সংক্ষিপ্ত

গঙ্গার তলা দিয়ে তৈরি সুড়ঙ্গটি ইউরোস্টারের লন্ডন-প্যারিস করিডোরের ভারতীয় সংস্করণ। নদীর তলদেশ থেকে ১৩ মিটার নীচে আর ভূমি স্তর থেকে মাত্র ৩৩ মিটার নীচে রয়েছে সুড়ঙ্গ পথ।

ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো করিডোরের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল দেশের প্রথম আন্ডার ওয়াটার টানেল। ১২০ কোটি টাকা ব্যায় গঙ্গার তলা দিয়ে তৈরি হয়েছে এই সুড়ঙ্গপথটি। গঙ্গার তলায় সুড়ঙ্গ পথের দৈর্ঘ্য ৫২০ মিটার। এই দূরত্ব মেট্রো রেলে করে পার হতে সময় লাগবে মাত্র ৪৫ মিনিট। ইস্ট ওয়েস্ট মোট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে কাজ প্রায় শেষের দিকে, একটি দূর্দান্ত অভিজ্ঞতার সাক্ষী হতে এবার যাত্রীরা কাউন্টডাউন শুরু করে দিতে পারে।

সুড়ঙ্গটি ইউরোস্টারের লন্ডন-প্যারিস করিডোরের ভারতীয় সংস্করণ। নদীর তলদেশ থেকে ১৩ মিটার নীচে আর ভূমি স্তর থেকে মাত্র ৩৩ মিটার নীচে রয়েছে সুড়ঙ্গ পথ। ৫২০ মিটার টানেলটি কলকাতার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো করিডোরের অংশ- পূর্বে সল্টলেক সেক্টর ফাইড এর আইটি হাব থেকে নদীর ওপারে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত যাত্রাপথ।

টানেলের নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। করিডোরের এসপ্ল্যানেড ও শিয়ালদহের মধ্যে আড়াই কিলোমিটার মেট্রো পথ তৈরির হওয়ার পরেই এটি চালু হবে। আগামী বছর ডিসেম্বর মাসে এই মেট্রো পথ চালু হবে বলেও আশা করছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। কলকাতার মেট্রো রেল কর্পোরেশনের জেনারেল ম্যানেজার শৈলেশ কুমার বলেন, ইস্ট ওয়েস্ট করিডোরের জন্য টানেলটি অপরিহার্য ও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আবাসিক এলাকা, অন্যান্য প্রযুক্তিগত সমস্যার পাশাপাশি নদীর তলদেশ দিয়ে যাত্রাপথ তৈরি করা জরুরি ছিল। তিনি আরও বলেছেন হাওড়া-শিয়ালদহের মধ্যে এই মেট্রো রুট দিয়ে যাতায়াত করতে এখন প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় লাগে। কিন্তু মেট্রো রেল পরিষেবা চালু হলে প্রায় ৪০ মিনিট সময় কমে যাবে। এই মেট্রো পরিষেবা চালু হলে হাওড়া ও শিয়ালদ দুই দিকেই যানজট অনেকে কমে যাবে। তিনি জানিয়েছেন গঙ্গার তলাদিয়ে সুড়ঙ্গ পথ পার হতে সময় লাগবে মাত্র ৪৫ সেকেন্ড।

মেট্রো রেলের ইস্ট ওয়েস্ট করিডোরের নির্মাণকাজে রীতিমত দেরি হয়েছে। তার কারণে ব্যায়ও অনেকটা বেড়েছে। এটি তৈরির জন্য ২০০৯ সালে ৪৮৭৭ কোটি টাকা অনুমোদিত হয়েছিল। ২০১৫ সালে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কর্মকর্তাদের মতে এখন এই খরচ বেড়ে হয়েছে ৮৪৭৫ কোটি টারা। যারমধ্যে ৮৩৮৩ কোটি টাকা ইতিমধ্যেই খরচ করা হয়েছে।

টানেলের অভ্যন্তরীণ ব্যাস হবে ৫.৫৫ মিটার। বাহ্যিক ব্যাস ৬.১ মিটার। আপ ও ডাউন টানেলের মধ্যে ব্যবধান থাকবে ১৬.১ মিটার। সুড়ঙ্গের ভেতরের দেয়ালগুলো উচ্চ মানের M50 গ্রেড ও ২৭৫ মিলিমিটার পুরুত্ব বিশিষ্ট কংক্রীটের ঢালাই দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। টানেলে জলের প্রবাহ ও ফুটো প্রতিরোধ করার জন্য বেশ কিছু ব্যবস্থা আগে থেকেই নেওয়া হয়েছে। ফ্লাই অ্যাশ মাইক্রো সিলিকার সঙ্গে কংক্রীট মিশিয়ে এটি তৈরি করা হয়েছে। এটি জলের চাপ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ।