Darjeeling Tee: প্রবল বৃষ্টি আর ভূমিধসের কবলে পড়ে বিপর্যস্ত দার্জিলিং-এর চা শিল্প। নষ্ট হয়ে গেছে হাজার হাজার চা গাছ। উৎপন্ন চাও কারখানায় পড়ে নষ্ট হচ্ছে। বড়সড় ক্ষতির মুখে দাঁড়ি চা শ্রমিকরা।
মিরিক অঞ্চল জুড়ে ব্যাপক ভূমিধস এবং অবিরাম বৃষ্টির কারণে দার্জিলিংয়ের চা শিল্প মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ঘটনায় ২০ হেক্টর চা বাগানের প্রায় ৫০,০০০ চা গাছ ভেসে গেছে। "এর আগে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখিনি," দার্জিলিংয়ের মিরিক চা শিল্পে ব্যাপক ভূমিধসের পর থুরবু টি গার্ডেনের ম্যানেজার বলেন।
থুরবু টি গার্ডেনের ম্যানেজার সুমন দাস এই পরিস্থিতিকে তার কয়েক দশকের কর্মজীবনে সবচেয়ে খারাপ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি এএনআই-কে বলেন, “এখানকার পরিস্থিতি খুবই খারাপ... আমি গত ২৫ বছর ধরে এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত রয়েছি। কিন্তু এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি আগে কখনো দেখিনি।”
বন্য়ায় ক্ষতিগ্রস্ত চা শিল্প
ম্যানেজার আরও বলেন, এই ক্ষতি এমন এক সময়ে হয়েছে যখন চা শিল্প এমনিতেই কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। দাস বলেন, “এটি শিল্পের জন্য খুবই ক্ষতিকর, বিশেষ করে যখন বছরের এই সময়ে শিল্পটি নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।”
মিরিক চা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত এক ব্যক্তি আজম প্রধান এএনআই-কে বলেন, “এত বৃষ্টি হয়েছে যে মনে হচ্ছিল মেঘ ফেটে গেছে। এলাকার প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হেক্টর মিরিকের চা বাগান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা আশঙ্কা করছি, এ বছর মিরিকের উৎপাদন পুরোপুরি প্রভাবিত হবে।” প্রধান আরও বলেন, পরিবহন ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ায় কারখানায় উৎপাদিত এবং মজুত করা চা নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রধান বলেন, “যে চা তৈরি হয়ে কারখানায় পড়ে আছে, সেটাও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কারণ পরিবহন সম্ভব হচ্ছে না... সরকার যদি এগিয়ে না আসে, তাহলে চা শিল্পের বড় ক্ষতি হতে পারে।”
এখনও বিপর্যস্ত দার্জিলিং
এদিকে, পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংয়ে গত কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিপাতের পর স্থানীয়রা কঠিন সময়ের সম্মুখীন হচ্ছেন। এই বৃষ্টিতে দুধিয়ার সঙ্গে মিরিক এবং নেপালের সংযোগকারী রাস্তাসহ বিভিন্ন পরিকাঠামো ধ্বংস হয়েছে। অবিরাম বৃষ্টির কারণে এলাকার জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় বেশ কিছু বাড়িঘর ও ভবনও ধসে পড়েছে, যা বাসিন্দাদের দুর্দশা ও ভয়ের মধ্যে ফেলেছে। একজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, এলাকাটিকে অন্য অঞ্চলের সঙ্গে সংযোগকারী একটি সেতুও ভেঙে পড়েছে, যা তাদের সমস্যা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি সরকারের কাছে সাহায্যের আবেদন জানান। “রবিবার খুব ভারী বৃষ্টি হয়েছে এবং সকাল ৬টা পর্যন্ত বৃষ্টি চলছিল... বৃষ্টিতে আমার বাড়ি ও দোকান ধ্বংস হয়ে গেছে... আমরা খুব সকালে এখান থেকে চলে গেছি... এখানকার সেতুটিও ভেঙে গেছে এবং এর ফলে মানুষের খুব অসুবিধা হচ্ছে কারণ কেউ কোথাও যাতায়াত করতে পারছে না... এখানে বিদ্যুৎ নেই... কয়েকটি বাড়ি এখানে ধ্বংস হয়ে গেছে... আমরা সরকারের কাছে সাহায্যের আবেদন জানাচ্ছি...” স্থানীয় বাসিন্দা এএনআই-কে বলেন।
আরেক স্থানীয় বাসিন্দা অমৃত থানি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “এই সেতুটিই ছিল এখানকার মানুষের যাতায়াতের প্রধান রাস্তা এবং এখন এটি ভেঙে যাওয়ায় মানুষ এখানে আটকে পড়েছে... মুখ্যমন্ত্রী এখানে এসেছিলেন এবং নিহতদের জন্য ক্ষতিপূরণের কথা বলেছেন, কিন্তু যাদের কিছুই অবশিষ্ট নেই তাদের কী হবে?”


