআই সূত্রের খবর, ২০১৪ সালে হওা টেট পরীক্ষার আসল ওএমআর শিট কিলো দরে বিক্রি করা হয়েছিল ওড়িশায়। ওড়িশার পেপার পাপ্ল অর্থাৎ কাগজের মণ্ড তৈরি করে তা নষ্ট করে ফেলা হয়। তবে বিক্রির আগে ওএমআর শিটের সফ্ট কপি তুলে রাখা হয়েছিল কম্পিউটারে। ওএমআরের স্ক্যান করে এডিএফ স্ক্যান করে সেই ওএমআরের পিডিএম ফাইল তৈরি করা হয়েছিল। এটি কখন বদল করা যায় না। পরে ওএমআরের আরও একটি স্ক্যান করে সেকনিক যন্ত্রের মাধ্যমে ফাইল তৈরি হয়। অত্যাধুনিক ইনফ্রা পদ্ধতিতে স্ক্যান করা করে ওএমআরকে ‘টেক্সট ফাইল’ বানিয়ে রাখা হয়। এই ‘ডট টেক্সট’ ফাইল এডিট করা সম্ভব। এই ভাবেই বদল করা হয় নথি, তথ্য।
সিবিআই সূত্রের খবর, ওএমআর-এর সমস্ত তথ্যই ছিল এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানির হাতে। আসল নথি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদে পাঠান হয়নি। নথিগুলি প্রথমে নিজেদের গুদামে রাখা হয়েছিল। পরবর্তীকালে তা বিক্রি করে দেওয়া হয়।