সংক্ষিপ্ত
২০০৬ সালে সাঁকরাইল বিধানসভা কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থী হিসেবে বিধানসভা নির্বাচনেও দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। ১১৩ ভোটে হেরে যান অনির্বাণ। ২০১১ সালে ফের দাঁড়ান বিধানসভা নির্বাচনে। / Beleghata ID hospital s doctor Anirban Hazra died due to Dengue
'ডাক্তারবাবু'কে হারিয়ে শোকস্তব্ধ সাঁকরাইলের নলপুর বেতিয়াড়ি গ্রাম। শুক্রবার সকালে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেনচিকিৎসক অনির্বাণ হাজরা। গত এক নভেম্বর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি হন অনির্বাণ। ১১ দিনের লড়াই শেষে শুক্রবার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন অনির্বাণ হাজরা। ঘটনায় শোকস্তব্ধ অনির্বাণের পরিজন, সহকর্মী থেকে শুরু করে গোটা বেতিয়াড়ি গ্রাম।
বর্তমানে মা ও দুই বোনের সঙ্গে বেতিয়াড়ি গ্রামেই বেড়ে ওঠা অনির্বাণের। পরে স্ত্রী এবং দুই মেয়েকে নিয়ে রামরাজাতলায় চলে এলেও শিকড়কে ভোলেননি অনির্বাণ। চিকিৎসকের পাশাপাশি বাম সংগঠনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন অনির্বাণ। ২০০৬ সালে সাঁকরাইল বিধানসভা কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থী হিসেবে বিধানসভা নির্বাচনেও দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। ১১৩ ভোটে হেরে যান অনির্বাণ। ২০১১ সালে ফের দাঁড়ান বিধানসভা নির্বাচনে।
নিজের গ্রাম বেতিয়াড়িতেও বিপুল জনপ্রিয় ছিলেন অনির্বাণ। নিয়মিত বিনা পয়সায় বেতিয়াড়িতে এসে চিকিৎসা করতেন তিনি। রবিবার কিংবা ছুটির দিন মানেই সপরিবারে গ্রামে হাজির হতেন ডাক্তারবাবু। শুক্রবার সকালে তাঁর মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমে আসে গোটা গ্রামে।
গত ১ নভেম্বর ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হইয়ে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি হন অনির্বাণ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। প্লেটলেট নেমে আসে ১৬ হাজারে। প্লেটলেট ট্রান্সফিউশনের পর কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরলেও শুক্রবার সকালে ফের আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ে অনির্বাণের অবস্থা। দেখা দেয় হৃদ্যন্ত্র এবং রক্তচাপজনিত সমস্যা। দ্রুত সিসিইউতে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা শুরু করলেও শেষ রক্ষা হয়নি। চিকিৎসকদের সব চেষ্টাকে ব্যর্থ করে চলে গেলেন চিকিৎসক অনির্বাণ হাজরা।
প্রসঙ্গত, শুধু কলকাতা নয় মশাবাহিত রোগের সংক্রমণ বাড়ছে জেলাগুলিতেও। গত পাঁচ বছরের পরিসংখ্যান বলছে,৩৬তম সপ্তাহে ২০১৭ সালে আক্রান্ত হন ৮৪৪ জন এবং ২০১৮ সালে ১৩০৪ জন। ২০২০ সালে অতিমারির সময় বেশ খানিকটা কমেছিল মশাবাহিত রোগের সংক্রমণ। ২০২০ সালে ৮৬ জন ও ২০২১ সালে ১৪১ জন আক্রান্ত হন। শেষ দুই বছরের মোট আক্রান্তের তুলনায় আট গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে চলতি বছরের ১ থেকে ৭ সেপ্টেম্বর।
শেষ কয়েকদিনের বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাতও এই সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণ হতে পারে বলে আশঙ্কা চিকিৎসকদের। আগামী দু'মাসও থাকবে ডেঙ্গির প্রকোপ। ডিসেম্বর থেকে নিম্নমুখী হতে পারে সংক্রমণের গ্রাফ।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার পাশাপাশি অপরিকল্পিত নগরায়ণও এই ডেঙ্গির বারবারন্তের কারণ। একদিকে অক্টোবর শেষ হয়ে নভেম্বর আসতে চললেও পিছু ছাড়ছে না বৃষ্টি। পাশাপাশি অপরিকল্পিতভাবে নগরায়ণকেও ডেঙ্গি সংক্রমণের কারণ হিসেবে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন -
ধর্ষণের বিচার করার জন্য ডেকে প্রেমিককে সঙ্গে হাত মিলিয়ে তরুণীকে গণধর্ষণ, কাঠগড়ায় তৃণমূলের কাউন্সিলর