পুলিশ বলছে এ যেন হিমশৈলের চূড়া মাত্র। সূত্রের খবর রাজ্য জুড়ে যে পাসপোর্ট র‍্যাকেটের দীর্ঘ তদন্ত চলছে, তার মধ্যে পুলিশের হাতে এসেছে চমকপ্রদ তথ্য। প্রায় ৪,০০০ পরিবারের এই গ্রাম পঞ্চায়েতটি দুই বছরে ৩,৫০০ টিরও বেশি জাল জন্ম সনদ তৈরি করেছে বলে অভিযোগ

একের পর এক ঘটনা। কখনও নদিয়া, কখনও শিলিগুড়ি। জাল জন্ম শংসাপত্র ইস্যুতে রাজ্য জুড়ে কাজ করছে একটা চক্র। সেই সূত্র ধরেই জুন-জুলাই মাসে নাম উঠে এসেছিল দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার গোসাবা থানার পাঠানখালী গ্রামের। এই গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে মিলেছে প্রায় ৪ হাজারের বেশি ভুয়ো নথিপত্র! অবাক হওয়ার এখানেই শেষ নয়। জানা গিয়েছে সরকারি পোর্টাল ব্যবহার করে ইস্যু হয়েছে হাজার হাজার ভুয়ো জন্ম এবং মৃত্যু শংসাপত্র।

পুলিশ বলছে এ যেন হিমশৈলের চূড়া মাত্র। সূত্রের খবর রাজ্য জুড়ে যে পাসপোর্ট র‍্যাকেটের দীর্ঘ তদন্ত চলছে, তার মধ্যে পুলিশের হাতে এসেছে চমকপ্রদ তথ্য। প্রায় ৪,০০০ পরিবারের এই গ্রাম পঞ্চায়েতটি দুই বছরে ৩,৫০০ টিরও বেশি জাল জন্ম সনদ তৈরি করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে, যার মধ্যে অনেকগুলি ভারতীয় পাসপোর্ট জাল করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

মামলার অভিযুক্ত গৌতম সর্দার গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা এবং পঞ্চায়েত অফিসের একজন অস্থায়ী কর্মী। তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় ইউনিটের সঙ্গেও সে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত বলে জানা গেছে। এই ব্যক্তিকে ৭ জুন গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পাসপোর্ট র‍্যাকেটের চক্রের অন্যতম মাথা হিসেবে যে নয় জন গ্রেফতার হয়, এই ব্যক্তি তাদের মধ্যে অন্যতম।

তাদের গ্রাম এভাবে জাল নথি কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িয়ে পড়বে ভাবতে পারেননি গ্রামবাসীরা। লজ্জার সুর তাঁদের গলায়। স্থানীয়রা বলছেন "আমরা কখনও কল্পনাও করিনি যে এখানে এমন ঘটবে। মানুষ এই গ্রাম পঞ্চায়েতকে 'ভারতের জাল জন্ম সনদের রাজধানী' বলছে!"। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও যোগ নেই বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় শাসক দলের নেতারা।

এদিকে, সুন্দরবনের অনেক দ্বীপের মধ্যে একটিতে অবস্থিত তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে পাঠানখালী একটি। ১৫,০০০ ভোটার নিয়ে, এই গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে আটটি গ্রাম রয়েছে: পাঠানখালী, তেঁতুলতলী, বোড়তলী, জেলেপাড়া, গোপালকাটা, কামারপাড়া, নবগোপাল এবং তালতলা।

কলকাতা পুলিশের হাতে পাসপোর্ট র‍্যাকেটের তদন্তের সময়ই পাঠানখালিতে "কেলেঙ্কারির" উন্মোচন ঘটে। তদন্তকারীদের মতে, প্রায় ৪০০টি জাল পাসপোর্ট বেশ কয়েকজনকে ইস্যু করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে - যার বেশিরভাগই বাংলাদেশি নাগরিক বলে অভিযোগ। প্রথম গ্রেপ্তার জানুয়ারিতে করা হয়েছিল, এবং তদন্ত এখনও চলছে। পুলিশের মতে, গৌতম সর্দার এই বৃহৎ চক্রের একটি মাত্র লিঙ্ক।